মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১৫

শিক্ষক সাক্ষাৎকার : মো. সৈয়দ আহাম্মদ পাটওয়ারী

খেলাধুলা শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

অনলাইন ডেস্ক
খেলাধুলা শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

মো. সৈয়দ আহাম্মদ পাটওয়ারী বাজাপ্তী রমনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিতের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক। তাঁর বাবাও ছিলেন একজন গুণী শিক্ষক। বাবার পথ অনুসরণ করে তিনিও শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তিনি ২০১৯ ও ২০২৪ সালে হাইমচর উপজেলায় শ্রেষ্ঠ শ্রেণিশিক্ষক হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন। সম্প্রতি এ গুণী শিক্ষক দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ-এর ‘শিক্ষাঙ্গন’ বিভাগের মুখোমুখি হন।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কেমন আছেন?

মো. সৈয়দ আহাম্মদ পাটওয়ারী : আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষকতা পেশায় কীভাবে এলেন?

মো. সৈয়দ আহাম্মদ পাটওয়ারী : শিক্ষকতা আমার পছন্দের পেশা। আমার বাবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষককে সবাই সম্মান করে। সেই অনুপ্রেরণায় ১৯৯৩ সালে বিএড কোর্স সম্পন্ন করে শিক্ষকতা পেশায় আত্মনিয়োগ করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষক হিসেবে প্রথম দিনটি কেমন ছিল?

মো. সৈয়দ আহাম্মদ পাটওয়ারী : ১৯৯৫ সালে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের উত্তর কুশিয়ারা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করি। প্রথম দিন ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কথা বুঝতে সমস্যা হয়নি, কিন্তু তাদের মতো করে বলতে পারিনি। তখন শিক্ষার্থীরা মজা করে বলেছিল, টিভিতে যেভাবে কথা বলে, স্যারও ঠিক সেভাবেই বলেন!

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার ছাত্রজীবন সম্পর্কে কিছু বলুন।

মো. সৈয়দ আহাম্মদ পাটওয়ারী : আমি ১৯৬৯ সালে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাখরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করি। ১৯৮৫ সালে চান্দ্রাবাজার ইয়াকুব আলী স্মারক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাস করি। ১৯৮৭ সালে ফরিদগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ১৯৮৯ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে বিএসসি সম্পন্ন করি। ১৯৯৩ সালে কুমিল্লা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিএড শেষ করি।

১৯৮৯ সালে বিএসসি পাসের পর এমএসসিতে ভর্তি হয়েছিলাম, কিন্তু ১৯৯০ সালের আন্দোলনের কারণে পড়াশোনা আর চালিয়ে যেতে পারিনি। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সংগ্রাম করে এগিয়ে এসেছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনাদের সময়ের শিক্ষাব্যবস্থা ও বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে কী পার্থক্য দেখেন?

মো. সৈয়দ আহাম্মদ পাটওয়ারী : আমাদের সময়ে শিক্ষা ছিল মুখস্থনির্ভর ও শিক্ষককেন্দ্রিক। প্রযুক্তির ব্যবহার ছিল না। এখন শিক্ষা অনেক বেশি গবেষণাভিত্তিক ও প্রযুক্তিনির্ভর। অনলাইন ক্লাস, ই-লার্নিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বেড়েছে। শিক্ষার্থীরা এখন আরও সক্রিয়ভাবে শেখে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

মো. সৈয়দ আহাম্মদ পাটওয়ারী : খেলাধুলা শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু শারীরিক নয়, মানসিক, সামাজিক ও একাডেমিক উন্নয়নের জন্যও সহায়ক। খেলাধুলা শৃঙ্খলা শেখায়, সময় ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলে, দলগতভাবে কাজ করতে উৎসাহিত করে এবং নেতৃত্বের বিকাশ ঘটায়। সবচেয়ে বড় কথা হলো, খেলাধুলা পড়াশোনায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : এ বিদ্যানিকেতনটি সম্পর্কে কিছু বলুন।

মো. সৈয়দ আহাম্মদ পাটওয়ারী : বাজাপ্তী রমনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয় একটি শতবর্ষী প্রতিষ্ঠান। মেঘনার ভাঙনে বিদ্যালয়টি একসময় স্থানান্তরিত হয়। বর্তমান প্রধান শিক্ষক এম. এ. মান্নান স্যারের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও শিক্ষার মান অনেক উন্নত হয়েছে। ২০২৩ সালে বিদ্যালয়টি উপজেলায় শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার প্রিয় ছাত্র কারা? কেন প্রিয়?

মো. সৈয়দ আহাম্মদ পাটওয়ারী : আমার প্রিয় ছাত্র তারা, যারা অধ্যবসায়ী ও মনোযোগী। ভদ্র, বিনয়ী, সৃজনশীল এবং দায়িত্বশীল। যাদের নৈতিক গুণ আছে ও চিন্তাশীল মনোভাব রয়েছে, তারাই আমার প্রিয়।

চাঁদপুর কণ্ঠ : শিক্ষকতা জীবনের একটি আনন্দের ঘটনা বলুন।

মো. সৈয়দ আহাম্মদ পাটওয়ারী : শিক্ষকতা আমার কাছে এক মহান পেশা। এখানে প্রতিটি প্রাপ্তিই আনন্দের। এর মধ্যে সবচেয়ে আনন্দের একটি মুহূর্ত হলো উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণিশিক্ষক পুরস্কার পাওয়া। ২০১৯ সালে প্রথমবার এই পুরস্কার পাই এবং ২০২৪ সালেও একই স্বীকৃতি অর্জন করি। এটি আমার জীবনের গর্বের অর্জন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়