প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
আমরা প্রতিনিয়তই কিছু না কিছু কাজের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। তা জেনে হোক অথবা না জেনে হোক। তা পরিকল্পিতভাবে হোক নতুবা অপরিকল্পিতভাবে। তা গঠনমূলক ভাবে হোক নয়তোবা না। কিন্তু সকল কাজের শুরুর মুহূর্তটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।
শুরু : আমরা যখন কোনো কাজ করি তখন প্রথমেই তা সম্পর্কে কিছুটা হলেও চিন্তা করতে হয়। কাজটি কেমন, কাজটি করতে কতক্ষণ লাগবে, কাজটি কিভাবে করবো, কাজটি আদৌও করবো কি? এমন হাজারো চিন্তা-ভাবনা। কখনোই কেউ কিছু না বুঝেই বা না ভেবেই করতে পারবে না। কেউ তা করেও না। যখন কেউ কোনো প্রজেক্ট হাতে নেবে, তখন ওই প্রজেক্ট সম্পর্কিত খুঁটিনাটি অবশ্যই গবেষনা করতে হবে। দারাজের সিইও মাইকেলসনও এই একই পন্থা অবলম্বন করেছিল। আর তিনি এর ফলাফল ওইভাবেই পেয়েছিলেন বলা চলে। কারণ লন্ডন থেকে পাকিস্তানের মার্কেটে জায়গা করে নেয়া এবং এরপর আশেপাশের দেশগুলোয় এত দ্রুত বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জায়ান্ট কোম্পানিতে রূপ নেয়া চাট্টিখানি কথা নয়। এমন আরো অনেক কারণের অবতারণাও সম্ভব ‘শুরুর গুরুত্ব’ নিয়ে। তার প্রয়োজন নেই।
শুরুর গুরুত্ব : ‘শুরুটা কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ?’ এমন প্রশ্নই অহরহ হয়। তবে এটা নিতান্তই বাচ্চাসুলভ প্রশ্ন, যদি তার একট বড় কাজের অভিজ্ঞতা থেকে থাকে। কারণ তখন স্পষ্টই প্রতীয়মাণ হয়ে থাকে যে, আমাদের প্রথম পদক্ষেপটা পরবর্তী পদক্ষেপের সঙ্গে সম্পৃক্ত। উদাহরণস্বরূপ নিচের পদক্ষেপগুলো লক্ষ্য করি :
প্রয়োজন সাপেক্ষে কার্য-বিবরণ তৈরি।
বিবরণ অনুযায়ী কার্য সম্পাদন।
কার্য-ফলাফলের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ।
নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করে ফলাফল গ্রহণ।
ফলাফলের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া।
উপরোক্ত পদক্ষেপগুলোর দিকে সামান্য বিশ্লেষণী দৃষ্টিতে তাকালেই বোধগম্য হয় তাদের পরস্পর সম্পৃক্ততা। হুটহাট করে যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব নয়। আবার একটি স্কীপ করে যাওয়াও অসম্ভব। ঠিক একই কারণেই প্রতিটি ধাপ সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে করা প্রয়োজন বিধায় শুরু বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
শুরুর শুরুটা যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ তা সম্পর্কে অনেকেই অনেক উক্তি প্রকাশ করেছেন। আমাদেরই মহানবি হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর এই হাদিসটি হয়ত সকলেরই জানা - ‘যার আলমে বারযাখ (কবর) সহজ হয়ে যাবে, তার জন্য পরবর্তী ধাপগুলিও সহজ হয়ে যাবে। আর যার আলমে বারযাখ কঠিন হবে, তার জন্য পরবর্তী ধাপগুলিও কঠিন হবে।’ (বুখারী ও মুসলিম)
আমরা অনেকেই সান জু এর নামটা শুনেছি। তিনি ছিলেন প্রাচীন চীনের একজন সমরবিদ ও সফল যোদ্ধা। তাঁর একটি বিখ্যাত উক্তি হচ্ছে ‘যুদ্ধ শুরুর আগেই নির্ধারিত হয়ে যায় যে, কে বিজয়ী হবে।’ এর অর্থ হলো শুরুটা যেভাবে করা হবে ঠিক সেভাবেই ফল আসবে।
শুরুটা যেভাবে হবে শুরু : আমরা জানলাম যে শুরুটা অনেক বেশি গুরুত্বের দাবিদার। তো খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে ‘কীভাবে শুরুটা শুরু করবো?’। বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। তবে এর সঠিক উত্তরটা আসলে কারোর কাছেই নেই। কারণ এর উত্তরটা সকলেই নিজের দিক ও অভিজ্ঞতা বিবেচনাতেই দিয়ে থাকে। যা অন্যদের জন্য ফলপ্রসু নাও হতে পারে। তাই আগের বলা অ্যানালাইসিস টেকনিকটা খুব কার্যকর। অ্যানালাইসিসটার সময় কয়েকটি বিষয়কে সামনে রাখতে হবে। যেমন : কার্যক্ষমতা, যোগ্যতা, পরিবেশ, পরিস্থিতি, পরিকল্পিত স্ট্রেটিজির ভিত্তিতে দূরদৃষ্টি রাখা ইত্যাদি। এছাড়াও নিজের পূর্ব-অভিজ্ঞতা কিংবা মেন্টরের পরামর্শ মোতাবেকও শুরুটা শুরু করা যায়।
আজকের বিষয়টা কাজ করার শুরুর শুরুটা নিয়ে। আশা করি তোমাদের সামনে কনসেপ্টটা অনেকটা ক্লিয়ার করতে পেরেছি। একটু ভাবনার মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। সবাইকে বিদায়। আল্লাহ হাফেজ।