প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৫
সৈকতের হাইকিং অভিযান

সৈকত সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠতেই তার মা তাকে ঘুম থেকে ডাকলো। তখন সৈকত রাগান্বিত হয়ে বলল, “এত সকালে ডাকছো কেন?” তার মা হাসি দিয়ে বললেন, “তুমি কি ভুলে গেছো? আজকে তোমার হাইকিং এ যেতে হবে!” সৈকত কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল, তারপর বলল, “আরে, আমি তো ভুলেই গেছিলাম!” তারপর সে তাড়াতাড়ি উঠে পড়লো এবং মাকে বললো, “দেরি হয়ে গিয়েছে, তাড়াতাড়ি নাস্তা দাও।” মা বললেন, “দিচ্ছি তো।” কিছুক্ষণ পরই সৈকত নাস্তা নিয়ে হাজির হল তার আম্মু।
নাস্তা খাওয়ার পর সৈকত দ্রুত হাইকিং এ যাওয়ার প্রস্তুতি নিল। তার হাইকিং ছিল সকাল ৭টায়, আর শুরু হবে স্কুল থেকে। সৈকত তার স্কুল, হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সাড়ে ছয়টার মধ্যে পৌঁছাল। সেখানে প্রথমে সে তার বন্ধুদের সাথে দেখা করল। এরপর তাদের দলনেতা তাদের একটি ক্যাপ, বেসলাইট এবং আইডি কার্ড দিল। সঙ্গে একটি ফুড টোকেনও দেওয়া হলো। সকালের নাস্তা শেষ করার পর, হাইকিং এর প্রস্তুতি নিয়ে একটি ছোট ক্লাস হল।
এবার পুরো টিম একত্রে সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে, তাদের হাতে একটি কাগজ দেওয়া হলো, যেটি ফিল্ড বুক নামে পরিচিত ছিল। এর সঙ্গে একটি কম্পাস এবং দুটি সাদা কাগজও দেওয়া হলো। তারা ফিল্ড বুক দেখে তাদের গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করলো। তাদের পথের নির্দেশনা ফিল্ড বুকের মধ্যে ছিল, কিন্তু কোথায় যেতে হবে তা বলা হয়নি, কেবল কত ডিগ্রি ও কতো কদম যেতে হবে লেখা ছিল। প্রায় ছয় কিলোমিটার হাঁটার পর, তারা তাদের গন্তব্যে পৌঁছালো। গন্তব্য ছিল একটি মনোরম জায়গা, চারদিকে নদী বেষ্টিত। সেখানে তারা অনেক খেলা খেললো, বেশ আনন্দ পেল।
কিছু সময় পরে, তারা আবার দলবদ্ধভাবে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। দিনটি ছিল শুক্রবার, এবং তারা জুমার নামাজের আগেই স্কুলে ফিরে এলো। এরপর সবাই মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়লো। জুমার নামাজ শেষে, তারা আবার ফুড টোকেন ব্যবহার করে দুপুরের খাবার খেলো। সৈকত ছিল খুব খুশি, কারণ এটা তার প্রথম হাইকিং ছিল।
স্কুলে ফিরে, একটি ছোট অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলো, যেখানে হাইকিং-এ প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান অধিকারীদের জন্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন এডিসি মহোদয়। সৈকত যদিও কোনো পুরস্কার পাননি, তবুও সে মন খারাপ করলো না। কারণ অনুষ্ঠান শেষে সেখানে গান বাজনার পরিবেশন ছিল। সে গান শুনে বেশ আনন্দিত হলো এবং সেখানে অংশগ্রহণ করল।
অনুষ্ঠান শেষে, সৈকত বাসায় ফিরে তার মাকে সবকিছু খুলে বলল। সে সেদিন অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল, তাই অল্প কিছু নাস্তা খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লো। যেহেতু এটি ছিল তার জীবনের প্রথম হাইকিং, সে এর অভিজ্ঞতা চিরকাল মনে রাখবে। হাইকিংয়ে যা কিছু পেয়েছে, তা সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখল তার বাসায়।