প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৩
ঈদে আমাদের করণীয়

ঈদুল ফিতর মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অনন্য আনন্দ ও উৎসবের দিন। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর এই দিনটি আসে আত্মশুদ্ধির বার্তা নিয়ে। এটি শুধু খুশির দিনই নয়, বরং এটি ধৈর্য, সংযম ও দানের মাহাত্ম্যকে হৃদয়ে ধারণ করায়। তাই ঈদুল ফিতরের প্রকৃত সৌন্দর্য বজায় রাখতে আমাদের কিছু করণীয় আছে, যেগুলো আমাদের অনুসরণ করা উচিত।
ফিতরা আদায় করা
ফিতরা আদায় করা ঈদুল ফিতরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান। এটি গরিব-দুঃখীদের সাথে ঈদের আনন্দ সমানভাবে ভাগ করে নেওয়ার অন্যতম মাধ্যম। ফিতরা ঈদের নামাজের আগেই আদায় করা উত্তম। মূলত এই ফিতরা নিজে হাতে গরিবের হাতে তুলে দেওয়াই সর্বোত্তম কর্ম। সামর্থ্য অনুযায়ী বেশি পরিমাণে দান করাও বেশি পরিমাণ সওয়াবের কাজ।
ঈদের নামাজ আদায় করা
ঈদের দিন ভোরবেলা উঠে সুন্দরভাবে প্রস্তুত হয়ে ঈদের নামাজ আদায় করা সুন্নত। এজন্যÑসকালবেলা উঠে গোসল করা। নতুন বা পরিষ্কার পোশাক পরা। সুগন্ধি ব্যবহার করা। ঈদগাহে যাওয়ার সময় জোরে জোরে তাকবির বলা। ঈদগাহে এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া এবং অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরে আসা। কিন্তু যদি রাস্তা একটিই থাকে তবে যাওয়ার সময় একপাশে দিয়ে যাওয়া আর আসার সময় অন্য পাশে দিয়ে আসা।
আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে সৌহার্দ্য বজায় রাখা
ঈদ হলো সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের দিন। তাই আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা করা বা ফোনে শুভেচ্ছা জানানো। প্রতিবেশীদের খোঁজখবর নেওয়া। ভুল বোঝাবুঝি থাকলে বা সম্পর্কে টানপোড়ন থাকলে সমস্যা মিটিয়ে ফেলা। সামর্থ্য অনুযায়ী মেহমানদারী করা।
গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করা
ঈদের আনন্দ কেবল নিজের জন্য নয়, বরং এটি সবার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার দিন। তাই যারা মোটামুটি অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী আছেন, তাদের জন্য উচিৎ হবে, অভাবী মানুষের জন্য খাবার ও পোশাকের ব্যবস্থা করা। পথশিশু ও অসহায় মানুষদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নেওয়া। বৃদ্ধাশ্রম বা এতিমখানায় গিয়ে তাদের খোঁজখবর নেওয়া।
অপচয় ও অতিরিক্ত বিলাসিতা থেকে বিরত থাকা
ঈদুল ফিতর আনন্দের দিন হলেও তা যেন অযথা অপচয় ও অতিরিক্ত বিলাসিতায় পরিণত না হয়। অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা না করা। খাবার নষ্ট না করা। সামাজিক মাধ্যমে অতিরিক্ত প্রদর্শনী পরিহার করা। ঈদের আসল শিক্ষা গ্রহণ করা।ঈদুল ফিতর শুধু আনন্দ-উৎসবের জন্য নয়, এটি ধৈর্য, সংযম, দানশীলতা ও পারস্পরিক ভালোবাসার শিক্ষা দেয়। তাই এই শিক্ষাগুলো সারা বছর ধরে রাখা উচিত।
ঈদুল ফিতর হলো প্রশান্তি ও সম্প্রীতির উৎসব। এটি আত্মশুদ্ধি, ত্যাগ ও মানবিকতা চর্চার দিন। ঈদের প্রকৃত আনন্দ তখনই পূর্ণতা পায়, যখন আমরা গরিব-দুঃখীদের পাশে দাঁড়াই, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সৎ পথে চলি।