শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২১, ০০:০০

গ্রীষ্মে ঈদের খুশি
অনলাইন ডেস্ক

আজ অনিকের মনটা মোটেও ভালো নেই। শুধু অনিকের নয়, মন ভালো নেই, আদিল, রিয়া, রুমা, রসুরও। কারণ ওরা দীর্ঘ এক বছর পর গ্রামের বাড়িতে এসেছে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে। ওরা সবাই ঢাকায় থাকে। ওদের বাবা ঢাকায় সরকারি চাকুরি করেন। সেই সুবাদে ওরাও ঢাকাতেই পড়াশোনা করে শহরের নামীদামি স্কুল-কলেজে। ফলে ছুটিছাটা মিলে না বললেই চলে। এজন্যে গ্রামে আসা হয় খুবই কম। গত ঈদে এসেছিলো ওরা। আর মওকা মিলেনি। এবারের ঈদে একটু মওকা মিলেছে, তাই ছুটে এসেছে সবাই। ঈদের আর মাত্র চারদিন বাকি। গ্রামের বন্ধুদের সাথে কুশল বিনিময় করবে, আড্ডা দিবে, আর তালদিঘিতে নাও ভাসাবে ইত্যাদি কত স্বপ্ন ওদের। কিন্তু এটা যে বর্ষাকাল। বর্ষাকাল মানেই তো বর্ষণ। এই যে বৃষ্টি, ঝরছে তো ঝরছেই। একটুও বিরাম নেই। গেলো বছর ঈদেও প্রচণ্ড বৃষ্টি ছিলো। তাই ঈদে মোটেও আনন্দ করতে পারেনি ওরা। এমনকি ঈদের নামাজও পড়তে পারেনি মাঠে গিয়ে। অধিকন্তু ঈদের নতুন পোশাকও পরতে পারেনি। নীরবেই কেটে গেছে ঈদ। তাই মন মোটেও ভালো না ওদের। না জানি গতবারের মতো হয় কি না। বর্ষণ, প্রচণ্ড বর্ষণ। একটুও ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। গ্রামের বর্ষণ মানেই ঝম ঝম শব্দ। কদম-কেয়া-কেতকি ফুলের সমারোহ। যা ভীষণ অপরূপ। অগত্যা ওরা বারান্দায় বসে এমন দৃশ্য অবলোকন করছিলো। ঠিক তখনই খুশি দুটি কৈ মাছ ধরে নিয়ে এলো ওদের সামনে। আনন্দে আটখানা হয়ে ওরা বায়না ধরলো কৈ মাছ ধরার।

খুশি ওদের রক্তের কেউ না, তবে খুশিকে ওরা বড্ড ভালোবাসে। কারণ অনিকের বাবা খুশিকে কুড়িয়ে এনেছিলো শহর থেকে। ওর পিতৃপরিচয় বলতে কেউ নেই। কে বা কারা ওকে ফেলে গিয়েছিলো ডাস্টবিনের পাশে। সেখান থেকে ওকে কুড়িয়ে এনে তুলে দেয় অনিকের মায়ের কাছে। আর অনিকের মা খুশিকে কোলে-পিঠে করে মানুষ করে। একটুও বুঝতে দেয়নি মায়ের অভাব। আর অনিক, রিয়া, রুমাও খুশিকে আপন বলেই জানে। ওরাও যেনো খুশির একান্ত আপন। তাই গ্রামে এলে যতো মজার মজার কাজ আছে তা করে আনন্দ দেয় ওদের। খুশি জানে শহরে যতো বর্ষণই হোক না কেনো কখনো বর্ষণের সাথে কৈ মাছ পাওয়া যায় না। গ্রামে প্রচণ্ড বর্ষণে কাতরিয়ে কাতরিয়ে কৈ মাছ ওঠে ডাঙায়। এমন দৃশ্য সত্যি মনোমুগ্ধকর। তাই খুশির কৈ মাছ দেখে ওরাও নেমে পড়লো বাড়ির পাশের পাটক্ষেতে। মায়ের হাজারো বারণ দমাতে পারেনি ওদেরকে। অবিরাম বর্ষণে পুকুর থেকে ওঠা কৈ মাছ ধরার কত যে আনন্দ তা বলে বোঝানো যাবে না। আর এমন আনন্দ দেয়াটাই খুশির একান্ত ইচ্ছা। ওদেরকে আনন্দ দেয়া মানেই নিজে খুশি হওয়া।

এমনি আনন্দ আর হৈ-হুল্লোড়ের মধ্য দিয়ে কাটতে লাগলো ওদের সময়। এরই মাঝে হঠাৎ লাল সূর্য পশ্চিম আকাশ রাঙিয়ে উঠলো। জানিয়ে দিলো আর বৃষ্টি নেই। সত্যি সত্যিই থেমে গেলো বৃষ্টি। কাল ঈদ। তাই শুরু হলো ঈদের আনন্দ। দলবেঁধে পুকুরে গোসল করা, নতুন পোশাক পরা, ঈদের নামাজ পড়া, রকমারি খাবার খাওয়া, পুরনো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া, অধিকন্তু সালামি নেয়ার মাধ্যমে চললো ঈদের আনন্দ। এমন আনন্দস্মৃতির পাতায় চির জাগরূক হয়ে থাকবে। অনিকদের আনন্দ দিতে পেরে খুশি আনন্দে আটখানা। তাই হস্যোজ্জ্বল মুখে খুশির কণ্ঠে ধ্বনিত হলো ভেস্তে যায়নি ঈদের আনন্দ!

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়