শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪  |   ৩১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা গণফোরামের কর্মী সমাবেশ
  •   নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনে ফরিদগঞ্জে অবাধে ইলিশ বিক্রি
  •   পিকনিকে যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ মেঘনায় ভেসে উঠলো দুদিন পর
  •   নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি না করার শপথ করিয়েছেন এমএ হান্নান
  •   বিকেলে ইলিশ জব্দ ও জরিমানা

প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১৫

মানবতার ফেরিওয়ালা আয়েত আলী ভূঁইয়া

জাহাঙ্গীর আলম হৃদয়
মানবতার ফেরিওয়ালা আয়েত আলী ভূঁইয়া

মানবের দুঃখে মানবপ্রেমে যে যায় ছুটে, তার মধ্যে কাজ করে মানবতা, পরের দুঃখে যেজন যায় ছুটে, সে তো হয় পরম আত্মীয়।

অন্যের কথা ভেবে আপন মনে, ব্যক্তিগত অর্থায়নে, সামাজিক কাজ করে চলেছেন যেজন, তাকেই বলে মানবতার ফেরিওয়ালা।

শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিকÑসকল ক্ষেত্রে যার রয়েছে বিশেষ অবদান, তিনি হলেন শাহরাস্তি জনতার নয়নমণি আয়েত আলী ভূঁইয়া।

আমি সবসময়ই চেষ্টা করি যাঁরা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছেন নীরবে-নিবৃত্তে তাঁদের কথা তুলে ধরতে। তাঁরা শিক্ষা ক্ষেত্রে, সামাজিক ক্ষেত্রে, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অবদান রেখেই চলেছেন তাঁদের কথা তুলে ধরার চেষ্টা করি নিজের অবস্থান থেকে। তেমনি একজন ব্যক্তি হলেন চাঁদপুর শাহরাস্তি উপজেলার কৃতি সন্তান বিশিষ্ট শিল্পপতি শিক্ষানুরাগী কাকৈরতলা গ্রামের নিবাসী আয়েত আলী ভূঁইয়া। তিনি ১৯৮৮ সাল থেকে শাহরাস্তি উপজেলার অসহায় হতদরিদ্র কর্মহীন মানুষদের পাশে বিভিন্ন ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে পাশে থাকার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য কাপড়, পুরুষদের জন্য লুঙ্গি দেয়ার পাশাপাশি যাদের ঘর নেই অথবা ঘর করতে পারছেন না তাদেরকে টিন সহায়তা দিচ্ছেন এবং এই কাজটি তিনি নিজে একটা টিমের মাধ্যমে তালিকা গ্রহণ করে থাকেন, সে তালিকা অনুযায়ী নিজে সরজমিনে গিয়ে দেখেন, সে পরিবার টিন পাওয়ার যোগ্য কিনা, যাচাই-বাছাই শেষে তাদের হাতে ঘর করার জন্য টিন প্রদান করে থাকেন।

আয়েত আলী ভূঁইয়া কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে তিনি সেবা প্রদান করছেন দীর্ঘ বছর ধরে। তেমন কোন প্রচার-প্রচারণায় তিনি বিশ্বাস করেন না, তাই তিনি নীরবে বিনা প্রচারে মানুষের কল্যাণে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে মানবিক কাজ করে যাচ্ছেন।

তাঁর সঙ্গে আমার পরিচয় হয় ১৯৯৬ সালে শাহরাস্তি অপরূপা নাট্যগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে টামটা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে। আমাদের টামটা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক এবং টামটা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা মোজাফফর হোসেন স্যার সেদিন উপস্থিত ছিলেন, আজ তিনি নেই কিন্তু রয়ে গেছেন একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার অন্তরে, আমাদের অন্তরে।

আয়েত আলী ভূঁইয়া কল্যাণ ট্রাস্টের সঙ্গে যাঁদের দেখেছি তাঁরা হলেন মেহের ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ এমএ আউয়াল মজুমদার স্যার, মোজাম্মেল হক পাটোয়ারী কাকা, শাহরাস্তি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান স্যার (প্রয়াত), মেহের ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক (প্রয়াত) কবিরুল ইসলাম মজুমদার স্যার, ডা. মফিজুর রহমান মজুমদার ভাই, মোঃ জামাল হোসেন ভাই, কাদের রাব্বানী ভাই, জাহাঙ্গীর আলম রতন।

১৯৯৬ সাল থেকে একজন গণমাধ্যমকর্মী ও সাংস্কৃতিক সংগঠক হিসেবে আয়েত আলী ভূঁইয়া ভাই আমাকেও উনার এই মহতী কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। আমরা শাহরাস্তি উপজেলার বাহিরে হাজীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নেও উনার সঙ্গে টিন বিতরণ, কাপড় বিতরণ কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছি।

আয়েত আলী ভূঁইয়া শুধু একজন শিক্ষানুরাগী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তি নয়, তিনি সকল পর্যায়ের মানুষের কাছে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে পরিচিত। তিনি শাহরাস্তি উপজেলার বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আয়েত আলী ভূঁইয়া কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে পাঠাগার করে দিয়েছিলেন, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মেহের ডিগ্রী কলেজ। ২০২৪ সালে মেহের ডিগ্রী কলেজের তিনি এডহক কমিটির দাতা সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

তিনি বর্তমানে শাহরাস্তি উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন, রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও তিনি সফলতার সঙ্গে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে চলেছেন। দেশের সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনগণের সম্পৃক্ততায় এগিয়ে যাচ্ছেন। সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সকল দলের সাথে, সকল মানুষের সঙ্গে তিনি সুসম্পর্ক রেখে কাজ করছেন। কেউ কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে যেন না পারে সেই জন্য নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন, এই সমাজসেবক মানবতার ফেরিওয়ালা আয়েত আলী ভূঁইয়া।

শিক্ষা, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সকল ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছেন এই মহতী ব্যক্তি। ১৯৯৬ সালে তিনি শাহরাস্তি অপরূপা নাট্যগোষ্ঠী উপদেষ্টা নির্বাচিত হয়ে আজ পর্যন্ত তিনি উপদেষ্টা হিসেবে সকল ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

২০০৬ সালে শাহরাস্তি অপরূপা নাট্যগোষ্ঠীর মাধ্যমে সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক পরিবেশ তৈরি করার ক্ষেত্রে শাহরাস্তি উপজেলার দশটি ইউনিয়ন একটি পৌরসভায় গ্রামেগঞ্জে পড়ে থাকা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের, সাংস্কৃতিরমনা মানুষদের খুঁজে বের করতে তিনি স্পন্সর হিসেবে ‘তোমাকে খুঁজছে শাহরাস্তি ওয়ান’-এর প্রচলন শুরু করেন।

দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা শিল্পীরা বিচারক হিসেবে শাহরাস্তি অপরূপা নাট্যগোষ্ঠী আয়োজিত তোমাকে খুঁজছে শাহরাস্তি ওয়ানÑঅডিশনে উপস্থিত থেকে গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ৪ হাজার শিল্পীর থেকে পর্যায়ক্রমে যাচাই-বাছাই করে ১০ জন শিল্পীকে নির্বাচিত করেন এবং তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

জীবন-জীবিকার তাগিদে ২০০৭ সালে শেষের দিকে আমি সৌদি আরব চলে আসি। আসার সময় শাহরাস্তি অপরূপা নাট্যগোষ্ঠীর ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব ফয়েজ আহমেদকে দেয়া হয়, সাংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে বিদায়ী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমায় বিদায় দেওয়া হয়। ফয়েজ আহমেদের পরে অপরূপা নাট্যগোষ্ঠীর ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করছেন সৈয়দ আমরুজ্জামানের সবুজ।

যত দূরেই আছি যেখানেই আছি আয়েত আলী ভূঁইয়া ভাইয়ের সঙ্গে আজো রয়েছে আত্মার সম্পর্ক, ভালোবাসার সম্পর্ক। উনার কার্যক্রমগুলোকে এগিয়ে নিতে স্থানীয় কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীকেও পরবর্তীতে প্রবাস থেকে বসে সম্পৃক্ত করি। এখনো প্রবাস থেকে দেশে গেলেও দুই ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়, কথা হয়, কর্মের কারণে আগের মত বসার সুযোগ না হলেও মোবাইলের যুগে এসে কথা হয় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কয়েকদিন পরপর।

শাহরাস্তি উপজেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে মেধার বিকাশ ঘটাতেও রয়েছে বিশেষ অবদান আয়েত আলী ভূঁইয়ার। আগামীতেও তিনি অতীতের মতই রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মানবিক ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখবেন। মানুষের দোয়া ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে যাবেনÑসে প্রত্যাশাই করছি এই মানবতা ফেরিওয়ালার জন্য।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়