শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২২, ০০:০০

এক মাদ্রাসার শিক্ষক ক্যাচমেন্ট এলাকার মধ্যে আরেক মাদ্রাসা খুলে ব্যবসা করছেন

এক মাদ্রাসার শিক্ষক ক্যাচমেন্ট এলাকার মধ্যে আরেক মাদ্রাসা খুলে ব্যবসা করছেন
কামরুজ্জামান টুটুল ॥

চাঁদপুর সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কামরাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ী আরবী শিক্ষক আমির হামজা। উক্ত প্রতিষ্ঠানে ২০১৯ সালে ইবতেদায়ী শাখায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন তিনি। আমির হামজা নিজে উক্ত মাদ্রাসার ক্যাচমেন্ট এরিয়ার অভ্যন্তরে নূরানি মাদ্রাসা খুলে নূরানী বিভাগসহ ১ম শ্রেণি থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত চালু করেছেন। এমপিওভুক্ত একজন শিক্ষকের ক্যাচমেন্ট এলাকায় লাভজনক প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যবসা করাকে দুঃসাহস হিসেবে দেখছে স্থানীয়রা।

সরেজমিনে দেখা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়নের ৪৩নং মনিহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মোল্লা বাড়ির সামনে বাকিলা-ছোট সুন্দর-মহামায়া সড়কের পাশের একতলা পাকা বিল্ডিং। এ বিল্ডিংয়ের নিচতলায় দুই ইউনিট। পূর্ব অংশের ইউনিটে কামরাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ী নূরানী শাখার শিক্ষক আমির হামজার মালিকানাধীন ‘নূরে মদিনা হিফজুল কোরআন মাদ্রাসা’। পশ্চিম পাশের ইউনিটে আমির হামজার ফ্যামিলি বাসা। পুরো ইউনিট ভাড়া নিয়েছেন আমির হামজা নিজে। এ তথ্য উক্ত মাদ্রাসার দায়িত্বপ্রাপ্ত পাশের মোল্লা বাড়ির আক্তার হোসেনের। মূলত আমির হামজার অনুপস্থিতিতে আক্তার হোসেন আবাসিক অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের দেখভাল করেন বলে জানান তিনি স্বয়ং।

সোমবার উক্ত প্রতিষ্ঠানে গেলে আক্তার হোসেন আরো জানান, বর্তমানে উক্ত মাদ্রাসায় ৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীদের থেকে জনপ্রতি মাসে ৩ হাজার ২শ’ টাকা আর অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের থেকে জনপ্রতি ১ হাজার ২শ’ টাকা করে বেতন নেন আমির হামজা।

এদিকে একই দিন কামরাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসা শিক্ষক মিলনায়তনে অন্য শিক্ষকদের উপস্থিতিতে উক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক আমির হামজার সাথে কথা হলে তিনি বলেন যে, ক্যাচমেন্ট কী সেটাই তিনি জানেন না। উপস্থিত অন্য শিক্ষকগণ বলার পরে ক্যাচমেন্ট এরিয়া বুঝে আমির হামজা বলেন, আমার মাদ্রাসাটি দ্বীনি প্রতিষ্ঠান। তাহলে যে প্রতিষ্ঠানে সরকারি চাকুরি করছেন (কামরাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসা) সেটি কি দ্বীনি প্রতিষ্ঠান না-এমন প্রশ্নে আমির হামজা বলেন, আমি নূরানি পড়াই। আপনার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডে ১ম শ্রেণি থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লিখলেন কেন, এমন প্রশ্নে চুপ থাকেন আমির হামজা।

কামরাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসার অন্য একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, আমির হামজার নিজের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ভর্তি রয়েছে কামরাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসায়। মূলত আমির হামজা নিজের মাদ্রাসায় পড়িয়ে বেতন নেন আর সেই সকল শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দেয়া হয় কামারাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী হিসেবে। এখানে আমির হামজা নিজে বড় ধরনের ফাঁকি দিচ্ছেন অভিভাবকসহ এলাকাবাসীকে-বলছে সেই সূত্র।

কামরাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসার অফিস সূত্রে জানা যায়, উক্ত মাদ্রাসার ক্যাচমেন্ট এরিয়া হচ্ছে পূর্বে মনিহার (আমির হামজার প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তর) তথা হাজীগঞ্জ সীমানা, দক্ষিণে ডাকাতিয়া নদীর পাশের ফরিদগঞ্জের মূলপাড়া, পশ্চিমে রাড়ির চর।

কামরাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ী শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ইয়াকুব আলী জানান, নূরানীসহ উক্ত মাদ্রাসার ইবতেদায়ীতে ১শ’ ৬৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। আমির হামজার মাদ্রাসার বিষয়ে কিছু বলতে চাননি এই শিক্ষক।

কামরাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ী আরবি শিক্ষক আমির হামজা তাদের শিক্ষক এমন বিষয় নিশ্চিত করে উক্ত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মুকবুল হোসাইন বলেন, মাদ্রাসার ক্যাচমেন্ট এরিয়ার মধ্যে ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান আমাদের কারো কাম্য নয়, বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানটি যদি হয় আমাদের মাদ্রাসার শিক্ষকের।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামাল হোসেন জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি, আসছে ২/১ দিনের মধ্যে যাবো।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়