প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৯
অপূর্ণতা
আকাশের বুকে ভাসমান ক্লান্ত বালুকা কণা গুলো যখন শরীর এলিয়ে দেওয়ার জন্য গহীন বনানীর সবুজ পাতা খেঁাজে, তখন ত্রিকাল সন্ধ্যা। মৃত ধুলা রাশি দু'পায়ে সরিয়ে অনবরত মৃতের সন্ধানে ব্যস্ত দুই মৃগাল। আজ ও স্মৃতির স্তরে গভীর খনন করলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে পূর্ব স্মৃতির খন্ড চিত্র।
পশ্চিমের আকাশে সূর্যের এঁকে দেওয়া সীমা রেখা যেন জানান দিতে চায়, অন্যের প্রবেশ নিষেধ। তবুও অন্যের প্রবেশ যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আপ্রাণ শুনবার চেষ্টা, সেই চাতালের বুকে অবিরাম ঘটে চলা সূর্যের বিস্ফোরণের শব্দ। উত্তেজিত শরীরটার শিরা উপশিরা ও ধমনী ফেটে বেরিয়ে আসতে চায়, উত্তপ্ত রক্ত লাভা। সেই রক্ত স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে যেতে চায়। তবে নিজেকে এভাবে মৃত্যু পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যে বড্ড বেমানান হয়ে যাবে।
আমি অন্তু। মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করে অবসর সময় পার করছি। খুব দুষ্টু মিষ্টু সময় কাটাতে লাগলো আমার। বাবা মা ভাই নিয়েই আমাদের পরিবার। খুব মধ্যবিত্ত ঘরে জন্ম আমার। তবে সুখটা ছিলো আকাশ ছেঁায়ার মতো।
আমার সেরকম কারো সাথে মেশাটা অভ্যাস ছিল না। তবে যার সাথে একবার মিশতাম সবটা দিয়ে মিশতাম। আমি খুব সাধারণত একটি মেয়ে ছিলাম। আমরা দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতাম তৃতীয় তলায় এক ভাবি থাকতো যার সাথে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক ছিল এটা উনাদের ঐ বাড়ি। একদিন ছোট খাটো একটা অনুষ্ঠান করলো ভাবি।
ফ্ল্যাটের সবাইকে দাওয়াত দিল। আমাকেও দিল। অনেক মানুষ দাওয়াত করেছে তাই আমি সেদিন একটু লজ্জা নিয়েই একটু দেরি করে গিয়েছি। যাতে করে বেশি মানুষের সম্মুখীন না হতে হয়। অনেক পুরুষ থাকবে তাই একটু আনইজি ফিল হচ্ছিল। লজ্জা নিয়ে অনেকটা সময় পর যাই গিয়ে দেখি একটা ভাইয়া ডাইনিং রুমে বসে খাচ্ছে। আমি যেতে...
ভাবি : কিরে তুই এত দেরি করলি কেন?
আমি : এমনি ভাবি।
ভাবি : দুপুর পেরিয়ে বিকেল হতে চাই না এখন আসার সময় হলো বুঝি?
আমি : আমার বাসায় একটু কাজ ছিল। (এই বলেই অন্য রুমে চলে যাই।)
ভাবি আর আমি সবার খাওয়া শেষে একসাথে বসে খাই। আমি প্রায় সময় এখানেই থাকি। কারণ ভাবি একা থাকে। ভাইয়া বাসায় থাকে না। ভাইয়া যখন আসে আমি চলে যাই। ভাইয়ার বাসায় উনাদের বাবা মা ভাই বোন ছাড়া আর কেউ আসতো না। তবে একটা ছেলে ভাইয়ের সাথে প্রায়ই আসতো। ভাইয়ের বন্ধু এবং কলিগ ও। ভাইয়ের সাথে আসা-যাওয়া করলেও আমি কখনোই কথা বলিনি। আজ প্রথম তিনি আমাকে দেখেছে।
উনার নাম তুষার ,তুষার রহমান। উনি ভাইয়ের সাথে জব করে একই কোম্পানিতে। উনি খুব শিক্ষিত এবং আমার অনেক বড় ছিল। খুব স্মার্টও ছিল। উনার কোয়ালিফিকেশন খুব ভালো , খুব স্মার্টনেস, হাই সোসাইটি বিলং করে। যার সব কিছুতেই পরিপূর্ণ। একদিন আমি বাসা থেকে বের হয়ে মার্কেটে যাচ্ছিলাম। তখনই ওনার সাথে আমার দেখা।
তুষার : হাই কেমন আছো?
আমি : আসসালামু আলাইকুম হ্যালো . আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি আপনি কেমন আছেন?
তুষার : ওয়ালাইকুম আসসালাম জি আমিও ভালো আছি।
আমি : কিছু বলবেন ভাইয়?
তুষার : না তেমন কিছু না। কোথায় যাচ্ছ তুমি?
আমি : মার্কেটে ভাইয়া।
তুষার : আচ্ছা যাও।
আমি : আসি ভাইয়া, আল্লাহ হাফেজ আসসালামু আলাইকুম।
আমার মনে হয়েছিল সেদিন সাপ ছেড়ে বঁাচলাম। আমি তড়িঘড়ি করেই চলে আসছি। এরপর থেকে দেখা হলে হাই হ্যালো হত। কিছুদিন পর তুষার ভাইয়া আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে উঠে। এখন কথাবার্তা হয় মোটামুটি। তুষার ভাইয়া অনেক বড় ছিল তাই উনাকে অনেক সম্মান করতাম। আস্তে আস্তে উনি আমাদের পরিবারের একজন হয়ে ওঠে। যাই রান্না করতাম না কেন মা ওনাকে দিয়ে খেত। যেহেতু উনি একা থাকতো তাই বাবা-মা ওনাকে খুব আদর করত। এভাবে দিন কাটতে লাগলো। বেশ ভালই কাটছে। পরিবারকে নিয়ে খুব সুখে কাটছে দিন। একদিন আমি আর ভাবি গল্প করছিলাম। কথায় কথায় বলে তুষার ভাইয়া নাকি আমাকে লাইক করে। আমি তো পুরাই অবাক। এখন আমি চাইনা প্রেমে জড়াতে। আমি চাইনা এসবে জড়িয়ে বাবা মাকে কষ্ট দিতে। আর তার থেকেও বড় কথা উনি আমার অনেক বড়।
আমি : ভাবি আমি চাইনা এসবে জড়াতে।
ভাবি : তুষার তোমার সাথে বাহিরে দেখা করতে চায়।
আমি : আমি চাই না ভাবি।
ভাবি : দেখা করে তুমি না হয় বলে দিও। তুমি চাও না তবে কথা বলো আগে।
আমি : ঠিক আছে।
ভাবির জোড়াজোড়িতে এক পর্যায়ে আমি রাজি হই। আমি, ভাবি ,আর তুষার ভাইয়া দেখা করি এক রেস্টুরেন্টে। তুষার ভাইয়া আগে চলে গিয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করে। আমরা গিয়ে দেখি তুষার ভাইয়া বসে আছে। আমরা যেতেই,,,,
তুষার : আসসালামুয়ালাইকুম প্লিজ বসুন বসুন।
ভাবি : ওয়ালাইকুম আসসালাম। কেমন আছো তুষার? কখন আসলা ?
তুষার : আলহামদুলিল্লাহ ভাবি ভাল আছি। এইতো কিছুক্ষণ হলো।
ভাবি : ও আচ্ছা আচ্ছা।
তুষার : কি খাবেন ভাবি?
ভাবি : কফি খাওয়া যায়। অন্তু তুই কি খাবি ?
আমি : আমি কিছু খাব না।
তুষার : সবার জন্য কফি অর্ডার দেই।
সবার জন্য কফি অর্ডার করে দেয়। এখন কেউ কিছুই বলছে না সব চুপচাপ। কি বলে শুরু করবে একটা কেউ বুঝতে পারছে না। তাদের সবার নীরবতা ভেঙ্গে বলে তোমরা কথা বলো আমি পাশের সিটে গিয়ে বসি।
আমি : ভাবি তুমি এখানেই থাকো না।
ভাবি : কথা বল আমি আছি।
আর কিছুই বলে না।আমরা দুজন বসে আছি। তুষার বা আমি কেউ কিছুই বলছি না।অনেকটা সময় পাড়ি দিয়ে তুষার নিরবতা ভেঙে বলে ওঠে...
তুষার : তোমার শরীর ভালো?
আমি : জী আপনার।
তুষার : জী ভালো। এখন ইন্টারে পড়ো না তুমি?
আমি : যে এবার ফার্স্ট ইয়ারে পরীক্ষা দিব।
তুষার : ভাবি তো সব বলেছে তোমাকে তাই না।
আমি : জি বলেছে।
তুষার : আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। তুমি যেমনটা চাও সেভাবেই হবে। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। আমি চাই যদি তুমি চাও ,আমাদের পরিবার থেকে আমাদের বিয়ে আয়োজন করবে। আমি এত ঘুরিয়ে পেচিয়ে কথা বলতে পারি না তাই সরাসরি বললাম তোমাকে।
আমি : দেখুন আমি এখন এসব চাই না।
তুষার : কেন চাও না ?বিয়ে কি করবে না তুমি?
আমি : করব এভাবে না।
তুষার : কেন আমাকে পছন্দ হয়নি?
আমি : আসলে আপনার সাথে আমার যায় না।
তুষার : কেন যাবেনা? আমাকে কি তোমার পছন্দ হয় না? আমি কি দেখতে খারাপ? নাকি জামাই হিসেবে আমি যোগ্য নই? কোনটা?
আমি : তেমনটা নয়।
তুষার : তাহলে কি সমস্যা? জানো তোমাকে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম সেদিনই তোমার প্রেমে পড়ে গেছি। তোমাকে দেখার জন্য আমি ওই বাড়িতে বারবার যেতাম। তোমাকে দেখার জন্য তোমাদের পাশে ফ্লাটে বাসা ভাড়া নেই। একটা বছর ধরে তোমার পেছনে ঘুরতেছি।আর তুমি আমাকে রিজেক্ট কেন করছ ? আমি সেটাই বুঝতেছিনা বলো আমাকে কি করলে তুমি আমাকে মেনে নেবে?
আমি : দেখুন আমি খুব সাধারণ ঘরের একটি মেয়ে। আপনি তো দেখেছেন আমার পরিবার। আমরা গরীব মানুষ। আমার বাবা অত টাকা নেই।আমরা শিক্ষিত পরিবার ও নই। আমার কোয়ালিফিকেশন ওত ভালো নয়। আপনার সাথে আমার যায় না।
তুষার : দেখো সব মানুষের সব থাকে না। আমার তোমাকে চাই। তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে। সে সব দিয়ে আমি কি করব? প্লিজ রিজেক্ট করো না। তোমাকে যে আমি বড্ড ভালোবাসি। এটা বলো আমি কি ছেলে হিসেবে খারাপ ?
আমি : আপনি খারাপ না। আপনাকে আমার পছন্দ হয়েছে কিন্তু...
তুষার : আর কোন কিন্তু নয়। আমরা যা করার পরিবার থেকে করব।
আমি : আচ্ছা তাহলে আমি রাজি।
তুষার : আই লাভ ইউ সো মাচ মাই ডিয়ার।
আমি সেদিন খুব খুশি হয়েছিলাম। এভাবে দিন কাটতে লাগলো। দু পরিবারকে জানালাম দু পরিবার রাজি হয়েছে। সবাআ কথাবার্তা বলে সব ঠিক করে রাখল। আমি আর তুষারের ভালোবাসা, সম্মান, মায়া বাড়তে লাগল। আমরা প্রায়ই বাহিরে যেতাম রেস্টুরেন্টে খেতাম। খুব সুখে ছিলাম দুজনে। হঠাৎ একদিন আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়লাম। আমাকে হসপিটালে নেওয়া হল। অনেকগুলো টেস্ট করানো হলো। রিপোর্টে ইনফেকশন হয়েছে লিভারে। তখন আমরা সবাই খুব ভয় পেয়ে গেলাম। আমার বিয়ের ডেট পিছানো হলো। বলেছিল আমার ইন্টারমিডিয়েট কমপ্লিট হলেই বিয়ে হবে আমাদের। আমার কি যে আনন্দ। আমাদের সম্পর্কটা গভীর থেকে গভীর হতে শুরু করলো। তুষার আমাকে অক্সিজেন ,বউ বলে ডাকতো। আমার খুব ভালো লাগতো। আমাদের সম্পর্কটা এভাবেই চলতে লাগল। সাত মাস পর শুরু হয় আমার জীবনে চরম কঠিন সময়। আমি ভাবতেই পারিনি এভাবে সবকিছু বদলে যাবে। বুঝার আগেই সব শেষ করে দিল।
তুষার আমাকে ইগনোর করতে লাগলো। কথা বলা আস্তে আস্তে কমিয়ে দিতে লাগলো। আমি ম্যাসেজ দিলে মেসেজ করতো নয় তো দিত না। নিজে থেকে এখন আর কল দেয় না। আস্তে আস্তে অবহেলার পাত্রী হয়ে উঠলাম। আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। ও কেমন যেন অন্যরকম হয়ে উঠলো। আস্তে আস্তে অচেনা ব্যক্তির মত হতে লাগলো। আমার খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ঠিকমতো খেতে পারি না শুধু কান্না পায়। রাতে ঘুম হয় না তিনটা বা চারটা বেজে যায় ঘুমাতে ঘুমাতে। এখন আর সে আমাকে কেয়ার করে না। নিজেকে পাগলের মত মনে হতে লাগলো।
একদিন হঠাৎ তুষার আমাকে নক দেয়। আমি তো খুব খুশি। তবে খুশিটা সাময়িকের জন্য ছিল। তুষার বলে আমাদের বিয়েটা ক্যান্সেল করে দিতে হবে। আমাদের বিয়ে হবে না। বিকজ তার পরিবার রাজি না। আমি সেদিন খুব কান্না করেছিলাম। তাকে কিছু বলতে পারি নাই নিরবে শুধু কেঁদেছিলাম। আমি আমার বাবা-মাকে কি বলবো? আমার দিকে তাকিয়ে এই বিয়েতে রাজি হয়েছিল আর এখন সেই বিয়েটাই ক্যান্সেল হয়ে গেল। কান্না করতে করতে সেদিন আমার শরীর খুব খারাপ হয়ে যায়। আমি তুষারের পায়ে ধরি কেন এমনটা করতেছ। কি অন্যায় করেছি আমি? আমি সরি। তাও এমনটা করো না। আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ। পারবো না তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না। কিন্তু তুষার আমার কোন কথা আজ যেন আর তার কানেই তুলছে না। সে আমাকে ছেড়ে দিয়ে বঁাচতে চাই সে বলে তার পরিবার তাকে একটা এডুকেটেড পরিবারে কাছে বিয়ে দেবে। তাহলে আমার কি হবে? আমি তো আগেই বলেছিলাম।তাহলে তুমি কেন আমাকে এভাবে ঠকালে?
তার সাথে আমার কথা বলাতে সে এখন খুব বিরক্ত ফিল করিতেছিল। সে আমাকে এই প্রথম ধমক দিল। আমি চুপ হয়ে গেলাম আর কিছুই বলার সাহস পেলাম না। সকালে উপরের ভাবীর কাছে খবর দিয়েছে বিয়েটা সে করবে না। আর আমি যেন কোন ঝামেলা না করি। আমি একটু বাহিরে গিয়েছিলাম বাসায় এসে দেখি বাবা-মা মনমরা হয়ে আছে। জিজ্ঞেস করতেই মা আমাকে অনেক ধোকা দেয় কেন গিয়েছিলাম প্রেম করতে? কেন এভাবে তাদের মান-সম্মান নষ্ট করলাম? কেন করলাম তাদের মানসম্মান নষ্ট? উনারা সব ক্যান্সেল করে দিয়েছে। বিয়ে হবে না তোর। ওই পরিবারের কাছে তোর বিয়ে হবে না। আমি সেদিন এত কষ্ট পেয়েছিলাম যে, আমি রুমে গিয়ে ১৮ টা পেন কিনার খাই। আরো কষ্ট রেখেছিল। আলহামদুলিল্লাহ সেদিন বেঁচে গিয়েছিলাম। আমি আস্তে আস্তে মানসিক অসুস্থ হতে লাগলাম। অনেকদিন অসুস্থ ছিলাম। ডাক্তার দেখানো হয় আস্তে আস্তে সুস্থ হই। কিন্তু ওকে কিছুতেই ভুলতে পারিনি।
সুস্থ হয়ে আবার তাকে নক দেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু ওসব কিছু থেকে ব্লক করে দেয় আমাকে। উপরে ভাবির থেকে খেঁাজখবর নিতাম। নতুন সিম নিয়েছে ভাবির থেকে সেটাও নিলাম। তাকে নক দিলাম। আজ সাড়ে দুই বছর পর তাকে আবার নক করলাম। কিন্তু আজকে খুব স্বাভাবিকভাবে কথা বললো। মনে হচ্ছে কথা বলা দরকার তাই কথা বলছে। আমাদের সম্পর্ক থাকাকালীন একটা কথা বলেছিলাম। যেদিন তুমি আমাকে খুব বিরক্ত মনে করবে, তারপর থেকে আমি তোমাকে আর কখনো বিরক্ত করব না। যেভাবেই হোক তোমার জীবন থেকে আমি সরবোই সরবো। তোমাকে মুক্তি দেবোই দেবো। আজ সে আমাকে বিরক্ত মনে করছে। দুদিন কথা বললাম। জানার চেষ্টা করলাম। কেন এমনটা করলে? তবে সে সেদিন কিছুই বলল না। তারপর থেকে তাকে আর নক দিইনি। আমি একদম চুপচাপ হয়ে গেলাম। তাকে পাওয়ার জন্য যা যা করার আমি তাই তাই করেছিলাম। আমি অসুস্থ হওয়ার পরেও বাবা-মার পায়ে ধরেছি আবার বিয়ের কথা বলার জন্য। বাবা-মা আবার গিয়েছিল কিন্তু উনারা আমার বাবা মাকে অপমান করে বের করে দিয়েছিল। আমি ওর জন্য সব করেছি সব। ওকে হালাল করে পাওয়ার জন্য যা যা দরকার যেভাবে আল্লাহ খুশি হবেন আমি তাই তাই করা শুরু করলাম। রোজা নামাজ পর্দা করা সব সব। চৌদ্দপুরুষ ব্যতীত আমি কারো সামনে না যাওয়া। তবুও তাকে পেলাম কই হয়তো আমার ভাগ্যেও ছিল না সে। তাহলে আমার জীবনে আর অপেক্ষায় শেষ হতে লাগলো। আমি জানার চেষ্টা করলাম কেন আমাকে আমার পরিবারকে এত অপমান করে ছাড়লো? কেন আমাকে এভাবে না বলে সব ক্যানসেল করে দিল? কেন আমার ডেট পড়ার পরও সব পেছানো হলো? আর তারপরেই কেন সব বাতিল হল? পরে জানতে পারি যে...
ও একটা মেয়ের সাথে ১২ বছর প্রেম করে তো। তারপর বিয়েও করে। মেয়ের পরিবার রাজি ছিল না অনেক ঝামেলা করে। মেয়ের বাবা ভাই মেয়েকে নিয়ে গিয়ে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। যা তুষারের পরিবার অনেক কষ্ট পায়। এবং তুষারকে তারাই দেখে শুনে বিয়ে করাবে। কিভাবে বিয়ে দেবে না। প্রেম করে বিয়ে করা এটা তারা মেনে নিবে না। তাতে তার ছেলেকে প্রেমের বিয়েতে আবদ্ধ করতে চায় না। আর হয়তোবা তুষারের লোক অনেক না বলা কথা ছিল এখানে। যা সে কাউকে বলতে পারছি না কাউকেই না। যার কারণে হয়তো সে এভাবে ছেড়ে চলে গেছে আমাকে। কিছু না বলে। হয়তো সে কাউকেই বলতে পারতো না কথাগুলো যেটা তার মনের কথা। তাই হয়তো সে এত চুপ হয়ে গিয়েছিল। আমি জানি এবং মানিও তার কোন দোষ নাই। তবে একটাই আফসোস আমার হয়েছিল কেন ছাড়লো আমায় এই একটাই প্রশ্ন আমাকে এখনো কঁাদায়। আমাদের এত সুন্দর ভালোবাসা অপূর্ণতাই থেকে গেল।