রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ৩০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   বয়ারচর সংযোগ ব্রিজ ও বেড়িবাঁধ রক্ষায় এলাকাবাসীর মানববন্ধন
  •   জার্মানিতে কঠিন হচ্ছে রাজনৈতিক আশ্রয়
  •   ইতালির দ্বীপে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ২১
  •   অভিভাবকহীনতায় দিশেহারা চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা
  •   আহতদের দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

শিশুকণ্ঠের মুখোমুখি প্রখর পীযূষ বড়ুয়া

আমার সব অর্জনের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণকে এগিয়ে রাখবো

অনলাইন ডেস্ক
আমার সব অর্জনের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণকে এগিয়ে রাখবো

প্রখর পীযূষ বড়ুয়া একজন আলোকিত শিশু। দু হাজার দশ সালের পনের জুন তার জন্ম। নগরীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে মঙ্গলবার রাত আটটায় সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে প্রখর অবতীর্ণ হয় এ পৃথিবীতে। প্রখরের বাবা স্বনামধন্য সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া, আর মা বিশিষ্ট নারী নেত্রী ও বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ, চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মুক্তা পীযূষ। সে বর্তমানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, চাঁদপুরে ইংরেজি মাধ্যমে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। খুদে জীবনে প্রখরের অর্জন ও প্রাপ্তি অনেক। আজকের শিশুকণ্ঠে আমরা তাই প্রখরকে হাজির করেছি সাক্ষাৎকার পর্বে।

শিশুকণ্ঠ : প্রখর, তুমি কেমন আছো?

প্রখর : আমি অনেক ভালো আছি।

শিশুকণ্ঠ : তুমি বেশ কিছু বড়ো বড়ো পুরস্কার ও সাফল্য অর্জন করেছো। তোমাকে এজন্যে আন্তরিক অভিনন্দন। তুমি কি সংক্ষেপে তোমার অর্জনগুলো আমাদেরকে বলবে?

প্রখর : আসলে অর্জনের তো কোনো শেষ নেই। তবে এখন পর্যন্ত যা পেয়েছি সেগুলো হলো : বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় জাতীয় পুরস্কার, মঞ্চকুঁড়ি পদক, দ্বাদশ পাঞ্জেরী-চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্কের ইংরেজি মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন দলের দলনেতা হওয়া ও তিনটি পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ বক্তা হওয়া, জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের প্রতিযোগিতায় চাঁদপুর জেলায় প্রথম মানে প্রথম হওয়া ও চাঁদপুর জেলায় ২০ টি স্কুলের মধ্যে ইংলিশ অলিম্পিয়াডে প্রথম হওয়া।

শিশুকণ্ঠ : তুমি তো একজন বিতার্কিক। তোমার বড়ো ভাইও তাই। বিতর্ক করতে তোমার কেমন লাগে? তুমি বিতর্ক শিখলে কার কাছে?

প্রখর : আমার বিতর্ক করতে অনেক ভালো লাগে, কেননা নিজের মধ্যকার যুক্তি ও যৌক্তিক মতামত বিতর্কের মাধ্যমে প্রস্ফুটিত হয়। আমার বিতর্কের হাতেখড়ি আমার বাবা ডাক্তার পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার কাছে। পরবর্তী সময়ে আমি চাঁদপুর বিতর্ক একাডেমিতে বিতর্ক শিখেছি।

শিশুকণ্ঠ : তুমি একজন উদীয়মান সংগীত শিল্পী। তোমার গানের গুরু কে? কোন্ ধরনের গান গাইতে তোমার ভালো লাগে?

প্রখর : আমার গানের গুরু শ্রদ্ধেয় শংকর আচার্য স্যার এবং গানে হাতেখড়ি হয় শ্রদ্ধেয় পীযূষ কান্তি রায় চৌধুরী স্যারের কাছে। আমার মূলত রবীন্দ্রসঙ্গীত ও নজরুলসঙ্গীত গাইতে ভালো লাগে।

শিশুকণ্ঠ : শিল্পের মাধ্যম হিসেবে আবৃত্তির গুরুত্ব কেমন? তোমার মায়ের সংগঠনে আবৃত্তি করার অনুভূতি কেমন?

প্রখর : শিল্পের মাধ্যম হিসেবে আবৃত্তির গুরুত্ব অনেক। নিজের মনের ভাবকে প্রমিত উচ্চারণ ও সাবলীলভাবে প্রকাশ করতে হলে আবৃত্তিই সবচেয়ে সেরা মাধ্যম। তবে এখনও কিছু মানুষ আবৃত্তিকে মূলধারার শিল্প বলে মনে করে না। আশা করি তাদের এই বিভ্রান্তি অচিরেই দূর হবে আবৃত্তির আলোতে। আমার মায়ের সংগঠনে আবৃত্তি করার অনুভূতি অনেক ভালো। সকলের সঙ্গে মিলেমিশে প্রমিত ভাষার চর্চা সত্যিই সুন্দর।

শিশুকণ্ঠ : তুমি নাটকেও অভিনয় করেছো। নাটক নিয়ে তোমার অভিজ্ঞতা কেমন?

প্রখর : নাটক নিয়ে আমার অনুভূতি অনেক রোমাঞ্চকর। একটি চরিত্রকে নিজের মধ্যে ধারণ করা এবং সেই অনুযায়ী অভিনয় করা সত্যিই কঠিন। ভবিষ্যতে নাটক নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে আমার। সে জন্যেই আমি অনন্যা নাট্যগোষ্ঠীতে যোগদান করেছি।

শিশুকণ্ঠ : তুমি তো লেখালেখিও করো। তোমার কী কী লেখা এ পর্যন্ত ছাপা হয়েছে? তোমার বাবার লেখা পড়তে তোমার কেমন লাগে?

প্রখর : এ পর্যন্ত আমার তিনটি লেখা ছাপা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে একটি ক্রিকেট বিষয়ে লেখা, করোনা মহামারি নিয়ে একটি ছড়া ও বিতর্ক নিয়ে একটি লেখা। এগুলোর মধ্যে সব ক'টিই চাঁদপুর কণ্ঠে ছাপা হয়েছে এবং দুটি লেখা জাতীয় মাসিক পত্রকা 'শিশু'-তে ছাপা হয়েছে। আমার ববাবার লেখা তো আমার পড়তে ভালোই লাগে।

শিশুকণ্ঠ : তোমার অর্জনগুলোর মধ্যে তুমি কোনটাকে এগিয়ে রাখবে? কেন?

প্রখর : আমার সব ক'টি অর্জনের মধ্যে আমি বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণকে এগিয়ে রাখবো, কেননা আমার সকল জ্ঞান ও অর্জনের সম্মিলিত অর্জন এটি। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমি উপস্থিত কথা বলা শিখেছি, লেখা শিখেছি, পাশাপাশি আমি শিখেছি সকল জ্ঞান ও তথ্যকে একসঙ্গে কীভাবে কাজে লাগাতে হয়। এবং এই প্রাপ্তি আমাকে সামনে আগাতে আরও সাহায্য করবে। এজন্যই আমি এই অর্জনকে এগিয়ে রাখবো।

শিশুকণ্ঠ : তোমার এ সকল কর্মকাণ্ডে কার কার অবদান আছে?

প্রখর : আমার এ সকল কর্মকাণ্ডে আমার পরিবারের অবদান আছে, আছে আমার শিক্ষকদের অবদান, যাঁদের কাছ থেকে নানান বিষয় সম্পর্কে জেনেছি এবং অবদান আছে আমার স্কুল ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের।

শিশুকণ্ঠ : পড়াশুনার পাশাপাশি সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা। অনেক বাবা-মা এটাকে মনে করে পড়াশুনার জন্যে ক্ষতিকর। তুমি কি মনে করো? আসলেই কি তোমার সাহিত্য-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড তোমার পড়াশুনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে?

প্রখর : এই চিন্তাটি পুরোপুরি সমৃদ্ধিবিমুখী। কেননা কেবল পড়াশোনা দিয়ে যদি সব হয় এবং সবাই সাহিত্যচর্চা ও সংস্কৃতিচর্চা না করে তবে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ পাওয়া আকাশ-কুসুম কল্পনা করার মতো।এইরূপ ধারণাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করার কবিগুরুর উদাহরণই যথেষ্ট। এবং আমিও এই ধারণার সম্পূর্ণ বিপক্ষে, কেননা আজ আমার যেই ছোটোখাটো অর্জনগুলো, সব এই সংস্কৃতিচর্চারই ফল।

শিশুকণ্ঠ তোমাদের বর্তমানে শিক্ষার রূপান্তর এবং নতুন পাঠক্রম কেমন লাগছে? এটা কি তোমাদের জন্যে উপযোগী?

প্রখর : ব্যক্তিগতভাবে আমাদের নতুন পাঠক্রম আমার অনেক ভালো লেগেছে। যে সকল ব্যক্তি মনে করেন এই পাঠক্রমে পড়াশোনা নেই, তারা নিঃসন্দেহে বিভ্রান্তির ভুবনে আছেন। বরং পড়াশোনা আরও বেড়েছে এবং জীবনমুখী হয়েছে। তবে পার্থক্য একটাই, এই পাঠক্রমে বিষয়গুলো অতিরিক্ত মনে হয় না বরং প্রয়োজনীয় মনে হয়। এই চিন্তা আগে আসেনি।এবং যদি কেউ পেছনে পড়ে থাকতে চায় এই পাঠক্রম তাদের জন্যে উপযোগী নয়।কেননা এই পাঠক্রম সামনে আগানোর পাঠক্রম, নিজ হাতে কিছু করার দক্ষতা অর্জনের পাঠক্রম । এবং এই দিক থেকে নতুন পাঠক্রম শতভাগ উপযোগী

শিশুকণ্ঠ : তোমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? তুমি কী হতে চাও?

প্রখর : এই নতুন পাঠক্রম আমার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অনেক কিছু শিখিয়েছে। তার জন্যে এককভাবে ভাবা হয়নি আমি কী হতে চাই। তবে ইচ্ছা আছে একজন মহাকাশবিজ্ঞানী অথবা ডাক্তার হবো।

শিশুকণ্ঠ : তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

প্রখর : শিশুকণ্ঠকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আমার সাক্ষাৎকার নেয়ার জন্যে। আশা রাখছি শিশুকণ্ঠের হাত ধরে আরও আলোকিত শিশুর উদ্ঘাটন হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়