প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০২
ডিজিটাল ভূত
(পূর্ব প্রকাশিতের পর) রাত বারটা। ঘরে হালকা আলো। মামার পাশে অনিক ঘুমিয়ে পড়ছে। হঠাৎ করেই ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখতে থাকে মামার আনা টিয়া পাখিটা হঠাৎ করেই সবুজ ভূতে রূপ নিয়েছে।
একটা ঘন বাগান। ভূতটা হঁাটতে হঁাটতে অনিকের কাছে এলো। অনিক ভয়ে অস্থির। হঁাটু ভেঙ্গে বসে মুখটা হাত দিয়ে দুই হঁাটুর মাঝে লুকিয়ে ফেলে। ভূতটা অনিকের কাছে এসে বলে :
ভূত : হাই অনিক, আসো আমরা খেলা করি।
অনিক ভয়ে ভয়ে বলে : না, আমি তোমার সাথে খেলবো না?
ভূত : ভয় পাচ্ছো কেন বাছা? আমি তো ডিজিটাল ভূত! আর তুমি তো ডিজিটাল মানব।
অনিক : না, আমি ডিজিটাল মানব না, আমি অনিক। ছোট মানুষ। আমাকে ভয় দেখাবা না। আমি ভয় পাই।
ভূত : আরে তুমি এখন আত্মা। আসো, আমরা ঘুরে বেড়াই বন-বাদাড়ে।
অনিক : না তুমি আমাকে মেরে ফেলবে! আমি যাবো না, যাবো না।
এ সময় অনিক চিৎকার করে উঠে। তার চিৎকারে সুজন ঘুম থেকে উঠে লাইট জ্বালিয়ে দেয়।
সুজন : কিরে অনিক কি হয়েছে? স্বপ্ন দেখছিস?
মামার কথায় অনিকের ঘুম ভাঙ্গে। তারপর চোখ কচলায়। কিছুই বলতে পারে না। ফ্যালফ্যালভাবে মামার দিকে তাকিয়ে থাকে।
অনিক অস্পষ্টভাবে বলে : হ, অহ।
মামা : স্বপ্নে কী দেখছিলি?
অনিক : মামা ডিজিটাল ভূত!
মামা : ও। বুঝতে পারছি। দিনের বেলায় সারাদিন মোবাইলে ভূতের ফিল্ম দেখিস, আর রাতে ডিজিটাল ভূত দেখিস। তাই না? আচ্ছা ঘুমিয়ে পড়। ঘুমিয়ে পড়।
মামার কথায় অনিক মাথায় সায় দিয়ে আস্তে আস্তে আবারও ঘুমিয়ে পড়ে।
বাড়ির কাছাকাছি রাস্তার পাশে অনিক, স্বপ্নীল, তাসনীম, তানজীম বসে আছে। অনিক ও স্বপ্নীলের হাতে মোবাইল। দু’জন গেম খেলছে। তাসনীম ও তানজীম পাশে দঁাড়িয়ে দঁাড়িয়ে দেখছে।
মোবাইলে গেম খেলতে খেলতে অনিক বললো: ওয়াও দারুণ। দারুণ। আমি ১০০ পয়েন্ট পাইছি। স্বপ্লীলের দিকে তাকিয়ে বললো, তুই কত পাইছিস রে?
স্বপ্নীলও মোবাইলে খেলতে খেলতে উত্তর দেয় : আরে রাখ। খেইল্যা লই। পরে কমু।
এবার তাসনীম স্বপ্নীলকে বলে : ভাইয়া আমারে খেলতে দে-না।
স্বপ্নীল : আমি খেইল্যা লই। পরে দিমু তোরে।
এ সময় তাসনীম স্বপ্নীলের মোবাইল টান দিয়ে বলে : আমারে দে। আমি খেলমু।
স্বপ্নীল ও তাসনীম দু’জন মোবাইলটা টানাটানি করতে করতে হাত থেকে পড়ে গ্লাস ভেঙ্গে যায়।
অনিক ভেঙ্গে যাওয়া মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখতে দেখতে বললো : নে সেরেছে, গ্লাসটা ভেঙ্গে গেছে।
এ কথায় তাসনীম, তানজীম ও স্বপ্নীল তিনজনই চমকে যায়।
তারপর তিনজনই বলে উঠে : ভেঙ্গে গেছে?
অনিক : হ, ভাইঙ্গা গেছে। এবার তোদের মায় তোদের বাপরে বিদেশে ভিডিও কলে কথা বলবে কি করে?
এবার তাসনীম, তানজীম ও স্বপ্নীল তিনজনই কান্না শুরু করে দেয়।
এমন সময় তাদের কথাবার্তা শুনে তাসনীম, তানজীম ও স্বপ্নীলের মা রুমা বেগম দৌড়ে আসেন।
রুমা : কিরে, তোরা কান্না করছিস কেন?
স্বপ্নীল : দেখো মা, তাসনীম মোবাইলটা ভাইঙ্গা ফেলছে।
রুমা বেগম বিস্ফোরিত নেত্রে অনিকের হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে বললো, ‘দেহি দেহি। হায় হায়রে তোর বাপ বিদেশ থাইক্যা কথা কওয়ার জন্য এই মোবাইলটা দিছে, তোরা ভাইঙ্গা ফেললি?’
এরপর তিনি রাস্তা থেকে একটা ডাল নিয়ে তাসনীম ও স্বপ্লীলকে পেটাতে থাকে। পিটা খেয়ে দু’জনই দু’দিকে পালিয়ে যায়।
তানজিমকে কোলে নিয়ে ওর মা রুমা বেগম মনের রাগে দুঃখে ঘরের ভেতরে চলে যায়। (চলবে)
ছবি : ২৪
শেষ বয়সের চাকরি
তানজিনা আক্তার আরওয়া
আমি রমিজ আলী।জীর্ণ সির্ন দেহ লইয়া চলতাম পারিনা।কোন রহম কইরা লাঠিটার উপর ভর কইরা জীবনডা চালাই।সমাজের কতো রকমারি উন্নয়ন চক্ষে পড়ে।আমার তেমন ভালো ঘর নেই বল্লে চলে। রাস্তার মোড়ে দক্ষিণা বাতাস ভেসে আসে এমন কইরা পলিথিন টাঙানো ঘর।বিকেল বেলা বইসা বইসা বাতাস লাগাইতাছিলাম শইল্লে।দিনডায় যা গরম পড়ে কোন কইতে নাই!এমন সময় দেহি দুইডা ছেলে সাদা এট্টা ফাইল হাত লইয়া হাট্টা যাইতাছে।আর বলতাছে আজ যোয়ান বইল্লা এটিএম ব্যাংকের দারোয়ানি পাইলামনা।এটিএমের মালিকরা বলে বয়স্ক পুরুষ ব্যাক্তি খেঁাজে। আমি তঁাদের দু'জন কে ইশারা দিয়ে কাছে ডেকে সে এটিএম স্থানের ঠিকানা লইলাম।আমি যেন থাকি এর থাইক্কা নাকি ৪ মাইল দূরে এটিএম ব্যাংকের স্থান।বেলা বেশি নাই সূর্য ডুইবা যাইব যাইতে যাইতে তাই পরের দিন রওনা হমু বইলা শুইয়া রইছি।মনে মনে ভাবতেছি তাদের সাদা ফাইলে কী কাগজপত্র আছিলো তা তো জিজ্ঞেস করলামনা।পরোক্ষনে মনে হইল থাহুগ্গা তারা দু'জন তো যুবক ছিল তাই চাকুরী হয়নি,আমিতো বৃদ্ধ তাহলে আমার চাকরি হইব।আর ওরা তো বয়স্ক পুরুষ মানুষ বিচারে....
এগুলো ভাবতে ভাবতে চোখ লেগে গেল... চলে গেলাম ঘুমের শহরে ডুবে গেলাম নিদ্রায়।