শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   প্রাইভেটকারের ধাক্কায় বুয়েট শিক্ষার্থী নিহত: ডোপ টেস্টে ধরা পড়ল মাদকাসক্তি
  •   সাতক্ষীরায় ব্যবসায়ীর ২৩ লাখ টাকা ছিনতাই: স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ
  •   চাকা পাংচার হওয়ায় এনজিও কর্মকর্তার মৃত্যু
  •   বরগুনায় টিকটক নিয়ে পারিবারিক কলহ: স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী আত্মহত্যার চেষ্টা
  •   মানব পাচারের চক্রের বিরুদ্ধে বিজিবির সফল অভিযান: কিশোরী উদ্ধার, তিন আটক

প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:৪২

চট্টগ্রাম জেলা মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন

সহকারী শিক্ষকরা দ্বৈত অত্যাচারের শিকার হয়ে পাঠদানে স্বাভাবিক পরিবেশ পাচ্ছে না

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
সহকারী শিক্ষকরা দ্বৈত অত্যাচারের শিকার হয়ে পাঠদানে স্বাভাবিক পরিবেশ পাচ্ছে না
চট্টগ্রাম জেলা মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন

‘শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করে সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূর করুন’ এ প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি চট্টগ্রাম জেলা দ্বিতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

৪ অক্টোবর সকাল ১০টায় চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে জামান হোটেলের দ্বিতীয় তলায় এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক সায়মা আলম। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা, কবি- প্রাবন্ধিক-গবেষক জাহাঙ্গীর হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোঃ নূরে আলম বিপ্লব, সহ-সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক তমাল দাশ লিটন।

সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি অমৃত কারণের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার দত্তের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের জেলা সহ-সভাপতি ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক প্রকাশ বৈদ্য, জেলা সহ-সভাপতি কৃষ্ণা রাণী বড়ুয়া ও বাঁশখালি উপজেলা সভাপতি প্রকাশ দাস।

সম্মেলনের উদ্বোধক সায়মা আলম বলেন, আপনারা শুধু শিক্ষাই দিচ্ছেন না, বিদ্যাটাও দিচ্ছেন। শতকরা ৭৫ ভাগ সাক্ষরতা হলেও শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। কারণ শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত দক্ষতা অর্জন হচ্ছে না। এর কারণ শিক্ষাতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ নেই। সরকার বিনিয়োগের বিষয়টি দেখাচ্ছে বড়ো বড়ো ভবন নির্মাণ করে। কিন্তু শিক্ষার্থী-শিক্ষকের উন্নয়নের জন্যে মূল জায়গায় বিনিয়োগ হচ্ছে না। শিক্ষার মান বাড়ানোর জন্যে ভূমিকা রাখবে তো শিক্ষকরা, কিন্তু শিক্ষকরা যে ভালো না থাকলে শিক্ষা ভালো হবে না এটা বিগত সরকারগুলো ভাবেনি। যার কারণে দক্ষ শিক্ষার্থী গড়ে উঠছে না। অথচ তৃতীয় শ্রেণির সরকারি একজন কর্মচারী শিক্ষকের চেয়ে অনেক বেশি বেতন-ভাতাদি পান। শিক্ষকদের আমরা সম্মান করতে না পারাটা জাতির এক ধরনের ব্যর্থতা।

তিনি আরো বলেন, সরকারি-বেসরকারি সিলেবাস একই রকম, শিক্ষকদের যোগ্যতাও একই রকম। কিন্তু বেতন-ভাতা বৈষম্য বিশাল। এভাবে শিক্ষাক্রম এগিয়ে নেয়া সম্ভব না। তাই বেসরকারি শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্যে শিক্ষকদের আর্থিক সুবিধা এবং যথাযথ সামাজিক মর্যাদার নিশ্চয়তা বিধান করা দরকার।

সম্মেলনের প্রধান অতিথি ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, শিক্ষক জাতি গঠনের জন্যে একদল মানুষ তৈরি করার প্রত্যয়ে শিক্ষকতায় আসেন। কিন্তু শিক্ষক এ বাসনায় কাজ করলেও তাদেরকে সুন্দর জীবনযাপন করাতে রাষ্ট্র ন্যূনতম মৌলিক চাহিদাটুকু পূরণ করতে পারেনি। বরং এক ধরনের দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আজ শিক্ষকদের আর্থিক এবং সামাজিক নিরাপত্তা কোনোটাই নেই। সাধারণ শিক্ষকগণ রাষ্ট্র এবং ম্যানেজিং কমিটি দ্বারা নিগ্রহের শিকার। ফলে সহকারী শিক্ষকরা দ্বৈত অত্যাচারের শিকার হয়ে পাঠদানে স্বাভাবিক পরিবেশ পাচ্ছে না। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয়করণ করা হচ্ছো না। ফলে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি ফাঁদে ফেলে শিক্ষাটাকে বৈষম্যের বেড়াজালে আটকে রাখছে। এতে করে দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। ফলে গোটা জাতি মূলধারায় চলছে না।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষকের সামাজিক মর্যাদা ও আর্থিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে বেতন বৈষম্য দূর করতে হবে এবং সংবিধানে শিক্ষকতা পেশাকে মহান পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। ইতোমধ্যে ঘটে যাওয়া শিক্ষকদের ওপর নির্যাতনকারীদের গ্রেফতার করতে হবে এবং জোরপূর্বক পদত্যাগকারী শিক্ষকদের স্বপদে বহাল করে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।

বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোঃ নূরে আলম বিপ্লব বলেন, পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শিক্ষাক্রম অবশ্যই বিজ্ঞানভিত্তিক ও প্রগতির ধারায় রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, পূর্ণাঙ্গ উৎসব বোনাস ও সরকারি নিয়মে বাড়ি ভাড়ার ফয়সালা অক্টোবরের মধ্যেই করতে হবে।

সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে উপস্থিত প্রতিনিধিদের মতামতের ভিত্তিতে বিপ্লব কুমার দত্তকে সভাপতি, সনৎ রুদ্রকে সাধারণ সম্পাদক ও জিয়াউদ্দিন বাবুলকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে চট্টগ্রাম জেলার ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়