প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩, ০০:০০
তোমার বুদ্ধি, পরিশ্রম যত সুক্ষ্ম হবে, তত তাড়াতাড়ি তুমি তোমার সাফল্যে এগিয়ে যেতে পারবে। স্বপ্ন একজন দেখে। তবে কিছু কিছু সময়ে স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য একই স্বপ্ন ২জন দেখে থাকে। আর ওই একজনের জন্যই স্বপ্ন আমাদেরকে বাঁচিয়ে রাখে, স্বপ্ন আমাদেরকে জাগিয়ে তোলে। তবুও আমরা হার মানিনি ভাঙ্গা স্বপ্নের কাছে। লক্ষ্য, বুদ্ধি আর পরিশ্রম থাকলে স্বপ্নকে জাগিয়ে তোলা, স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করা এটা বেশ কঠিন কাজ নয়। তবে আমাদের কাছে কঠিন, বড্ড কঠিন। আমরা দেখে যাই, অনুভব করে যাই তবুও স্বপ্ন যেনো পূরণ হচ্ছেই না, লক্ষ্যের দুয়ারে পৌঁছানো যাচ্ছেই না।
হেরে হেরেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব।
হেরে হেরেই লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।
তবে মন, মস্তিষ্ক, বুদ্ধি, সাহস, লক্ষ্য এই সবগুলোই নির্দিষ্ট মাত্রায় রাখা উচিত। যতক্ষণ পর্যন্ত স্বপ্ন পূরণ না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত স্বপ্ন দেখে যাও। স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরে বাঁচো। তবেই জীবন সুন্দর। তবে সেই স্বপ্ন নিয়ে যদি কেউ তোমার দূর্বলতার প্রকাশ নেয় তবে তখনি জেগে উঠো। সাহস করে প্রতিবাদ করো তোমার সাথে করা অন্যায়ের। যত মুখবুজে থাকিবে ততই তোমাকে চিবিয়ে খাবে।
আচ্ছা চলো একটা মেয়ের স্বপ্ন জয়ের গল্প শুনে আসি।
নাম তার আরিশা। সে মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন সন্তান। আরিশার বাবা একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে। আরিশা তার বোন আর তার বাবা মাকে নিয়েই তার জীবন। ছোট বেলা থেকে স্বপ্ন দেখতো বড় হয়ে ‘আইনজীবী’ হবে। অনেক বড় ‘আইনজীবী’ হবে। সবাইকে সাহায্য করবে। সৎ পথে চলবে। এসব স্বপ্ন নিয়েই বেড়ে উঠে আরিশা। আরিশা তার পরিবার আর স্বপ্ন ছাড়া অন্য কোনো ইচ্ছেই ছিলো না। আরিশার বাবা তাকে সবসময় সৎ পথে চলতে শিখিয়েছে। সত্য কথা বলা, অন্যের উপকার করা এসবই আরিশার বাবা তাকে শিখাতো। আরিশাও মিষ্টি মেয়ের মতো সব শুনতো। আরিশার প্রতিও তার বাবা ভীষণ খুশি ছিলো। তারা দুজন দুজনকে খুব ভালোবাসতো।
আরিশার বয়স এখন ১৮ বছর। তাই এখনও আরিশা নিজের জন্য না হলেও তার বাবার ইচ্ছে আশা সব পূরণ করবে। তাই বাবার কথা চিন্তা করে পড়াশোনা আরো গুরুত্ব সহকারে পড়তো সে। কিন্তু হঠাৎ কালবৈশাখীর ঝড়ে যেন সব উড়ে চলে গেলো। আরিশাকে দেখতে আসছে পাত্রপক্ষ থেকে। আরিশা এখন বিয়ে করতে চায় না। কিন্তু তার বাবা-মাকে সে কষ্ট দিতে চায় না।
তারা কষ্ট পাবে নবলে সে রাজি হয়েছে বিয়েতে। তবে আরিশার বাবা বিয়ের আগেই তাদের থেকে কথা নিয়ে রেখেছে যে তার মেয়েকে আপনাদের ছেলের কাছেই বিয়ে দিবো কিন্তু বিয়ের পরেও আরিশাকে পড়াশোনা করতে দিতে হবে। পাত্র পক্ষ তাদের কথায় রাজি হলো। সবাই অনেক খুশি। তাই আরিশা আর কথা বলতে পারিনি। সেও রাজি হয়ে গিয়েছে। আরিশা ভাবছিলো তার স্বপ্ন হয়তো লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তার স্বপ্নটা হয়তো বাস্তবায়িত হবে ওই পরিবারে গেলে হয়তো খুব তাড়াতাড়ি স্বপ্ন পূরণ হবে। কিন্তু আচমকা দেখা গেলো অদ্ভুত এক খেলা।
যদিও তার বিপদ মুখের সামনেই ছিলো। কিছুদিনের ভিতরেই তার পরীক্ষার ফলাফল দিলো। সারাদেশের মধ্যে ১ম স্থান অধিকারী হলো আরিশা। আরিশাতো তার সাফল্যে খুব খুশি। সবচেয়ে বেশি খুশি তার বাবায়। আজ সে পরিপূর্ণ আইনজীবী হয়ে বের হতে পেরেছে। এই খবরটা যেন চাপা থাকলো না। আর আরিশার জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোও যেন ফিরে আসতে লাগলো। ফলাফলের খবরটা খুব সহজেই মিডিয়া অব্দি চলে গেলো। এখন আরিশাকে প্রতিটা খবরেই দেখা যাচ্ছে। সবার একই প্রশ্ন, কি করে সে এতো ভালো রেজাল্ট করলো। সবার এতো প্রশ্নে আরিশা শুধু তার বাবার নামটাই নিয়েছে আর বলেছে বাবার আত্মবিশ্বাস আর তার স্বপ্নই আমাকে এতদূর আসছে সাহায্য করেছে।
এসব কিছু টিভিতে দেখে তার শ্বশুড় বাড়ির লোকেরা দেখে দ্রুত আরিশার কাছে চলে এলো। সবাই তার কাছে সবাই ক্ষমা চাইলো এবং সবার ভূল বুঝতে পারলো। আরিশা ক্ষমা করতে না চাইলেও তার বাবার কথায় সবাইকে ক্ষমা করে দেয়। তবে এতো অত্যাচারের মধ্যেও তার স্বপ্ন পূরণ করতে সে পিছপা হয়নি। স্বপ্নকে সে বাস্তবে পরিণত করতে পেরেছে। আরিশার লক্ষ্যই ছিলো তার জীবনের মূল চাবিকাঠি। আরিশার কঠোর পরিশ্রম আর কষ্টের পর আজ সে সফলতা অর্জন করে। আজ সে আইনজীবী।