শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

চাঁদপুরের দুই তারকা
অনলাইন ডেস্ক

চিত্রনায়িকা অঞ্জনা

বাংলা সিনেমার জগতে আলোড়ন তোলা চিত্রনায়িকা অঞ্জনা। এ পর্যন্ত তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। কর্মজীবনের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

অঞ্জনার জন্ম ১৯৬৫ সালের ২৭ জুন। বাবা প্রফুল্ল চন্দ্র সাহা, মা কমলা সাহা। বাবা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন। চাকুরির সুবাদে তিনি ঢাকায় ব্যাংক কোয়ার্টারে থাকতেন। অঞ্জনার জন্ম ঢাকায় হলেও তাঁর পৈত্রিক নিবাস চাঁদপুরের পুরাণবাজারের শ্রীরামদী গ্রামে। তাঁরা দু ভাই, এক বোন।

অঞ্জনা ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। তাঁর প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র শামসুদ্দীন টগর পরিচালিত দস্যু বনহুর। ছবিটি দর্শক-মহলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। দস্যু বনহুর-এর পূর্বে তিনি সেতু ছায়াছবিতে অভিনয় করেন। তাঁর উল্লেযোগ্য চলচ্চিত্র : অশিক্ষিতা (১৯৭৮), রূপালি সৈকতে (১৯৭৯), মোহনা (১৯৮২), পরিণীতা (১৯৮৬), রাম রহিম জন (১৯৮৯), গুনাই বিবি, মাটির মায়া, পরিণীতা, গাংচিল, রাজবাড়ী, নূরী, সুখের সংসার, সাহেব বিবি গোলাম , যাদু নগর, অন্ধবধূ ইত্যাদি। তিনি নায়করাজ রাজ্জাক, সোহেল রানা, আলমগীর, জসিম, বুলবুল, জাফর ইকবাল, ওয়াসিম প্রমুখের সঙ্গে নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেছেন। নায়করাজের সঙ্গেই জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন ৩০টি ছবিতে। আশির দশকে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী। অঞ্জনা বেশ কিছু ছবি প্রযোজনাও করেছেন।

চলচ্চিত্র জগতে পা রাখার পূর্বেই অঞ্জনা নৃত্যশিল্পী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। শৈশবে নৃত্যের প্রতি তাঁর বিশেষ আগ্রহ ছিল। তাঁর পরিবার তাঁকে নৃত্য শিখতে ভারতে পাঠায়। সেখানে তিনি ভরতনাট্যম, কত্থক, মণিপুরী ও সাধারণ নৃত্য শেখেন। খ্যাতিমান ওস্তাদ বাবুরাজ হীরালাল ছিলেন তাঁর শিক্ষক। বাংলাদেশে এসে অঞ্জনা নৃত্যচর্চায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। তিনি এশীয় মহাদেশীয় নৃত্য প্রতিযোগিতায় প্রথম হন। এজন্যে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে সংবর্ধনা দেয়া হয়। এছাড়াও জাতীয় নৃত্য প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম স্থান লাভ করেন। নৃত্যের সুবাদে অঞ্জনা বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য লাভ করেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর নাচ দেখে খুশি হয়েছিলেন। অঞ্জনা স্মৃতিচারণে বলেছেন, “স্বাধীনতার পরে একটা অনুষ্ঠান হয়েছিলো। আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জার এসেছিলেন বাংলাদেশে। তখন আমার একটি নাচ ছিলো। ছোট্ট অঞ্জনা আমি। নাচের পর বঙ্গবন্ধু যখন আমাকে ডেকে নিয়ে আসলেন, তাঁর কোলে বসালেন এবং দুটি হাত ধরে বললেন, লুক! মিস্টার কিসিঞ্জার, ডু ইউ লাইক হার ডান্স? তখন কিসিঞ্জার বললেন, ইয়েস! ভেরী নাইস। তখন বঙ্গবন্ধু বললেন, প্রাউড অব আওয়ার অঞ্জনা। আমার মাথায় হাত দিয়ে বললেন, যাও বাংলাদেশকে নাচে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করবা। অনেকদূর এগিয়ে যাও মা তুমি। এই কথা এখনও আমার কানে বাজে। বঙ্গবন্ধুর সেই ভরাট গলা।”

অঞ্জনা পরিণীতা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্যে নায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও ২ বার পেয়েছেন বাচসাস পুরস্কার। তিনি বর্তমানে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন।

অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন

বাংলাদেশের একজন উল্লেখযোগ্য ও জনপ্রিয় অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন। মঞ্চ থেকে তাঁর অভিনয়-যাত্রা শুরু। এরপর প্রায় তিন দশক যুক্ত আছেন নাটক, টেলিফিল্ম ও চলচ্চিত্র অঙ্গনে। দর্শকমহলে তাঁর জনপ্রিয়তা ঈর্ষণীয়।

আনিসুর রহমান মিলনের জন্ম ১৯৭৪ সালের ৩ জুন, ঢাকার কলাবাগানে। তাঁর পৈত্রিক নিবাস চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায়। বাবা নূরুর রহমান। তিনি চাইতেন ছেলে অভিনেতা হবে। অন্যদিকে মা পিয়ারা বেগম চাইতেন মিলন কণ্ঠশিল্পী হোক। মিলন পড়াশোনা করেছেন নিউ মডেল হাইস্কুল, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজ, তেজগাঁও কলেজ ও ঢাকা কলেজে। তিনি সমাজকল্যাণ বিভাগের ছাত্র ছিলেন।

মিলন স্কুলজীবন থেকে মঞ্চে অভিনয় শুরু করেন। যুক্ত ছিলেন আর্তনাদ থিয়েটারের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্যে, ‘আমার অভিনয়ের শুরু মঞ্চনাটক দিয়ে। আমি যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি তখন আর্তনাদ থিয়েটারে যোগ দিই। এই দলটি ১৯৯২ সালে নাম পরির্বতন করে হলো থিয়েটার সেন্টার। এখানে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত কাজ করি। তারপরে দেশ নাটকে যোগ দিই ২০০০ সালে।’ এ পর্যন্ত তিনি এক হাজারের বেশি নাটক, টেলিফিল্ম ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনীত প্রথম নাটক ‘আকাই’। এর পরিচালক ছিলেন রুলিন রহমান। সালাউদ্দিন লাভলুর ‘রঙের মানুষ’ মিলন অভিনীত অন্যতম আলোচিত নাটক। এ নাটকে অভিনয়ের জন্যে তাঁকে ইউরো সিজেএফবি পারফরম্যান্স পুরস্কার প্রদান করা হয়। অন্যদিকে ২০০৬ সালে মধুময়রা নাটকে অভিনয়ের জন্যে সেরা টিভি অভিনেতা বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

চলচ্চিত্রে অঙ্গনে তাঁর অভিষেক হাজার বছর ধরে সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে। ২০০৫ সালে সুচন্দা পরিচালিত এ চলচ্চিত্রে তিনি করিম শেখের চরিত্রে অভিনয় করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র দ্য লাস্ট ঠাকুর (২০০৮), দেহরক্ষী (২০১৩), পোড়ামন (২০১৩), প্রেম করবো তোমার সাথে (২০১৪), অনেক সাধের ময়না (২০১৪), ভালোবাসার গল্প (২০১৫), ভালোবাসা সীমাহীন (২০১৫), লালচর (২০১৫), ব্ল্যাকমেইল রোমিও (২০১৫), এক রাস্তা (২০১৬), ক্রাইম রোড (২০১৭), রাজনীতি (২০১৭), বিজলী (২০১৮), আলতাবানু (২০১৮), ডনগিরি (২০১৯) ইত্যাদি।

তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক : জয়িতা, প্রজাপতিকাল, হাটকুড়া, মধুময়রা, শুভাগমন, অতঃপর, ১১১ এ নেলসন নাম্বার, ওরা বখাটে নয়, ফাইভ স্টার মেস, দূরের বাড়ি কাছের মানুষ, অশান্তি কমিটি, জোড়া তালি প্রেম, মিলার বারান্দা, জীবনের অলিগলি, স্বপ্নগুলো জোনাক পোকার মতো, বিট্রে, বকুলপুর, নয়নতারা, সাধারণ গল্প, অনুভূমি, অজুহাত, বই পাগল, সাক্ষাৎ প্রার্থী, পৃষ্ঠা নং ১৩২, দুজনে একা, পরশ, ছাপ, মরীচিকা, এই শহর মাধবীলতার না, সাঁকো, গোপন, আধুনিক চিটার ইত্যাদি। কর্মজীবনের স্বীকৃতিস্বরূপ ইউরো সিজেফবি পারফরম্যান্স পুরস্কার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ছাড়াও তিনি আরটিভি সিজেফবি পারফরম্যান্স পুরস্কার (২০০৬) লাভ করেন।

পেশাগত জীবনের শুরুতে তিনি ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং পরবর্তীতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টাড ব্যাংকে চাকুরি করতেন। পরে চাকুরি ছেড়ে অভিনয়কেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। ব্যক্তিজীবনে আনিসুর রহমান মিলনের স্ত্রী পলি আহমেদ। তাঁর সন্তান মিহিরাম রহমান।

সূত্র :

‘বঙ্গবন্ধু বললেন, প্রাউড অব ইউ অঞ্জনা’, বিডিনিউজ২৪ডটকম, ২৬ জুলাই ২০১৭

স্বপ্নপূরণের অপেক্ষায়, কামরুজ্জামান মিলু, মানবজমিন, ১৮ জুলাই ২০১৬

রূপালি দিনের অঞ্জনা, নূপুর বন্দ্যোপাধ্যায়, দৈনিক ইত্তেফাক, ২৭ নভেম্বর ২০১৭

ঢাকাই ছবির নাচের রানি অঞ্জনা, ফিরোজ আলম

চেনা মিলন, অচেনা মিলন, রাহাত সাইফুল, রাইজিংবিডি ডটকম, ২২ এপ্রিল ২০১৪

এই আমি সেই আমি! - আনিসুর রহমান মিলন, আনন্দ আলো

অভিনেতা : আনিসুর রহমান মিলন, বাংলা মুভি ডাটাবেইস

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়