শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ৩৩ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৬

প্রযুক্তির সহজলভ্যতা, শিখন কৌশল এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্কের মিথস্ক্রিয়া

রাশেদা আতিক রোজী
প্রযুক্তির সহজলভ্যতা, শিখন কৌশল এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্কের মিথস্ক্রিয়া

শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক হচ্ছে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং জ্ঞানের আদান-প্রদানের এক ইতিবাচক বন্ধন-যেখানে উভয়কেই বন্ধু এবং পথপ্রদর্শক হিসেবে কিছু সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করতে হয়। বর্তমানে এই প্রজন্মের কাছে শিক্ষক শিক্ষার্থীর সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছেÑকালের আবর্তে এটি এখন একধরনের জটিল সমস্যার মতো, যেখানে শিক্ষাব্যবস্থা, প্রযুক্তি এবং সামাজিক পরিবর্তনÑসবকিছুই এর উপর প্রভাব ফেলে। এই প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা অধ্যায়নের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোন ধরনের পরিশ্রম করতে চায় না। ধৈর্যের সাথে কোন কিছুর গবেষণা , সৃজনশীল চিন্তা করে দক্ষতার সাথে তা বিশ্লেষণ করা-এগুলোতে প্রচন্ড রকমের অনিহা।

এর নৈপথ্যের নানাবিধ কারণ

* প্রযুক্তির সহজলভ্যতা: নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা সহজেই ইন্টারনেট থেকে তথ্য পেয়ে যায়। এর ফলে তাদের নিজস্ব গবেষণা বা গভীর চিন্তাভাবনার প্রয়োজন কমে যায়। অনেক সময় তারা তৈরি উত্তর বা সমাধান খুঁজে নেয়, যা তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টা থেকে শেখার আগ্রহ কমিয়ে দেয়।

* দ্রুত ফলাফল পাওয়ার প্রবণতা: বর্তমান সমাজ দ্রুত ফলাফল চায়। শিক্ষার্থীরাও দ্রুত শিখতে ও ফল পেতে চায়। কোনো বিষয়ে দীর্ঘ সময় ধরে পরিশ্রম করার ধৈর্য তাদের অনেকের নেই। যদি কোনো বিষয় কঠিন মনে হয়, তারা সহজে হাল ছেড়ে দেয়।

* মানসিক চাপ ও বহুমুখী আকর্ষণ: শিক্ষার্থীদের জীবনে এখন পড়াশোনার বাইরে অনেক কিছু করার আছেÑযেমন সামাজিক মাধ্যম, অনলাইন গেম, বিনোদনমূলক কনটেন্ট ইত্যাদি। এই ধরনের আকর্ষণ তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়া কঠিন করে তোলে। এছাড়া, ভালো ফলের জন্য মানসিক চাপও অনেক সময় তাদের হতাশ করে তোলে।

শিখন শেখানোর মান উন্নয়নে শিক্ষকদের অত্যাধিক পরিশ্রম করতে দেখা যায়। শ্রেণিকক্ষের নির্ধারিত পাঠের বাইরে ও সৃজনশীল বহুমুখী কাজ তাঁরা করে থাকেন। কারণগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়ঃ

* শিক্ষণ পদ্ধতির পরিবর্তন: শুধু ক্লাসে পড়িয়ে গেলেই এখন শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন। শিক্ষকদের এখন নতুন নতুন শিক্ষণ পদ্ধতি (যেমন: ইন্টারেক্টিভ সেশন, ভিজ্যুয়াল এইডস, গ্রুপ ওয়ার্ক) ব্যবহার করতে হয়। এর জন্য তাদের অনেক বেশি প্রস্তুতি নিতে হয়।

* ব্যক্তিগত মনোযোগের প্রয়োজনীয়তা: যেহেতু অনেক শিক্ষার্থী নিজে থেকে আগ্রহ দেখায় না, তাই শিক্ষকদের প্রতিটি শিক্ষার্থীর দিকে আলাদাভাবে নজর দিতে হয়। কার কোথায় সমস্যা হচ্ছে, কেন সে পিছিয়ে যাচ্ছেÑএসব খুঁজে বের করে তাদের সাহায্য করতে হয়।

* প্রযুক্তির ব্যবহার ও মূল্যায়ন: প্রযুক্তিকে ক্লাসে অন্তর্ভুক্ত করাও শিক্ষকদের জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ। তাদের নতুন সফটওয়্যার, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করা শিখতে হয়। আবার, শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করার জন্য নতুন নতুন উপায় বের করতে হয়, যা অনেক সময়সাপেক্ষ।

* অভিভাবকদের প্রত্যাশা: অনেক অভিভাবক চান তাদের সন্তান ভালো ফল করুক, কিন্তু পরিশ্রম করতে আগ্রহী নন। শিক্ষকদের উপর এই চাপ আসে যে তারা যেন শিক্ষার্থীদের যেকোনো মূল্যে ভালো ফল করাতে পারেন, যা শিক্ষকদের কাজের চাপ আরও বাড়িয়ে দেয়।

নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা যেসব সামাজিক ও প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তাতে তাদের পরিশ্রম করার প্রবণতা কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে, শিক্ষকদের উপর পড়াশোনার মান ধরে রাখা, নতুন পদ্ধতির সাথে তাল মেলানো এবং শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগতভাবে সহায়তা করার বাড়তি চাপ পড়ছে, যার ফলে তাদের পরিশ্রম বহুগুণ বেড়ে যাচ্ছে।

‘তোমার শিক্ষার্থীদের চেয়ে বেশী পরিশ্রম কর না’

শিখন-শেখানো প্রসেসে শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলা হয় “ঘবাবৎ ড়িৎশ যধৎফবৎ ঃযধহ ুড়ঁৎ ংঃঁফবহঃং” (তোমার শিক্ষার্থীদের চেয়ে বেশী পরিশ্রম কর না)। এই উক্তিটির আপাত অর্থটি সম্পূর্ণ ভুল। এর পেছনের মূল দর্শনটি হলোÑ একজন শিক্ষক হিসেবে আপনার পরিশ্রমের ধরণটি এমন হবে, যা শিক্ষার্থীদেরকে নিজেদের শেখার প্রক্রিয়ায় আরও বেশি সক্রিয় করে তোলে। এই উক্তিটি শিক্ষককে অলস হতে বলে না, বরং আরও বেশি কৌশলগত ও বুদ্ধিমান হতে উৎসাহিত করে। এই উক্তিটির অর্থ হলো, একজন শিক্ষক হিসেবে আপনার মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদেরকে শেখার প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত করা এবং তাদের নিজেদের দায়িত্ব নিতে উৎসাহিত করা। এর মানে এই নয় যে একজন শিক্ষক হিসেবে আপনি কম পরিশ্রম করবেন, বরং এর অর্থ হলো আপনার পরিশ্রমের ধরণ ভিন্ন হবে।উক্ত উক্তির কিছু মূল ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো:

শিক্ষার্থীকে দায়িত্ব নিতে শেখানো: আপনি যদি শিক্ষার্থীদের সব কাজ করে দেন বা সবকিছু অতিরিক্ত সহজ করে দেন, তাহলে তারা নিজেদের চেষ্টায় শেখার সুযোগ পাবে না। শিক্ষকের কাজ হলো পথ দেখানো, কিন্তু পথ চলতে হবে শিক্ষার্থীকেই।

সক্রিয় শেখার পরিবেশ তৈরি করা: ক্লাসে আপনি বক্তৃতা দিয়ে যাচ্ছেন, আর শিক্ষার্থীরা চধংংরাব হয়ে শুনছে Ñএই পদ্ধতিতে অনেক সময় কাঙ্ক্ষিত ফল আসে না। বরং এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন করবে, আলোচনা করবে এবং নিজেরাই সমাধানের পথ খুঁজবে।

শিক্ষকের ভূমিকা পরিবর্তন: শিক্ষকের ভূমিকা শুধু তথ্য সরবরাহ করা নয়, বরং একজন সহায়ক (ভধপরষরঃধঃড়ৎ), গাইড (মঁরফব) এবং অনুপ্রেরণাদাতা (সড়ঃরাধঃড়ৎ) হিসেবে কাজ করা। আপনার পরিশ্রম হবে এমনভাবে যা শিক্ষার্থীদের নিজেদের পরিশ্রম করতে উৎসাহিত করে।

এই উক্তিটি একজন শিক্ষককে মনে করিয়ে দেয় যে তার প্রচেষ্টা যেন শিক্ষার্থীদের শেখার আগ্রহকে দমিয়ে না দিয়ে বরং তাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।

গণিত পাঠের উদাহরণ: যোগ শেখানো

ধরা যাক, একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদেরকে দুই অঙ্কের সংখ্যার যোগ শেখাবেন।

ভুল পদ্ধতি (যখন শিক্ষক শিক্ষার্থীর চেয়ে বেশি পরিশ্রম করেন):

শিক্ষক বোর্ডে নিজে নিজে যোগের নিয়ম লিখে দেবেন (যেমন: প্রথমে এককের ঘরের সংখ্যা যোগ করতে হয়, তারপর দশকের)।

তিনি কয়েকটি উদাহরণ নিজে নিজে সমাধান করে দেখাবেন এবং মুখে মুখে ব্যাখ্যা করবেন।

এরপর শিক্ষার্থীদেরকে শুধু কিছু যোগ করতে দেবেন। শিক্ষার্থীরা মুখস্থ নিয়মে সেই যোগগুলো করবে।

এই পদ্ধতিতে শিক্ষককে প্রতিটি ধাপে ব্যাখ্যা করতে হচ্ছে। তিনি একাই সব পরিশ্রম করছেন, কিন্তু শিক্ষার্থীরা কেবল মুখস্থ করে কাজ সারছে। তারা যোগের পেছনের মূল ধারণাটি বুঝতে পারছে না।

সঠিক পদ্ধতি (যখন শিক্ষক কৌশলী হয়ে কম পরিশ্রমে শিক্ষার্থীদের বেশি পরিশ্রমী করে তোলেন):

শিক্ষক প্রথমেই বোর্ডে একটি সমস্যা লিখবেন, যেমন: “বাজার থেকে ১০টি আম এবং ৮টি আপেল আনা হলো। মোট কতগুলো ফল হলো?”

তিনি শিক্ষার্থীদেরকে কোনো নিয়ম না শিখিয়ে, তাদের কাছে জানতে চাইবেন, “তোমরা কিভাবে এই সমস্যার সমাধান করবে?”

শিক্ষার্থীরা হয়তো হাতে গুণে, ছবি এঁকে বা অন্য কোনো উপায়ে সমাধান করার চেষ্টা করবে। শিক্ষক তাদের বিভিন্ন প্রচেষ্টাকে উৎসাহ দেবেন।

এরপর শিক্ষক তাদের হাতে ছোট ছোট কিছু উপকরণ (যেমন: কাঠি, পুঁতি, মার্বেল) দেবেন এবং বলবেন, “তোমরা এই উপকরণগুলো ব্যবহার করে ১০ এবং ৮ যোগ করো।”

শিক্ষার্থীরা নিজেরাই উপকরণগুলো সাজিয়ে গুনে দেখবে যে মোট ১৮টি হয়।

এই ধাপে শিক্ষক শুধু তাদের ভুলগুলো ধরিয়ে দেবেন এবং সঠিক পথে আসতে সাহায্য করবেন। এরপর তিনি জিজ্ঞাসা করবেন, “তোমরা কিভাবে এটি সমাধান করলে? প্রথমে কী করলে?”

শিক্ষার্থীরা নিজেদের ভাষায় ব্যাখ্যা করবে যে তারা প্রথমে এককের ঘর এবং তারপর দশকের ঘরের সংখ্যা যোগ করেছে।

এই পদ্ধতিতে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষককে আলাদা করে নিয়ম বা নোট লিখে দিতে হচ্ছে না। তিনি এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করেছেন, যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই হাতে-কলমে যোগের ধারণাটি বুঝতে পারছে। তাদের নিজেদের প্রচেষ্টার মাধ্যমে শেখা এই জ্ঞানটি অনেক বেশি স্থায়ী হয়।শিক্ষকের পরিশ্রম হবে এমন একটি পথ তৈরি করার জন্য, যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেরা হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। শিক্ষক কেবল পথপ্রদর্শক হিসেবে থাকবেন, যিনি সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে শিক্ষার্থীদের স্ব-শিক্ষায় আগ্রহী করে তুলবেন।

একজন শিক্ষকের প্রকৃত সম্মান এবং মর্যাদা আসে তার সৎকর্ম , ভালো আচরণ, উদার দৃষ্টিভঙ্গি -সর্বোপরি সহনশীলতা থেকে।

তাই বর্তমান প্রজন্মের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে শিক্ষকের সহনশীলতা ওদার দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভালো আচরণ দিয়ে শিক্ষার্থীদের মন জয় করতে হবে, তাহলেই আসবে সৎকর্মের প্রকৃত সফলতা।

প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় সাধারণত মানুষের মর্যাদা মাপা হয় ধন-সম্পদ, বংশপরিচয়, প্রভাবশালী অবস্থান, শিক্ষাগত ডিগ্রি, চাকরির পদমর্যাদা বা বাহ্যিক আভিজাত্যের দ্বারা। ফলে দেখা যায়Ñকেউ হয়তো নিজে অকর্মণ্য হলেও পরিবারের পরিচয় বা প্রভাবের কারণে সম্মান পান, আবার কোনো কর্মঠ, সৎ ও নীতিবান মানুষ প্রকৃত সম্মান থেকে বঞ্চিত হন। কিন্তু আল্লাহর কাছে মর্যাদার মাপকাঠি একেবারেই আলাদা। সেখানে সম্মান নির্ধারিত হয় কেবল মানুষের নিজস্ব কর্ম দ্বারা।

মহান আল্লাহ বলেনÑ“প্রত্যেকের জন্যেই তাদের নিজ নিজ কর্ম অনুযায়ী মর্যাদা নির্ধারিত হবে। আল্লাহ কাউকেই অবিচার করবেন না।”Ñসূরা আল-আহক্বাফ : ১৯। অর্থাৎ, ধন, বংশ, প্রভাব বা বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়Ñমানুষের মূল্য আসলে তার কর্মেই।

এক, প্রকৃত সম্মান কোথা থেকে আসে

সম্মান কখনো ধমক দিয়ে বা ভয় দেখিয়ে আদায় করা যায় না। প্রকৃত সম্মান আসে মানুষের আচরণ, নীতি ও সৎকর্মের মধ্য দিয়ে।

আল্লাহ বলেনÑ“তোমাদের মধ্যে সেই সবচেয়ে সম্মানিত, যে সবচেয়ে বেশি সচেতন (তাকওয়াবান)।” Ñসূরা হুজুরাত : ১৩

দুই, ভালো কাজের মূল্য কখনো হারায় না

মানুষের করা কোনো ভালো কাজই বৃথা যায় না। যে-ই হোক না কেনÑসৎকর্ম করলে দুনিয়াতে সে সম্মান পায়। বিশ্বাসী হলে এর প্রতিদান পরকালেও অব্যাহত থাকে। আর যারা কেবল দুনিয়াকেই বিশ্বাস করে, তারাও দুনিয়াতে ফল ভোগ করে; তবে মৃত্যুর পর আর কোনো পুরস্কার থাকে না।

তিন, সাফল্যের আসল শর্ত

প্রকৃত সফলতার জন্য আল্লাহ দুটি শর্ত দিয়েছেনÑবিশ্বাস ও সৎকর্ম। যাকে মানলেনই না, তাঁর কাছ থেকে পুরস্কার প্রত্যাশা যৌক্তিক নয়। তবুও আল্লাহ উদার; তিনি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের ভালো কাজের জন্য দুনিয়াতে সম্মানিত করেন। এজন্য অবিশ্বাসীরাও তাদের কর্মের জন্য যুগ যুগ ধরে স্মরণীয় হন। আর সৎকর্মশীল গোপন মুমিনরা, যারা পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে প্রকাশ্যে ঈমান দেখাতে না পারলেও অন্তরে বিশ্বাসী ছিলেন, তাদের জন্যেও উভয় জগতে পুরস্কার রয়েছে।

চার, অহংকারের পরিণতি

অহংকার মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়।

আল্লাহ বলেনÑ“তোমরা তো দুনিয়ার জীবনেই তোমাদের সুখ-সম্ভার ভোগ করে নিয়েছ। আজ তোমাদের দেওয়া হবে অবমাননাকর শাস্তি, কারণ তোমরা অহংকারে মত্ত ছিলে এবং সত্যকে অস্বীকার করেছিলে।”Ñসূরা আল-আহক্বাফ : ২০

পাঁচ, জীবনের বাস্তব উদাহরণ

ধরা যাকÑএকজন সাধারণ স্কুলশিক্ষক। তিনি ধনী পরিবারের নন, বড় কোনো প্রভাবশালী পদও নেই। কিন্তু তিনি সততার সঙ্গে পড়ান, শিক্ষার্থীদের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন, সৎ উপার্জনে জীবন কাটান। অন্যদিকে, একই এলাকায় একজন ধনী প্রভাবশালী আছেন, যিনি অর্থের জোরে সমাজে বাহ্যিক সম্মান পান। অথচ অন্যায় কাজেই তিনি পরিচিত। মানুষ হয়তো বিভ্রান্ত হয়Ñকার মর্যাদা বেশি?

আল্লাহর দৃষ্টিতে প্রকৃত সম্মানিত সেই শিক্ষক, যিনি সৎকর্মে জীবন কাটাচ্ছেন। কারণ ধন-সম্পদ বা প্রভাব নয়Ñ

বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির সহজলভ্যতার এই যুগে এসেও শিক্ষক শিক্ষার্থীর সম্পর্ক উন্নয়নে শুধু মাত্র কারিকুলাম এর সীমাবদ্ধতা নয়, মনে রাখতে হবে -কেবল শিক্ষকের সৎ কর্মই তার প্রকৃত মর্যাদার মাপকাঠি।

রাশেদা আতিক রোজী : ইন্সট্রাক্টর, উপজেলা প্রাইমারি এডুকেশন ট্রেনিং সেন্টার, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়