রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২১ মে ২০২৩, ০০:০০

জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা ও বাঁশি উৎসব
সংস্কৃতি অঙ্গন প্রতিবেদক ॥

জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা হয় ২০০৩ সালের ১৯ নভেম্বর চাঁদপুর শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ‘অঙ্গীকার’ পাদদেশে। এ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা জাহাঙ্গীর হোসেন। যিনি এখন পর্যন্ত এ সংগঠনের সভাপতি পদে বহাল আছেন।

জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র শুরু থেকে নাটক ও চিত্রকলা বিভাগ নিয়ে কাজ শুরু করে। দীর্ঘ ১২ বছর পর সংগীত বিভাগ চালু করে। এ সংগঠনটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, প্রগতিধারা এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনার ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা করে। দেশের জাতীয় দিবসগুলো যথাযথভাবে উদযাপন করে আসছে।

জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আয়োজনে নাটক, চিত্রাঙ্কন ও সংগীত ছাড়াও বাঙালির কৃষ্টি-সংস্কৃতির ওপর যখন আঘাত আসে, এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে কর্মসূচি পালন করে আসছে। লেখক হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে চাঁদপুর শহরের শপথ চত্বরে ২০০৪ সালে প্রতীকী অনশন করে থাকে। লালন আখড়ায় বাউলদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করে। সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে এ সংগঠনটি বিভিন্ন সময় প্রতিবাদধর্মী কর্মকাণ্ড করেছিলো।

জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র বাঙালির কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে লালন-পালন করে বলেই সংগীতের অন্যতম সোপান বাঁশি উৎসব আয়োজন করে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর। প্রথমবারের মতো এ আয়োজনটি চাঁদপুরের তিন নদীর মিলনস্থল বড় স্টেশন মোলহেডের জনাকীর্ণ স্থানে হয়ে থাকে। এতে করে বেশ সাড়া ফেলে এটি। অনুসন্ধান করে জানা গেছে, শুধু চাঁদপুরেই নয়, বাংলাদেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো বাঁশি উৎসব জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রই আয়োজন করেছে। চাঁদপুরে এমন উৎসব জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র কর্তৃক আয়োজনের পূর্বে আর কখনও হয় নি, যেটি সমর্থন করে চাঁদপুরের বহুল প্রচারিত সংবাদপত্র দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়েছে। এ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মনে করেছেন, যেহেতু বাঁশি সংগীতের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহন, তাই এটিকে সামনে আনা উচিত। সে চিন্তা থেকে জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কমিটির সভা করে বাঁশি উৎসবের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে মোতাবেক ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর বাঁশি উৎসব উদযাপন শুরু করে।

প্রথম বাঁশি উৎসব সফল হওয়ার পর স্থানীয় মিডিয়াগুলো ভালোভাবে প্রচার করে। চাঁদপুরের সংস্কৃতিকপ্রেমী ও দর্শকরা বাঁশি উৎসবের ব্যাপারে উৎসাহ দেন এবং বিভিন্ন জন পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাদের পরামর্শ নিয়ে জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র দ্বিতীয় বাঁশি উৎসব জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বিগত ২৮ এপ্রিল-২০২৩-এ আয়োজন করে।

প্রথম বাঁশি উৎসবের উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা শাহনাজ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক চাঁদপুর প্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক সমকালের জেলা প্রতিনিধি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী এবং চাঁদপুর লেখক পরিষদের সহ-সভাপতি ডাঃ মাসুদ হাসান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গণসংগীতশিল্পী মনোজ আচার্যী, জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর ও চাঁদপুর ড্রামার সাধারণ সম্পাদক মানিক পোদ্দার। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাছানাত নয়ন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। প্রথম বাঁশি উৎসব উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন অ্যাডঃ মাসুদ রানা ও সদস্য সচিব রফিকুজ্জামান রণি এবং প্রধান সমন্বয়কারী ছিলেন মাহবুবুর রহমান সেলিম। উদযাপন পরিষদ ৩১ সদস্য বিশিষ্ট ছিলো। উৎসবে যারা পরিশ্রম করেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন : এ সংগঠনের সহ-সভাপতি প্রশান্ত সরকার, সদস্য নূরে আলম নূর ও তানভির হোসেন। বিশেষভাবে অবদান রাখেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডঃ মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, উপদেষ্টা গোপাল সাহা, উপদেষ্টা মনোজ আচার্যী ও সংগঠনের সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম নিবলু।

প্রথম বাঁশি উৎসবে বাঁশি বাজিয়ে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলেন চাঁদপুরের বংশীবাদক নারায়ণ চন্দ্র ভৌমিক, কুমিল্লার মানিক চক্রবর্ত্তী ও মোস্তফা কামাল। একতারাতে ছিলেন মোঃ রুস্তম আলী। কী বোর্ডে ছিলেন প্লাবন, তবলায় ছিলেন জনি হরিজন। সংগীত পরিবেশন করেন মনোজ আচার্যী, নন্দিতা দাস, সাফানা আমরিন মেধা ও তানভীর হোসেন। উৎসবে নৃত্য পরিবেশন করেন সপ্তরূপা নৃত্য শিক্ষালয়ের নৃত্যশিল্পীরা।

দ্বিতীয় বাঁশি উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ ওয়াদুদ। উদ্বোধনী পর্বে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় শিশু সাহিত্যিক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি হুমায়ুন কবীর ঢালী, অ্যাডঃ নুরুল হক কমল ও অ্যাডঃ মাসুদ রানা।

সমাপনী পর্বে অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জিতু মিয়া বেপারী, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক পরেশ মালাকার, গণসংগীত শিল্পী মনোজ আচার্যী ও জেলা উদীচীর সহ-সভাপতি গোপাল সাহা। উৎসবে সভাপতিত্ব করেন জাগরণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। উৎসবের আহ্বায়ক ছিলেন মতলব সরকারি কলেজের শিক্ষক অধ্যাপক মোশারেফ হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাছানাত নয়ন। এ উৎসবে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন : বাঁশি উৎসব উদযাপন পরিষদের প্রতিযোগিতা উপ-পরিষদের আহ্বায়ক সাইফুল খান রাজিব ও সদস্য সচিব মোঃ মানিক খান এবং দপ্তর উপ-পরিষদের সদস্য সচিব নাজমুল ইসলাম সজীব। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও উদযাপন পরিষদ সদস্য ফয়সাল মাহমুদের আন্তরিকতা ও তার কাজ ছিলো প্রশংসনীয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়