সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৪:৫৮

খুন

তানজিনা তালুকদার
খুন

দুইতলাবিশিষ্ট একটা বাড়ির উপরের তলার পশ্চিমের শেষের অন্ধকার রুমটা থেকে সমানে চিৎকার আসছে। কিন্তু কেউ দরজা খুলে দেখছে না কী হচ্ছে? কেনো এতো চিৎকার করছে মেয়েটি? মনে হচ্ছে, বাড়ির সবাই এই চিৎকারের সাথে ভীষণ পরিচিত। তাই বোধহয় কারো হেলদোল নেই। কিন্তু কে এই মেয়েটি? কেনই-বা চিৎকার করছে? এই বাড়ির সাথে কী সম্পর্ক? অনেক রকমের প্রশ্ন মাথায় কিলবিল করছে!

এই বাড়ির দুটি ছেলে আর একটি মেয়ে। মেয়েটির নাম অবন্তী আর বড় ছেলের নাম আরান ছোট ছেলের নাম আহিন।

আর আমি হলাম এই বাড়ির বড় ছেলের বউয়ের কাজিন আমার নাম ইমন।

কৌতূহলবশত আইরিনকে জিজ্ঞেস করলাম ঘটনা কী? কাহিনি শুনে আমি স্তব্ধ!

একটা মেয়ে কীভাবে ঠকে গেলে এভাবে পাগল হতে পারে? এ কেমন মানসিক নির্যাতন?

সালটা ২০১৯ হবে, অবন্তী করোনার ছুটি হওয়ায় ফোন নিয়ে সারাদিন অনলাইন জগতে ডুবে থাকতো! কিন্তু শেষে এর পরিণতি একি হলো? অনলাইনে জগৎ থেকে একটা ছেলের সাথে পরিচয়। তারপর বন্ধুত্ব। এভাবে কিছুদিন কাটার পর ভালোবাসায় পরিণত হয় এই সম্পর্কের।

তারপর আর কী? পালিয়ে গিয়ে বিয়ে! যেটা অবন্তীর মা-বাবা কখনো কল্পনা করতে পারেনি। তাদের অতি আদরের মেয়েটা এভাবে তাদের মানসম্মান শেষ করে একটা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের জীবনটা নষ্ট করে দিবে। অবন্তী যেই ছেলেটাকে ভালোবেসেছে, ছেলেটার নাম আবির। বখাটে ছেলে। বিয়ের প্রথম রাতেই নিজের চাহিদা মিটিয়ে স্ত্রীকে সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়।

পতিতালয়ে এই ফুলের মতো মেয়েটা শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রতিদিন নির্যাতিত হতো। কিন্তু ঐদিকে অবন্তীর মা-বাবার ধারণার বাহিরে তাদের আদরের মেয়ের জীবনে কী ঘটছে?

একদিন অবন্তীর মামা খালেদ অবন্তীকে পতিতালয়ের পাশের একটি দোকানে দেখতে পেলো। সাথে সাথে অবন্তীর মা-বাবাকে খবর দিল। তারা পতিতালয় গিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে নিজের মেয়েকে কিনে আনলো!

এভাবে কিছুদিন কাটার পর অবন্তী মা হতে চলল! কিন্তু হায় আফসোস! মেয়েটির কাছে বাবার পরিচয় থাকলেও নেই।

অবন্তীর মা-বাবা বিচলিত হয়ে পড়লেন, নিজের মেয়ের ভাগ্যকে ধিক্কার করলো। এ কেমন ভাগ্য?

তারপর অবন্তীকে জানানো হলো বাচ্চাটা নষ্ট করবে? কিন্তু অবন্তী নারাজ! কোন মাই হয়তো চাইবে না তার বাচ্চা পৃথিবীতে আসার আগেই মারা যাক। কিন্তু অবন্তীর মা-বাবা দ্বিতীয়বার মানসম্মান হারানোর ভয়ে অবন্তীকে কৌশলে হাসপাতালে নিয়ে বাচ্চাটি নষ্ট করলো। আবার ঠকে গেল অবন্তী! ওর বিশ্বাসের মর্যাদা কেউ রাখেনি!

এসব ভাবতে ভাবতে অবন্তী মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ল। নিজের মা-বাবাকে চিন্তেই পারেনি। ওদের দেখলে নিজের সন্তানের খুনি বলে মারতে যায়।

এভাবে আর কত দিন? দিন দিন অবন্তী মানসিকভাবে আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছে। যাকেই দেখবে তাকেই নিজের ‘বাচ্চা খুনি’ বলেই মারতে যাবে। দিনকে দিন অবন্তী হিংস্র হয়ে উঠল। শত ডাক্তার-ঔষধ অবন্তীকে ভালো করতে পারেনি। ডাক্তারকেও ‘বাচ্চার খুনি’ বলে মারতে যায়।

 অবন্তীর শেষ পরিণতি হলো অন্ধকার রুমে বন্ধ থাকা। চিৎকার করা, কান্না করা, নিজে নিজে বিড়বিড়ানো, জিনিসপত্র ভাঙা। এভাবে আর কতদিন চলবে? কীভাবে অবন্তী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়