প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২১, ২২:২২
স্কুল ফিরতে শিক্ষার্থীদের ব্যাকুলতা–১৩
সপ্তাহে অন্তত: চারদিন করে হলেও স্কুল খুলে দেওয়া হোক
বৈশ্বিক মহামারি করোনার কালো থাবায় দেড় বছরেরও অধিক সময় ধরে বাংলাদেশে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বোর্ড পরীক্ষা ব্যতিত অন্যান্য শ্রেণী কার্যক্রম অ্যাসাইনমেন্ট ভিত্তিতে চলমান এবং শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণীতে অটোপ্রমোশন দেওয়া হলেও সবচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তায় আছে পাবলিক পরীক্ষার শিক্ষার্থীরা। ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অটোপাস দেওয়া হলেও এসএইচসি পরীক্ষার্থীদের ধোঁয়াসা যেন কাটছেই না।
|আরো খবর
চাঁদপুর কন্ঠের ধারাবাহিক প্রতিবেদন 'স্কুলে ফিরতে শিক্ষার্থীদের ব্যাকুলতা' এই পর্বে থাকছে ফরিদগঞ্জের কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী শামীম শেখের শিক্ষা ভাবনা, থাকছে বর্তমান পরিস্থিতিতে তার হতাশা ও প্রত্যাশার কথা।
চাঁদপুর কন্ঠ : করোনায় কেমন চলছে পড়ালেখা? শামীম শেখ : পূর্বের চেয়ে খারাপ তবে, পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি৷
চাঁদপুর কন্ঠ : মানসিক অবস্থা কেমন? শামীম শেখ : যতই দিন যাচ্ছে, মানসিক অবস্থার ততই অবনতি হচ্ছে৷ জানি না এর শেষ কোথায়? কবে খুলবে স্কুল, কবে আবার ফিরবো স্বপ্নের ক্যাম্পাসে!
চাঁদপুর কন্ঠ : নভেম্বর-ডিসেম্বরে ৪ বিষয়ে এসএসসি পরীক্ষা হতে যাচ্ছে। আসন্ন পরীক্ষাকে কিভাবে দেখছেন? শামীম শেখ : পরীক্ষা হওয়াটাকে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক এর মাঝামাঝি দেখছি৷ তবে ভীতিও কাজ করছে। যেহেতু দেড় বছর কোন পরীক্ষা দেইনি এবং আমরা নবম-দশম শ্রেণিতে ক্লাস না করেই সরাসরি এসএসসি পরীক্ষা দিব। কোন টেস্ট পরীক্ষা ছাড়াই। কাজেই কিছুটা ভয় কাজ করছে।
চাঁদপুর কন্ঠ : আপনি কি মনে করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সময়ের দাবী? শামীম শেখ : জি অবশ্যই। বিদ্যালয় খোলা থাকলে আজ আমাদের মানসিক প্রশান্তি থাকতো ৷ বিদ্যালয় খোলা থাকলে আজ পরীক্ষা নেওয়াটাকে আমি সম্পূর্ণ ইতিবাচক হিসাবে নিতে পারতাম৷
চাঁদপুর কন্ঠ : অনলাইন পাঠদান কতটা ফলপ্রসূ হচ্ছে বলে মনে করেন? শামীম শেখ : গ্রামের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ঠিক করে ক্লাশ করতে পারলে সেটা ফলপ্রসূ হতো। কিন্তু অধিকাংশ সময় গ্রামে নেটওয়ার্ক সমস্যা থাকে। যার কারনে আমার মতো গ্রামগঞ্জের শিক্ষার্থীরা অনলাইন পাঠদান এর কার্যকর ফল পাচ্ছে না৷
চাঁদপুর কন্ঠ : শিক্ষার্থীরা এ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে কতটা উপকৃত হচ্ছে বলে মনে করেন? শামীম শেখ : অনেকটাই। কারণ এ্যাসাইনমেন্ট করার জন্য হলেও একজন শিক্ষার্থী পড়ালেখার অন্তর্ভূক্ত হচ্ছে। তবে স্কুল ভিত্তিক যে পড়াশোলা তার মতো নয়। তার বিকল্প কোন ভাবেই এ্যাসাইনমেন্ট হতে পারে না।
চাঁদপুর কন্ঠ : স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল-কলেজ খোলার বিষয়ে আপনার মতামত কী? শামীম শেখ : সপ্তাহে অন্তত চারদিন করে হলেও স্কুল খুলে দেওয়া হোক। সেক্ষেত্রে কক্ষ সংখ্যা বাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিতে পাঠদানের আওয়ায় আনা উচিত বলে মনে করি৷ প্রয়োজনে মোট শিক্ষার্থীদের বিভাজন করে একটি গ্রুপকে একদিন স্কুলে নেয়া হোক। এতে পড়ালেখায় অনেকটাই অচলতা কাটবে।
চাঁদপুর কন্ঠ : করোনায় পড়ালেখা ছেড়েছেন বা বাল্যবিয়ে হয়ে গেছে বা কাজে জড়িয়েছেন এমন কোন সহপাঠী আছে কি? থাকলে তাদের সংখ্যা কত? শামীম শেখ : আমার জানামতে আমাদের সাথের একজন ছেলে পড়ালেখা কাজের সাথে যুক্ত হয়েছে। বাল্যবিয়ে সংক্রান্ত কোন তথ্য আমার জানা নেই। তবে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে গ্রাম এলাকার স্কুলের ছাত্রীদের কারও কারও বাল্যবিয়ে হওয়াটা খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।