বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা গণফোরামের কর্মী সমাবেশ
  •   নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনে ফরিদগঞ্জে অবাধে ইলিশ বিক্রি
  •   পিকনিকে যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ মেঘনায় ভেসে উঠলো দুদিন পর
  •   নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি না করার শপথ করিয়েছেন এমএ হান্নান
  •   বিকেলে ইলিশ জব্দ ও জরিমানা

প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

জেলায় ৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ

আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা, ন্যায্য দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা

আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা, ন্যায্য দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা
কৃষিকণ্ঠ প্রতিবেদক ॥

আলু উৎপাদনে দেশের অন্যতম কৃষি অঞ্চল জেলা হিসেবে পরিচিত চাঁদপুর। আলু চাষ সফল করতে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ মোবারক হোসেন কৃষিকণ্ঠকে জানান, নিবিড় বার্ষিক ফসল উৎপাদন কর্মসূচির আওতায় চলতি ২০২২-২৩ মৌসুমে জেলায় ৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষকরা এখন জমিতে আলু গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিশেষ করে আগাম জাতের রোপা আমন ধান কাটার পরেই ইতোমধ্যে আগাম জাতের আলু উঠতে শুরু হয়েছে বিভিন্ন উপজেলায়। জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের আলু বীজ বোপণের জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

উপজেলাভিত্তিক আলু আবাদের মধ্যে রয়েছে : চাঁদপুর সদর উপজেলায় ১ হাজার ৫৫০ হেক্টর, মতলব উত্তর উপজেলায় ৭৬৫ হেক্টর, মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ২ হাজার ১০০ হেক্টর, হাজীগঞ্জ উপজেলায় ৫৮৫ হেক্টর, শাহরাস্তি উপজেলায় ৭০ হেক্টর, কচুয়া উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ১২০ হেক্টর ও হাইমচর উপজেলায় ১৬০ হেক্টর জমি। জেলায় মোট আলু আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে।

এতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ লাখ ২০ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন। ফলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলায় পাঠানো সম্ভব হবে। এবার হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন ধরা হয়েছে ২৪ মেট্রিক টন আলু। তবে সর্বশেষ চিত্রাংয়ের কারণে জমিতে পানি জমে থাকায় আলুসহ অন্যান্য সবজি আবাদ কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলে জানান কৃষকরা।

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে সরেজমিন চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মনোহরখাদী গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, আলুর জমিতে আগাছা পরিষ্কার করছে কৃষকরা। নিচু জমির আলুর চারাগুলো এখনও ছোট। আবার কিছু ভিটা ও উঁচু জমিতে আগ থেকে লাগানোর কারণে গাছ বড় হয়েছে।

এছাড়া সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল, বালিয়া, চান্দ্রা, বাগাদী, মৈশাদী, কল্যাণপুর, আশিকাটি, শাহমাহমুদুপুর, রামপুর ইউনিয়নে এ বছর অধিকাংশ কৃষক আলুর আবাদ করেছেন। এসব এলাকার প্রত্যেক মাঠেই আলুর জমিগুলোর পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরা। বিশেষ করে শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর, কুমারডুগী ও ঘোষেরহাট এলাকার বড় বড় মাঠে আলুর ব্যাপক আবাদ হয়েছে।

ওই গ্রামের কৃষক রইমন ও আজগর কৃষিকণ্ঠকে বলেন, আলু গাছের চারা ছোট হলেও সমস্যা নেই। অল্প সময়ের মধ্যে বড় হয়ে যাবে। তবে প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে আশা করছি এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হবে।

একই এলাকার কৃষক আলমাছ বলেন, এ বছর ৫০ শতাংশ জমিতে আলুর আবাদ করেছি। এখন পর্যন্ত গাছগুলো ভালো আছে। বাকি আল্লাহর ইচ্ছা।

তিনি বলেন, এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বর এবং ২০২২-এর ফেব্রুয়ারি মাসের দুই দফা বৃষ্টিতে অনেক ক্ষতি হয়েছে। আলুর জমিতে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় ওঠানোর পর সংরক্ষণ করতে পারিনি। যার কারণে দামও খুব কম পেয়েছিলাম।

জেলায় আলু চাষ সফল করতে কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণ সহ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোঃ সাফায়েত আহম্মদ সিদ্দিকী। চাঁদপুর জেলার ‘মেঘনা-ধনাগোদা’ ও ‘চাঁদপুর সেচ প্রকল্পে’র অভ্যন্তরসহ নদী উপকূলীয় এলাকায় আলুর আবাদ বেশি হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নদীকেন্দ্রিক কৃষি অঞ্চল হিসেবে পরিচিত চাঁদপুর জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণ জমিতে আলুর চাষ হয়ে থাকে। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর একটু কম হয়েছে। গত দুবছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সে কারণেই হয়তোবা এবার আলু আবাদ কম হয়েছে। তবে এ বছর এই পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। আশা করছি আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। আলু উৎপাদনে দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে চাঁদপুর। মুন্সিগঞ্জের পরেই চাঁদপুরের স্থান। চাঁদপুরে বেসরকারিভাবে ১২টি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে। এগুলোর ধারণক্ষমতা মাত্র ৭০ হাজার মেট্রিক টন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়