রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

বেলাভূমি
অনলাইন ডেস্ক

নভেম্বর ২০২২ ভোরবেলা ঠিক পাঁচটা বাজে। চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার উদ্দেশ্যে মেঘনা ট্রেনে চেপে বসলাম আমরা কয়েকজন। গন্তব্যস্থল চট্টগ্রাম। দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা অতিবাহিত করে গন্তব্যস্থলে পৌঁছলাম। ট্রেনের মধ্যে পরিবারের সবাইকে নিয়ে অনেক আনন্দ হলো।চট্টগ্রাম ট্রেন স্টেশন থেকে একটা জিপ গাড়িতে চেপে এসে পৌছালাম সমুদ্রের অতি কাছের হোটেল স্বপ্ন সম্মুখে।এখান থেকেই সমুদ্রের উচ্ছ্বাস গর্জন কানে আসছে এবং দেখাও যাচ্ছে।

হোটেল স্বপ্নতে আমরা আমাদের ব্যাগ রেখে কিছুটা সময় বিশ্রাম নিয়ে নিলাম। কারণ সমুদ্র বিকেলের দিকে বেশি সুন্দর লাগে এবং বিকেলেই তার উচ্ছ্বাস বহুদূর অব্দি লাগে থাকে। আমরা ঠিক পাঁচটায় বের হলাম সমুদ্রের কিনারা। যদিও সাড়ে ৩টায় হোটেলে উঠেছি। তবে তারপর সমুদ্রের কিনারায় আসবো হয়তো কিছু অনুভব করতে পারবো না। শুভ্র ফেনার রাশি মিশ্রিত সুউচ্চ ঢেউ গভীর সমুদ্র হতে দেশে আছে পড়ছে বেলাভূমিতে বারংবার।

সমুদ্রের বেলাভূমি

বিস্তর বহুদূর বালিয়াতি

যেন মেলা বসেছে মানুষের

খোকাণ্ডখুকু, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধার

যাওয়া-আসা অজস্র, চরন, চিহ্ন

বুকে নিয়ে চেয়ে আছে সমুদ্র বালুকা

সমুদ্র যেন নিত্য করছে তার আপন গতিতে। তার সুউচ্চ ঢেউ গভীর সমুদ্র থেকে বেয়ে এসে পড়ছে বেলাভূমিতে। লাল টুকটুকে সূর্যের সাথে তার নতুন সম্পর্কের কথা হয়ত কেউ জানে না। লাল সূর্যিমামার নতুন রূপে সমুদ্র যেন তার নতুন জীবন খুঁজে পেল। অস্ত যাওয়ার আগ মুহূর্ত যেন সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে দেয় বেলাভূমিকে।বিস্তার বহুদূর বালিয়াড়ি।সমুদ্রের বেলাভূমি থেকে সূর্যের অসস্ত্র দূর মধ্যবর্তী স্থানের কথোপকথন যেন দিন দিন বেড়েই চলছে।

আর সেই বেলাভূমি দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে অজস্র চরন চিহ্ন যাওয়া আসা করছে। বাংলাদেশের বিজয় মেলা ৩০ দিন থাকে। তবে এই বেলাভূমির মেলা দেখার জন্য অজস্র দূর থেকে মানুষেরা ভিড় করছে সারা বছর। যুবক-যুবতির আনাঘোনা, খোকা খুকির আনন্দের উচ্ছ্বাস, বৃদ্ধ-বৃদ্ধার অনুভূতি গুলো বেলাভূমি সাথের আদান প্রদান করা সমুদ্রের বালুকা যেন অজস্র চিহ্নের আশায় বুকে নিয়ে চেয়ে আছে।

আজ যেন সমুদ্র সমাগমে

ঈদের আনন্দ হতে চলেছে

মানুষ মানুষের মহামিলন

অচেনার মাঝে চেনা হারিয়ে

হাসাহাসি আর বাক শুধু আলাপন।

সমুদ্রের মেলাগুলিতে আজ যেন সমুদ্র সমাগমে ঈদের আনন্দে মেতে উঠেছে। ঈদের দিনের মত মানুষের মহামিলন। চেনা অচেনা সবার সাথে আনন্দ উপভোগ করা। সবার মাঝে প্রকৃতির মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলা।

এ যেন এক অন্যরকম আনাগোনা। অন্যরকম ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষা।

কত ব্যবসায়ী কত রকমের পণ্য নিয়ে

ফেরি করে ঘুরছে পাড়ে পাড়ে

কেউ মুড়ি ভাজা কেউ ফুচকা

কেউ বেলুন কেউ সরকি

কেউ নিয়ে চলে উটের পিঠে,

কেউবা ঘোড়ার পিঠে

সওয়ার তুলে পয়সা নিয়ে।

প্রকৃতির সাথে হারিয়ে যেতে বড্ড ভালো লাগে। লাল সূর্য মামার অস্ত যাওয়ার আগ অব্দি সবার প্রকৃতি ও মানবজাতির লীলা খেলা যেন আমাকে দেউলিয়া করে তুলছে। কত ব্যবসায়ী কত রকমের পণ্য নিয়ে বসে আছে পয়সার আশায়। এখানে সব রকমের জিনিস পাওয়া যায় যা দামী জিনিসের থেকেও তৃপ্তিময়। যা প্রকৃতির সাথে সামঞ্চশ্য। বেশ রোমাঞ্চকর বললেই চলে।

ঢেউ যেখানে উদ্দাম হয়ে

আছড়ে পড়ছে উতাল দাঁড়ায়

কত মানুষ সমুদ্র স্লানে

মনোযোগী খুশি মনে

সেই স্মৃতিচিহ্ন সরূপ

আকারে তুলে দিচ্ছে কত ফটোগ্রাফার

সারাটি জীবন থাকবে কাছে বেলাভূমিতে

মহামিলনের অমূল্য স্মৃতিটুক্।ু

ঢেউ খেলা কার না ভালো লাগে। আর সেই ঢেউ যখন নিজের পা ধুয়ে দিয়ে যায় তখন তো আর কথাই নেই। আহ কি সুন্দর তাইনা। উদ্দাম হাওয়ার ঢেউগুলো আছড়ে বেলাভূমির চরণ চিহ্নে। মন উতাল পাতাল করে সেই ধারায়। সহস্র মানুষের ভিড়ে সমুদ্রের স্লানে মানুষের মনোযোগ খুশিতে আচ্ছন্ন। স্মৃতি চিহ্ন স্বরূপে আকারে তুলে দিচ্ছে। এদিক সেদিক থেকে কত শত ফটোগ্রাফার। পৃথিবীর ছোট এক জায়গায় যেন পুরো পৃথিবীর সুখ পাওয়া যায়। মনের তৃপ্তি শরীরের তৃপ্তি যেন বেড়েই চলেছে। বেলাভূমির মহামিলনে অমূল্য স্মৃতিটুকু রয়ে যাবে আজীবন।

সমুদ্র ঢেউয়ে স্নানের সে মজা

মনের গভীরে রঙে রঙে সাজা

আছে যেন থরে থরে গাঁথা

যেমনি থাকে হরেক কুসুম

এক সুতোই গাঁথা।

ঘুরতে যেহেতু এসেছি স্নান না করলে হয় নাকি। যেখানে বেলাভূমির সমুদ্র ঢেউয়ের খেলা অসম্ভব ভালোলাগা কাজ করে। যা প্রাকৃতিকের আনাগোনায় মানসিক প্রশান্তি চলে আসে। সবাই মিলে সমুদ্রে নামলাম। ঢেউয়ের ধারা যেন কমছেই না। যত সময় যাচ্ছে, ঢেউয়ের ধারা যেন বেড়েই চলেছে। আছড়ে পড়া ঢেউয়ের খেলার নীলাভূমি অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে গভীর রঙ্গে সাজিয়ে আজ থরে থরে গাঁথা। নানান লোকের ভিড়ে নানান জিনিসপত্রের মাঝে, নানান অঞ্চলের লোকের সাথে এবং সমুদ্রের বেলাভূমি একই সুতোই গাঁথা।

নোনা জল আর ভিজে বালুকায়

অঙ্গ সাজিল নব কলবরে

সমুদ্র সপাটে উদ্দাম ঢেউয়ে

দিচ্ছে সবারে নাস্তানাবুদে।

ওরা বুঝি প্রেমিক প্রেমিকা

সমুদ্র উচ্ছ্বাসে জলকেলিতে

অঙ্গেতে অঙ্গ মিশে আছে,

প্রেমের গভীর উৎসবে।

ওই বুঝি মা তার স্নেহের সন্তানের

সমুদ্র রাজ্যের ডল স্বস্নেহে

মস্তকে সারা অঙ্গে সিঞ্চনে।

সমুদ্রের পাড়ে বালি থাকবে এটাই স্বাভাবিক।সমুদ্রের পারে বালি থাকবে এটা স্বাভাবিক।আর সেখানে যদি খালি পায় নাই হাঁটি তো বেলাভূমির মজাটাই পাওয়া যাবে না। তার মধ্যে নোনা জল তো আছেই। পানি গুলো লবনমুক্ত।নোনা জলের বাংলা গুলো যেন লাল আলোয় চিকচিক করছে। প্রাকৃতিক এত সুন্দর দৃশ্য যেন চোখে দেখার মত নয়। কি অপূর্ব প্রতিটি শিরা-উপশিরা বলে দিচ্ছি তার অবয়ব কতটা। প্রকৃতির প্রেমে পড়েনি এমন মানুষ হয়তো জন্মায়নি এখন অব্দি। প্রকৃতিটা এমন যে একা তার প্রেমে পড়া বড্ড একাকিত্বের মতোন। একজন যুবক যখন একজন যুবতীর সাথে ঐ প্রাকৃতির প্রেমে পড়ে না কি রোমন্থকর দৃশ্য তা বলে বোঝানোর ভাষা হয়তো কেউ জানে না। তবে চাঁদ সূর্যের ন্যয় আর মাটি বৃক্ষের মতোই তাদের প্রেম হয়ে থাকে। প্রাকৃতিকের সহ কারো প্রেমে পরলে তা সমুদ্র শুকানোর আগে তা ঝড়ে যায় না, চিরন্ত কাল থেকে রায়। প্রাকৃতিক প্রেমের উৎসব টা যেন নৃত্য নতুন দিন তৈরি করে নিয়ে আসে তা পাল্টানোর ক্ষমতা মানব জাতির নেই তাই প্রেম হলো তা দেখা যায় না ছোঁয়া যায় না, অনুভব করা যায় কল্পনা করা যায়। আর তাতেই বেশ মধুময়।

ওই বুঝি কোন যুবক, তার পিতা মাতার,

চরনকাল সিঞ্চনে

সমুদ্র বারি দিয়ে,

ওই বুঝি কোন সাধুজন

জোড় হাত করি সমুদ্র রাজে

প্রনাম নিবেদয়,

খুলে আসা ঢেউ বারি লয়ে

আপনার শিরে আপনি সিঞ্চনে।

জীবনে কত অক্ষয় স্মতি

এঁকে যায় কত মানুষ

এই সমুদ্র বালুকা বেলায়।

আজ আমি পায়ে বসে

ছোট ছোট ঝিনুক কড়াই।

এ ঝিনুক আছে লেগে

কত স্মৃতি কত রং ভালোবেসে।

বেলাভূমি সব টুকু তার আগলে আছে

আপনার স্নেহ ভরা বুক পেতে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়