শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

গরীবের ঈদ
অনলাইন ডেস্ক

স্বপ্ন দেখতে কার না ভালো লাগে। স্বপ্ন আমরা সবাই দেখি। ছোট বড় সবাই। স্বপ্ন আমাদের যেমন কল্পনা তেমনি বাস্তবেও আমাদের স্বপ্ন। আমরা ভিন্ন ভিন্ন রূপে ভিন্ন ভিন্ন স্থান হতে স্বপ্ন দেখি যা আমাদের জীবনকে জাগ্রত করে। কিছু স্বপ্ন এমনি হয়ে থাকে যা সারাজীবনের হাসি আবার কিছু স্বপ্ন হয়ে থাকে আফসোসের। এক স্বপ্নদাতার কথাই বলছিলাম।

নাম তার আরিফ। খুবই শান্ত ছেলে। মা বাবার কথা ছাড়া এক পাও নড়ে না সে। পিতা মাতার অনুগত্য থাকা ছেলেমেয়েগুলো খুবই বুদ্ধিমান হয়ে থাকে। আর পবিত্র কোরআনেও পিতা মাতার অনুগত থাকার কথা বলা হয়েছে। রাসূল (সাঃ) বলেছেন- পিতা হলেন জান্নাতের দরজা আর মায়ের পায়ের নিচেই সেই জান্নাত। পিতার সন্তুষ্টিতে স্বয়ং আল্লাহ সন্তুষ্ট হন আর মায়ের সন্তুষ্টি আল্লাহ সেই জান্নাত দিয়ে দেন সন্তানদের।

পিতামাতা সবসময় সন্তানের ভালো চান। সবচেয়ে সেরা জিনিসটা কিনে দিতে চান সন্তানকে। নিজের জীবনে সব ত্যাগ-তিতিক্ষা সন্তানের জন্য ব্যয় করে থাকেন। সন্তানের চাওয়া পাওয়াগুলো এক নিমিষেই পূরণ করে দেন। বীজ ভালো হলে ফল ভালো। তবে গাছের সঠিক সময় পরিচর্যা করতে হবে। শুরুতে গাছ বাকা হলে সেই গাছ আর সোজা করা যাবে না তাইতো বাচ্চাদেরকে ঠিক সময় মতো আদব-কায়দা না শিখালে বাচ্চারা বেয়াদব হবেই। ভদ্র- নম্র বিনয়ী যে ছেলে তাকে সবাই ভালোবাসে। আরিফকে সবাই ভালোবাসতো। আরিফের মিষ্টি ব্যবহারে সবাই তাকে আদরও করতো।

স্কুল, মাদ্রাসার প্রতিবেশীরা সবাই ভালোবাসতো। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আরিফ। আরিফের বাবা প্রাইমারি স্কুলের পিওন ছিলো। সেই সুবাদে স্কুলে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে আরিফের। ভোর সকালে মাদ্রাসায় আরবি ফ্রিতে পড়তে পারে। তাই সে ফজরের আযান দিলে উঠে যায় আর বাবার সাথে ফজরের নামাজ আদায় করে অপেক্ষা করে কখন ৬:৩০ বাজবে আর সে আরবি পড়তে যাবে। তার পড়ালেখার প্রতি এতো আগ্রহ দেখে তার বাবা মা তাকে নিয়ে অনেক বড় করার স্বপ্ন দেখে। অনেক বড় হতে হবে আলিফকে। তবে সেগুলো মনে হয় শুধু কল্পনাতেই সম্ভাব্য। বাস্তবে তো নুন ভাত। আরিফ স্কুল থেকে এসে বললো মা খিদা লাগছে ভাত দাও।

মা ভাত দিয়ে বললেন নে বাবা খা। আরিফ ভাত সামনে রেখে বলে আচ্ছা মা আমরা কি কখনো মাছ-মাংশ খাবো না? শুধু কি ডাল ভাতই খাবো। ডাল ভাত আর ভালো লাগে না। মা দু'চোখের পানি মুছে বললেন, আমরা গরীব মানুষরে বাবা। ডাল ভাত খেতে পারতাছি এটাই অনেক বাবা। তোমার বাবা খুবই সৎ তাই অসৎ পথে উপার্জন করতে পারে না। প্রাইমারি স্কুলের পিওন সে। পড়াশোনাও তেমন করেনি। তার বেতন যা পায় তা তো ঘর ভাড়া কারেন্ট বিল আর পানি বিলেই চলে যায় আর বাকি যেই টাকা থাকে তা দিয়ে অন্তত চাল-ডাল তো কিনতে পারি। এই অভাবের সংসারে মাছ- মাংস কিভাবে কিনবো বাবা।

তার বাবা মা- ছেলের কথোপকথন শুনতে পায় আর বলেন -দেখ বাবা আরিফ, হারামণ্ডহালাল চিনে খাওয়া অনেক ভালো। আমি মরে গেলে তোমাদের কাছে কেউ আমার ঋণের জন্য আসবে না। আরিফ বললো আচ্ছা ঠিক আছে বাবা। আমি আর মাছ-মাংস চাইবোনা তোমাদের কাছে। তবে আমার ঈদে নতুন কাপড় কিনে দিতে হবে। মা বললো ইনশাল্লাহ নতুন কাপড় পরবে তুমি।

আরিফ বলল, কোন বাহানা চলবে না কিন্তু বাবা। আমার বন্ধুরা সবাই কত সুন্দর জামা কিনেছে আমাকেও কিনে দিতে হবে। ঠিক আছে বাবা নতুন জামা কিনে দিবো।

আরিফ ও আহাদ একই ক্লাসে পড়ে। রোজ একসাথে স্কুলে যায়।

আহাদ : কিরে আরিফ, ঈদের নতুন কাপড় কিনছিস?

আরিফ : নাহ, নতুন কাপড় কিনি নাই। বাবা বলছে নতুন কাপড় কিনে দিবে। তুই কিনেছিস?

আহাদ : হ্যা, আমার তো কিনা হইছে। আর নানা বাড়ি থেকে নানা ভাইয়াও ঈদের জন্য কাপড় কিনে দিবে। খুকুমনি একটা কিনে দিয়েছে। ছোট খালামনি গেছে মার্কেটে কাপড় কিনতে।

আরিফ : কি বলিস, এতো কাপড় তোর একার জন্য নাকি?

আহাদ : হ্যাঁ, শুধু এই ঈদেই নয় প্রতি ঈদেই সবার থেকে নতুন নতুন জামা কাপড় পাই।

আরিফ : (মনে মনে) দীর্ঘশ্বাস ফেলে, এখনো আমার একটা কাপড় হলো না জানিনা নতুন কাপড় পাবো কিনা?

স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে আরিফ মাকে বললো জানো মা আমার সাথে আহাদ পড়ে যে সে এই ঈদে চারটা নতুন জামা পেয়েছে। অথচ আমি একটাও পাই নাই কেন মা।

আমার না নতুন জামা পড়তে খুব ইচ্ছে করে। কিন্তু আমিতো চোখেই দেখি না জামা (কেঁদে কেঁদে)।

মা মাথায় হাত ভুলিয়ে দিয়ে বললেন, ওরা ধনী লোক আর আমরা গরীব। তাইতো ওদের কোনো মাথা ব্যথা নেই।

মা : সবাই গরী নয়, তবে আমরা গরীব। তাইতো ওদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। আমাদের টাকা থাকলে ঠিকই ওরা খোঁজ খবর নিতো। থাক এসব কথা বাদ দাও হাত মুখ ধুয়ে আসো খাবে। তারপর এসব কথা বলা যাবে।

আরিফ ফ্রেস হয়ে খেতে বসলো কিন্তু ভাত মুখে দিয়েই বললো একদম মজা নেই। লবণ নেই খাবারে।

মা : ঘরে লবণ শেষ।

আরিফ : মা এই বাড়ি থেকে একটু লবণ আনলে ভালো হত।

মা : না বাবা তোর বাবার নিষেধ, কারো কাছ থেকে, কারো বাড়ি কিছু ছাওয়া যাবে না। আল্লাহ আমাদের যেভাবে রেখেছেন এটাই শান্তি।

আরিফ : মা আমরা কি ভালো খেতে পাবো না।

মা : হ্যাঁ অবশ্যই খেতে পারবি। আমাদের ছাগল টা তোর বাবা বিক্রি করবে। তখন নতুন জামা ও ভালো খাবার নিয়ে আসবে।

আরিফ : মা কবে ছাগল বিক্রি করবে?

মা : কাল বিকেলে।

রাতে আরিফের ঘুম হয় নি। খুশিতে কখন নতুন জামা পাবে। কখন পড়বে?

পরের দিন দুপুর বেলা ছাগল নিয়ে বাজারে যাবে আরিফের বাবা। ছাগলটা তারা কখনো বেধে রাখে না। কারণ, ছাগলটা সব সময় ঘরের আসে পাশেই থাকে। তাই বেধে রাখার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু আজ দুপুর বেলা যখন বাজারে যাবে তখন ছাগলটা খুঁজে পাচ্ছিলো না। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করলো কিন্তু পেলো না। হতাশ হয়ে আরিফ কাঁদতে লাগলো। আর কাঁদতে কাঁদতে বললো, এবার ও আমার নতুন জামা পড়া হবে না। খুব বিনয়ীভাবে কাঁদছে তার কান্না দেখে বাবা মা দু জনই কেঁদে দিলো।

তারপর মা মাটির ব্যাংক বের করে বললেন, নে এটা রাখ এটাতে টাকা আছে তোকে নতুন জামা কিনে দিবো। আরিফ খুশি হয়ে বললো সত্যি মা! তুমি অনেক ভালো।

মা মাটির ব্যাংক ভেঙে পাওয়া গেল ৩০০ টাকা।

মা : আরিফের বাবা এই নাও এই কয়টা টাকা আছে। এ নিয়ে ছেলের জন্য নতুন জামা নিয়ে আসো। আর কালকে ঈদ। ঘরের যেই পালিত মুরগীটি আছে না ওটি রান্না করে দিবো নি।

রাতে এশারের নামাজের পর বাড়ি ফিরলেন রহিম। আরিফ খুশিতে দৌঁড়ে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরলো। আরিফের মা ব্যাগ খুললে কিন্তু ব্যাগ ফাঁকা। সে চুপ করে দাড়িয়ে রইলো। আরিফ মায়ের হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে দেখে ব্যাগে কিছু নেই।

আরিফ : বাবা আমার নতুন জামা কই?

মা : কি ব্যাপার ছেলেটার কাপড় কোথায়?

রহিম : কিনেছিলাম আর যখন তেল পেঁয়াজ কিনলাম তখন সাইডে রেখে টাকা দিতে গিয়ে ভুলে তা রেখে চলে এসেছিলাম। রাস্তায় মনে হলে দোকানে আবার গিয়ে দেখি সেখানে নাই ব্যাগটা। দোকানদারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। সে বললো, ভাই ঈদের বাজার কে নিয়ে গেছে দেখি নাই।

আরিফ সঙ্গে সঙ্গে কেঁদে দিলো।

মা : বাবা কেদোঁ না, আমাদের আরো একটা উপায় আছে তো। একটা গেছে আরেকটা আসবে। ভেঙ্গে পড়ে না বাবা। দেখো বাবা আমাদের না একটা মুরগি আছে আমি আর তুমি কালকে সেটা বিক্রি করে তা দিয়ে নতুন জামা কিনে নিবো। কত্ত মজা তাই না।

আরিফ: আর কিছু বললো না, ফুফিঁয়ে ফুফিঁয়ে কেদেঁ ঘুমিয়ে পড়লো।

সকাল বেলা মুনের বাড়িতে মুরগী নিয়ে গেলো।

মুনের মা : কিরে আরিফ ঈদের দিন মুরগি নিয়ে কোথায় যাস?

আরিফ : খালাম্মা আমার মা বলেছে আপনাদের বাড়িতে আসতাম আর মুরগিটা আপনাদের কাছে বিক্রি করতাম। তাই নিয়ে আসলাম।

মুনের বাবা : আরিফ ঘরে আসো। (আরিফ ঘরে গেলো)। কি ব্যাপার ঈদের দিন মুরগি বিক্রি করবে কেন? আর এই মুরগি বিক্রি করলে তোরা খাবি বা কি? তাছাড়া কারো কাছে তো সাহায্য ও চাস না। না খেয়ে থাকলে ও।

আরিফ : মামা জানেন কাল রাতে বাবা আমার জন্য একটা নতুন জামা কিনেছিলো কিন্তু ভুল করে দোকানেই রেখে চলে এসেছে। আর পায় নি সেই জামা তাই কোন উপায় না পেয়ে আমার নতুন জামা কিনার জন্য মা বলেছে মুরগিটা বিক্রি করে নতুন জামা কিনে দিবে।

মুনের বাবা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তার স্ত্রীকে বললেন মুনের বাবা দেখেছো! কেমন ওদের পরিবার কত ধৈর্য তাদের মধ্যে, আচ্ছা আমার পকেট থেকে ৫০০ টাকা তার হাতে দাও।

মুনের মা তার হাতে ৫০০ টাকা দিলো।

আরিফ : খালাম্মা মুরগি তো ৩০০টাকা।

মুনের বাবা : এটা মুরগির টাকা নয় এটা তোমার হাদিয়া। আর মুরগি এখন নিয়ে যাও। আজ মাকে বলবা এটা রান্না করে দিতে। মজা করে খাবে কেমন।

আরিফ : মনের অজান্তেই একটা হাসি দিলো।

মুনের মা : তোমার হাসি দেখে আমরা অনেক খুশি হলাম। যাও এবার বাসায় যাও তাড়াতাড়ি।

দৌঁড়ে বাড়ি এসে সব কিছু বাবাকে জানালো। তার বাবা বললেন, হাদিয়া দেয়া-নেয়া নবী (সাঃ) এর সুন্নত। এবার চল তাড়াতাড়ি ঈদগাহে নামাজ পড়বো তার আগে তোমার জামা কিনে দিবো কেমন। তাড়াতাড়ি দোকানে গিয়ে নতুন জামা কিনে পড়িয়ে দিলো ছেলেকে।

আরিফ : বাবা আমাকে সুন্দর লাগছে কি?

বাবা : হ্যাঁ, একদম রাজপুত্রের মতো লাগছে। পিছন থেকে ডাক শুনে ঘুরে তাকালেন।

লোক : ভাই দেখেন তো এটা কি আপনার ব্যাগ?

বাবা : ভালো করে দেখে বললেন, হ্যাঁ ভাই এটা আমারই ব্যাগ।

লোক : আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। গতকাল রাতে ভুল করে নিজের ব্যাগ মনে করে আপনার ব্যাগ নিয়ে চলে গেছিলাম। আমি সাথে সাথে দোকানে এসেছিলাম আপনাকে খুঁজছি পাই নি। রাত বেশি হওয়াতে আর আপনার বাসায় যাই নি। তাই আজ নিয়ে এলাম।

বাবা : খুব খুশি হয়ে বললো অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। আচ্ছা এখন তো নামাজের সময় হয়ে গেছে। নামাজ শেষ করে আমাদের বাসায় বেড়াতে যাবেন।

লোক : আজ নয় ভাই অন্য দিন যাবো ইনশাআল্লাহ্।

ঈদগাহে নামাজ পড়লো। সবার সাথে কোলাকুলি করলো। বাবা ছেলে বাড়ি যাবে এমন সময় পাশের গ্রামের রাসেল মিয়ার সাথে দেখা হলো। রাসেল মিয়া কুশল বিনিময়ের পর বললেন, ভাই একটা কথা আপনার ছাগলটা গতকাল আমাদের এখানে এসেছে। আমি ব্যস্ত ছিলাম তার কারনে কোন খবর বা দেখা করতে পারিনি। আরিফ ও তার বাবা একথা শুনে বেশ খুশি হলো। আর আল্লাহর দরবারে হাজারো শুকরিয়া জানাতে লাগলো।

এই ঈদে সু-সংবাদ পেয়ে সবাই খুশি হলো। সততাই পারে তার হারানো জিনিস ফিরিয়ে দিতে। তার সম্মান বাড়িয়ে দিতে। আজ আরিফের বাবা মা আছে বিদায় গরীব হওয়া সত্ত্বেও তার ইচ্ছেগুলো পূরন করতে তার বাবা মা যথেষ্ট চেষ্টা করে যায়। তার কষ্টে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু যাদের বাবা মা নেই যারা একা বেড়ে উঠে তারা কি করে? কিভাবে সময় কাটে? কিভাবে তাদের ইচ্ছা পূরন করে? কিভাবে তাদের ইচ্ছের কথা কাউকে জানায়?

না না তারা পারে না বলতে। তাদের বলার মতো কেউ নেই। আল্লাহ ছাড়া। তাদের নিজের কথা নিজেরাই করে নেয়। তাদের ইচ্ছে অনিচ্ছা সব নিজেদের কাছেই বলে থাকে। এদের ঈদ বলতে কিছুই নেই। এদের রাত দিন দুটোই সমান। এদের জীবনে আনন্দের দিন কবে এসেছে এরা নিজেরাও জানে না, বলতে পারবে না আদো কখনো এসেছিলো কিনা।

এদের জীবন কোথায় শুরু হয়েছে কোথায় শেষ তাদের কোন ধারণাই নেই। কাদের কাছে বলবে এরা যে আমাদের জামা নেই? কার কাছে বলবে যে আমার আজ একটু মাছ খেতে ইচ্ছে করছে বা আমার গোস্ত খেতে ইচ্ছে করছে। কাউকেই বলতে পারবে না এরা। এরা শুধু এটাই জানে যে দিন ফুরিয়ে রাত আসে আর রাত পেরুলেই দিন। এ ছাড়া তাদের আর কোন কিছু জানা নেই। খিদে লাগলে দু চার জনের কাছে হাত পেতে নিয়ে খেয়ে নেয়। এরা কি খেলো কি খেলো না এদের সে দিকে মন নাই পেট ভরেছে এতেই তাদের শান্তি। এরা বুঝে গেছে ভালো খাবার বা দামি জামা এদের কপালে নেই।

এরা এতিম। এরা জানে খুব ভালো করে। এরা বাস্তবতা খুব ভালো বুঝে। এদের ঈদে ভালো কাপড় দিয়ে ঈদ করা আর চাঁদকে ছোঁয়া একই কথা। যা সম্ভব নয়। এদের একদম ছোট ইচ্ছেগুলো ও পূরন করতে ভীষণ করতে করতে হয়। আর এই জন্যই এদের কল্পনা গুলো স্বপ্ন তেই সুন্দর। ভাবনাতেই এরা খুশি। বাস্তবে নয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়