প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৩
৬ মাসের পরিকল্পিত প্রচেষ্টায় জীবন বদলে দিন

পরিচিত পরিবেশ থেকে বেরিয়ে আসা
আপনি যদি আপনার আশপাশে এমন মানুষদের দেখে থাকেন, যারা আপনাকে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে না বা যারা আপনাকে শুধু নিরাশ করে, তাহলে সেই পরিবেশ থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। বড় গাছের নিচে ছোট গাছ বেড়ে ওঠে না এবং অনেক সময় নিজের উন্নতির জন্য নতুন পরিবেশে যেতে হয়। একটি উদাহরণ নেওয়া যাকÑএকজন তরুণ উদ্যোক্তা যারা দেশের মধ্যে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে ছিলেন, একটি নতুন শহরে বা বিদেশে গিয়ে নতুন পরিবেশে আসেন এবং সেখানে তাদের ব্যবসা শুরু করেন, যা দ্রুত সফলতা লাভ করে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, নতুন পরিবেশ বা পরিস্থিতি আপনাকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেয় এবং আপনার মধ্যে সৃজনশীলতা বাড়ায়। সাময়িক পিছিয়ে যাওয়া-সফলতার জন্য প্রস্তুতি
সফলতা পেতে মাঝে মাঝে নিজেকে পিছিয়ে নিতে হয়, এমনকি পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতির জন্য সময় বের করে কিছুটা পিছু হটাও। যেমন একজন পেস বোলার যখন গতি বাড়ানোর জন্য কিছুক্ষণ পিছিয়ে যায়, তেমনি আমাদেরও কখনো কিছু সময় কাটাতে হয় নিজেদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য। উদাহরণস্বরূপ, একজন ব্যবসায়ী যখন নতুন কোনো উদ্যোগ শুরু করেন, তাকে প্রথমে অনেক সময় পরিকল্পনা করতে হয় এবং ছোট ধাপে ধাপে এগোতে হয়। সমালোচনা আসবে, তবে মনে রাখবেন, ‘ঝঁপপবংং রং ঃযব নবংঃ ৎবাবহমব.’ নির্দিষ্ট একটি স্কিল ডেভেলপ করা
আজকের যুগে প্রতিযোগিতা বেড়েছে এবং চাকরির বাজারে শুধু একটি ডিগ্রির উপর নির্ভর করে সফল হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রযুক্তি, ডিজিটাল মিডিয়া, এবং নতুন ব্যবসায়িক সুযোগগুলো প্রচুর স্কিল নির্ভর, এবং এই স্কিলগুলো অর্জন করলে আপনি সহজেই আপনার ক্যারিয়ারে অগ্রসর হতে পারবেন। স্কিল ডেভেলপমেন্ট এমন একটি শক্তিশালী কৌশল যা আপনার পেশাগত জীবনে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন আনতে পারে।
আজকের দুনিয়ায়, বিশেষ কিছু স্কিল অর্জন করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একটি স্কিল আপনার ক্যারিয়ারকে গতি দিতে পারে, এবং অনেক সময় সেই স্কিলটি আপনার জীবনের সফলতার পথে একটি সেতু হয়ে দাঁড়ায়। আসুন আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্কিল দেখে নেই, যেগুলো আপনি ৬ মাসের মধ্যে শিখে দক্ষতা অর্জন করতে পারেনÑ
ভিডিও এডিটিং : ভিডিও কনটেন্ট আজকের যুগে সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ইউটিউব, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে ভিডিও শেয়ারিং বৃদ্ধির সাথে সাথে ভিডিও এডিটিংয়ের চাহিদা বেড়েছে। আপনি যদি ভিডিও এডিটিং শিখে দক্ষ হন, তাহলে আপনি একজন প্রফেশনাল ভিডিও এডিটর হিসেবে কাজ করতে পারেন, কিংবা নিজেই ইউটিউব চ্যানেল খুলে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। উদাহরণ : একজন তরুণ ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটর প্রথমদিকে ভিডিও এডিটিংয়ের মৌলিক ধারণা শিখে ভিডিও তৈরি শুরু করেন। ধীরে ধীরে তাদের চ্যানেল জনপ্রিয় হয় এবং তারা বিজ্ঞাপন, স্পনসরশিপ, এবং অন্যান্য উপার্জনমূলক সুযোগ থেকে আয় করতে শুরু করেন।
গ্রাফিক ডিজাইন : গ্রাফিক ডিজাইন একটি অপরিহার্য স্কিল, বিশেষ করে ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন এবং ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে। ভাল গ্রাফিক ডিজাইনার হতে চাইলে আপনাকে বিভিন্ন সফটওয়্যার, যেমনÑঅ্যাডোবি ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর বা ক্যানভা ব্যবহার করতে জানতে হবে। উদাহরণ : একটি ছোট ব্যবসা তাদের ব্র্যান্ডের জন্য একটি লোগো তৈরি করতে চায়। একজন দক্ষ গ্রাফিক ডিজাইনার, যিনি ডিজাইন সফটওয়্যার সম্পর্কে ভালো জানেন, তাদের প্রফেশনাল লোগো ডিজাইন করতে পারে এবং কোম্পানির ব্র্যান্ডিংকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করতে পারে।
কোডিং : কোডিং একটি অত্যন্ত শক্তিশালী স্কিল যা আপনাকে বিভিন্ন সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট, এবং অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে সক্ষম করে। পাইটন, জাভাস্ক্রিপ্ট, এবং সি++ ইত্যাদি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করলে আপনি ডেভেলপমেন্ট ফিল্ডে ভালো কাজ পেতে পারেন। উদাহরণ : একজন তরুণ কোডার প্রথমে ঐঞগখ, ঈঝঝ এবং জাভাস্ক্রিপ্ট শিখে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে শিখে এবং পরে বিভিন্ন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্টে কাজ শুরু করেন। কয়েক মাসের মধ্যে তিনি একটি প্রফেশনাল ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
ইউটিউবিং : ইউটিউবিং একটি জনপ্রিয় ক্যারিয়ার পথ হয়ে উঠেছে। আপনি যদি কনটেন্ট ক্রিয়েট করতে পছন্দ করেন, তবে ইউটিউব একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম। আপনি যদি ৬ মাস সময় নিয়ে ইউটিউব ভিডিও তৈরি এবং কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি শিখেন, তাহলে আপনি নিজের ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করতে পারেন। উদাহরণ : একজন ইউটিউবার শুরুতে শখের মতো ভিডিও আপলোড করতেন, কিন্তু পরবর্তীতে যখন তিনি ঝঊঙ, ভিডিও এডিটিং এবং অডিয়েন্স এনগেজমেন্টে দক্ষতা অর্জন করেন, তার চ্যানেল দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং তিনি স্পনসরশিপ থেকে আয় করতে শুরু করেন।
কন্টেন্ট রাইটিং : বর্তমানে কন্টেন্ট রাইটিংয়ের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। ব্লগ, ওয়েবসাইট কনটেন্ট, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট এবং কপিরাইটিংয়ের জন্য কন্টেন্ট রাইটারদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। আপনি যদি ভালো লেখক হতে চান, তবে নিয়মিত অনুশীলন ও বিভিন্ন লেখার কৌশল শিখে এই স্কিলটি ডেভেলপ করতে পারেন। উদাহরণ : একজন কন্টেন্ট রাইটার প্রথমে ছোট ব্লগ পোস্ট লিখতেন এবং ধীরে ধীরে দক্ষতার সঙ্গে বড় বড় কনটেন্ট তৈরি করতে শুরু করেন। তার লেখা একাধিক ওয়েবসাইট এবং কোম্পানির জন্য ব্যবহৃত হতে থাকে এবং তিনি ফ্রিল্যান্সিং অথবা পূর্ণকালীন রাইটিং চাকরি শুরু করেন।
রান্নাবান্না : রান্নাবান্না এমন একটি স্কিল যা অনেকেই শখ হিসেবে শুরু করে কিন্তু পরে এটি একটি লাভজনক ক্যারিয়ারে পরিণত হয়। আপনি যদি রান্নায় দক্ষ হন, তবে আপনি রেস্টুরেন্ট, ক্যাটারিং ব্যবসা, কিংবা ইউটিউব চ্যানেল চালিয়ে বড় সাফল্য অর্জন করতে পারেন। উদাহরণ : একজন শেফ প্রথমে শখের মতো রান্না করতেন এবং তারপর একটি ক্যাটারিং সার্ভিস চালু করেন, যার মাধ্যমে তিনি একটি সফল ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন এবং তার রান্নার দক্ষতা বিক্রি করতে শুরু করেন।
এটি স্পষ্ট যে, আজকের যুগে শুধুমাত্র একটি ডিগ্রি অর্জন করে সফল হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু যদি আপনি একটি নির্দিষ্ট স্কিলে দক্ষতা অর্জন করেন, তাহলে সেই স্কিল আপনাকে আপনার ক্যারিয়ারে সফল হতে সাহায্য করবে। শুধু ৬ মাস কঠোর পরিশ্রম এবং অনুশীলন করলে আপনি সেই স্কিলটি অর্জন করতে পারবেন এবং আপনার জীবনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারবেন।
একজন মেন্টর খুঁজে নেওয়া
সফলতার পথে একজন অভিজ্ঞ মেন্টরের গাইডলাইন নেওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অভিজ্ঞ মেন্টর আপনাকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারেন। আপনি বিভিন্ন বই পড়তে পারেন, কোর্স করতে পারেন, এবং সফল ব্যক্তিদের জীবনের গল্প শিখতে পারেন। যেমনÑবিল গেটস, স্টিভ জবস, বা এলন মাস্কের মতো সফল ব্যক্তিরা সবসময় মেন্টরশিপের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন।
অর্থের সঠিক ব্যবহার ও ভ্রমণের অভিজ্ঞতা
অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে সঞ্চয় করুন এবং সেই টাকা দিয়ে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করুন। এটি আপনার আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বাড়াবে এবং নতুন নতুন অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ তৈরি করবে। উদাহরণ হিসেবে, একজন তরুণ যিনি নিজেকে উন্নত করতে চান, তিনি সঞ্চিত অর্থ দিয়ে ইউরোপ ভ্রমণ করেন, যেখানে তাকে অনেক কিছু শেখার এবং নতুন সুযোগ পেতে সহায়তা করেছে।
প্রোডাক্টিভ মানুষের সংস্পর্শে থাকা
এমন মানুষদের সাথে সময় কাটান যারা পরিশ্রমী, উদ্যমী এবং সৎ। যারা আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে এবং যাদের কাছ থেকে আপনি শিখতে পারবেন। এভাবে আপনি তাদের অভ্যাস, চিন্তাধারা এবং কাজের মনোভাব নিজের জীবনে প্রয়োগ করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি সফল একজন উদ্যোক্তার সাথে কাজ করেন, তাহলে তার কাজের ধরণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সমস্যা সমাধানের কৌশল শিখতে পারবেন।
নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া
সুস্থ শরীর মানেই সুস্থ মন। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুন, জিমে যান, অথবা বাড়িতে শারীরিক কসরত করুন। মনের স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে কোনো পরিকল্পনাও সফল হবে না। উদাহরণস্বরূপ, একজন সফল উদ্যোক্তা যিনি স্বাস্থ্যবান, সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রেখে নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তার মনোযোগ এবং কর্মক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়।
সফল ব্যক্তিদের অভ্যাস অনুসরণ করা
এলন মাস্ক, ওয়ারেন বাফেট, স্টিভ জবস, বিল গেটসÑএই সব সফল ব্যক্তিরা তাদের জীবনে অনেক গুরত্বপূর্ণ অভ্যাস অনুসরণ করতেন, যা তাদের সফল হতে সাহায্য করেছে। এলন মাস্ক যেমন ১২-১৬ ঘণ্টা কাজ করেন, স্টিভ জবস যেভাবে ফোকাসড জীবন ধারণ করতেন, ওয়ারেন বাফেট যেমন প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা বই পড়তেনÑএই সব অভ্যাস আপনিও অনুসরণ করতে পারেন।
গুরুত্বপূর্ণ বই পড়া ও গবেষণা করা
সফলতা অর্জন করতে চাইলে কিছু বই পড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেগুলো আপনাকে নতুন ধারণা ও সফলতার কৌশল শেখাবে। এই বইগুলো আপনাকে দক্ষতা বৃদ্ধি, সময় ব্যবস্থাপনা, এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কৌশল সম্পর্কে জানাবে।নিচে কিছু বইয়ের তালিকা দেওয়া হলো :Ñ
নিঃসন্দেহে! এখানে আরও কিছু বই রয়েছে যা আপনাকে সাফল্য অর্জনের পথে সহায়তা করতে পারে :
The Four-Hour Workweek-Timothy Ferriss : এই বইটি সফলতার পেছনে সঠিক সুযোগ, পরিশ্রম এবং সময়ের কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা নিয়ে আলোচনা করে। গ্লাডওয়েল দেখিয়েছেন, সফল মানুষরা শুধু প্রতিভার কারণে সফল হয়নি, বরং তাদের সংগ্রাম এবং সুযোগের সম্মিলন ছিল।Drive : The Surprising Truth About What Motivates Us-Daniel H. Pink : এই বইটি সময় ব্যবস্থাপনা এবং জীবনধারার বিষয়ে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে। Pink দেখিয়েছেন কীভাবে আপনি আপনার কাজের সময় কমিয়ে এবং আরও দক্ষভাবে কাজ করে আপনার জীবনকে সহজ এবং আনন্দময় করতে পারেন।
Drive : The Surprising Truth About What Motivates Us-Daniel H. Pink : এই বইটি মনোবিজ্ঞান এবং পরিসংখ্যানের মাধ্যমে আমাদের প্রেরণার প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে। চরহশ বলেন, আমাদের প্রেরণা শুধু আর্থিক লাভ বা পুরস্কারের মাধ্যমে নয়, বরং আমাদের কাজের প্রতি স্বাধীনতা, উদ্দেশ্য এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আসা উচিত।
Dare to Lead-Brené Brown : এই বইটি নেতৃত্ব এবং দলের সঙ্গে কাজ করার দক্ষতা নিয়ে। Brené Brown লিডারশিপের মানবিক দিকগুলো যেমন দুর্বলতা, সহানুভূতি এবং সাহস নিয়ে আলোচনা করেছেন। এটি একজন নেতার জন্য প্রয়োজনীয় গুণাবলির ওপর ফোকাস করে। The Lean Startup-Eric Ries : যারা ব্যবসা শুরু করতে চান, তাদের জন্য একটি অপরিহার্য বই। Lean Startup পদ্ধতির মাধ্যমে কীভাবে আপনি দ্রুত একটি ব্যবসা শুরু করতে পারেন এবং সফলতার দিকে নিয়ে যেতে পারেন, তা সম্পর্কে এই বইটি পরামর্শ দেয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো, কম খরচে দ্রুত পণ্য বাজারে নিয়ে আসা এবং গ্রাহকের প্রতিক্রিয়া থেকে শিখে আরও উন্নত পণ্য তৈরি করা।
The Miracle Morning-Hal Elrod : এই বইটি সকালের সময় ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করে। Elrod বলেন, সকালের সময়টা আপনি যদি কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারেন, তবে এটি আপনার সারাদিনের কর্মক্ষমতা এবং মনোভাবকে বাড়িয়ে দিতে পারে। এটি সফল ব্যক্তিদের একটি সাধারণ অভ্যাস।
You Are a Badass-Jen Sincero : এই বইটি আত্মবিশ্বাস এবং নিজের ওপর বিশ্বাস রাখার গুরুত্ব নিয়ে। ঔবহ ঝরহপবৎড় আপনাকে নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং উদ্দীপনা প্রদান করবে, যা আপনাকে জীবনের সব ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনে সাহায্য করবে।
The 5 AM Club-Robin Sharma : এই বইটি সকালে ৫টায় ওঠার সুবিধা নিয়ে এবং এই অভ্যাস কীভাবে আপনার জীবনে সফলতা নিয়ে আসতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করে। ঝযধৎসধ বিশ্বাস করেন, সকালে আগেই উঠলে আপনি নিজের জন্য সময় পাবেন, যা আপনার দৃষ্টিভঙ্গি এবং কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
Mindset : The New Psychology of Success -Carol S. Dweck : Carol Dweck এই বইয়ে দেখান যে, আমাদের মনোভাব বা ‘মাইন্ডসেট’ কীভাবে আমাদের সফলতা বা ব্যর্থতার দিকে পরিচালিত করে। তিনি দুটি প্রকারের মাইন্ডসেট বিশ্লেষণ করেছেন : ‘ফিক্সড মাইন্ডসেট’ এবং ‘গ্রোথ মাইন্ডসেট’। গ্রোথ মাইন্ডসেটধারী মানুষ যেকোনো পরিস্থিতিতেই উন্নতি সাধন করে।
Atomic Habits-James Clear : এই বইটি ছোট অভ্যাসের মাধ্যমে বড় পরিবর্তন আনার কৌশল শিখায়। এটি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করে কীভাবে ছোট কিন্তু ধারাবাহিক পরিবর্তন আপনার জীবনে বড় সফলতা আনতে পারে। লেখক বলছেন, অভ্যাস পরিবর্তন করে যে কোনো লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।
Deep Work-Cal Newpor : এই বইটি গভীর মনোযোগ দিয়ে কাজ করার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করে। এটি শিখায় কীভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একাগ্রভাবে কাজ করে বড় সাফল্য অর্জন করা যায়। লেখক বলেন, আধুনিক বিশ্বে মনোযোগের অভাব, কিন্তু যারা গভীর মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারে, তারাই সত্যিকারভাবে সফল।The 7 Habits of Highly Effective People-Stephen Covey : এটি একটি ক্লাসিক বই, যা সফল ব্যক্তিদের ৭টি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস সম্পর্কে আলোচনা করে। এই বইটি আপনাকে নিজের জীবন, কাজ এবং সম্পর্ক আরও ভালোভাবে পরিচালনা করতে সহায়তা করবে। লেখক ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করেন, কীভাবে ব্যক্তিগত এবং পেশাদার জীবনে উন্নতি আনা সম্ভব।
Think and Grow Rich-Napoleon Hill : এই বইটি সম্পদের ওপর ফোকাস করে এবং কীভাবে আপনার চিন্তা এবং মনোভাবের মাধ্যমে আপনি অর্থ এবং সফলতা অর্জন করতে পারেন, তা নিয়ে আলোচনা করে। এটি অন্যতম বিখ্যাত বই, যা শতাব্দীজুড়ে অনেক সফল উদ্যোক্তা দ্বারা পড়া হয়েছে। লেখক বিশ্বাস করেন, চিন্তা এবং বিশ্বাসের শক্তি দিয়ে সবকিছু অর্জন করা সম্ভব।
The Power of Now-Eckhart Tolle : এই বইটি মনোবিজ্ঞান এবং আত্মবিশ্বাসের দিকে ফোকাস করে এবং কীভাবে আপনি এখনের মুহূর্তে থাকলে আপনার জীবনে সফলতা আসবে, তা নিয়ে আলোচনা করে। লেখক বলেন, অতীত বা ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা না করে, যদি আপনি বর্তমান মুহূর্তে থাকেন, তবে আপনার জীবন ও কাজের মান অনেক উন্নত হবে।
Grit: The Power of Passion and Perseverance-Angela Duckworth : এই বইটি সফলতা অর্জনে ধৈর্য এবং স্থিরতা (grit)-এর গুরুত্ব তুলে ধরে। উঁপশড়িৎঃয বলেন, প্রতিভার চেয়ে যে গুণটি দীর্ঘমেয়াদী সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, নিজের লক্ষ্য নিয়ে একাগ্রতা এবং অবিচলতা। এই বইগুলো আপনাকে সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কৌশল, মনোভাব এবং ধারণা শিখাবে যা আপনার জীবন ও ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে কাজে লাগবে।
ধৈর্য ও একাগ্রতা ধরে রাখা সফলতা অর্জন একটি ধীরে চলা প্রক্রিয়া। ধৈর্য ধরে ছোট ছোট লক্ষ্য স্থির করুন এবং ধাপে ধাপে এগিয়ে যান। আপনি যদি একাগ্রভাবে কাজ করেন, তাহলে সফলতা আসবেই। উদাহরণস্বরূপ, একজন উদ্যোক্তা প্রথমদিকে ছোট ছোট সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে তার ব্যবসার স্কেল বাড়ান, যেটা পরে বড় সফলতায় রূপ নেয়।
শেষ কথাÑসফলতা রাতারাতি আসে না, তবে যদি আপনি সঠিক পরিকল্পনা, ধৈর্য এবং একাগ্রতার সাথে কাজ করেন, তাহলে একদিন অবশ্যই সফল হবেন। ৬ মাসে আপনি আপনার জীবন বদলে দিতে পারেন, যদি আপনি এই কৌশলগুলো অনুসরণ করেন এবং প্রতিদিন কাজ করেন।