মতলবে উদ্বোধনের অপেক্ষায় হাশেম খান ডাইভারসি ফাইভ জুট মিল
প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২১, ১৮:২৬
মতলব দক্ষিণে উদ্বোধনের অপক্ষোয় হাশেম খান ডাইভারসি ফাইড জুট মিল। মিলটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং মেশিন স্থাপনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। স্থানীয়ভাবে সাধারণ মানুষ এমন একটি শিল্প-কারখানাকে এলাকার উন্নয়নের জন্য ইতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করছে। এতে স্থানীয় অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির হয়েছে।
বাংলার সোনালীআঁশ পাট এক সময় দেশের প্রধান অর্থকরি ফসল ছিল। সে ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে দেশে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এমনি একজন উদ্যোগি ব্যক্তিত্ব চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার সাড়পাড় খান বাড়ির মো. বদরুদজ্জামান খান লোকমান এবং মো. জাকির হোসেন খান বাবুল। তারা তাদের বাবা মরহুম আবুল হাশেম খানের নামানুসারে উপজেলার ঘিলাতলী সাইনবোর্ড মোড়ে হাশেম খান ডাইভারসি ফাইড জুট মিল স্থাপন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তারা দুই ভাই মিলের চেয়ারম্যান এবং এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে তাঁদের মেধা ও যোগ্যতা কাজে লাগিয়ে সার্বিক কাজ তদারকি করছেন।
অগ্রণী ব্যাংক মতিঝিল শাখার আর্থিক সহায়তায় প্রায় ৩ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হাশেম খান ড্রাইভারসি ফাইড জুট মিল। এ মিল থেকে এক্সপোর্ট কোয়ালিটির সুতা, চটের বস্তা, চট, চাউলের বস্তা, সুতলি, ব্যবহৃত পোষাকের সুতা ইত্যাদি উৎপাদন করা হবে বলে জানান জুট মিলের চেয়ারম্যান মো. বদরুদজ্জামান খান লোকমান।
নানান জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ রাখতে হয় এ মিলের কার্যক্রম। এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপি করোনা মাহামারি আঘাত করলে পরিস্থিতি আরো সাধ্যের বাইরে চলে যায় বলে জানান মিলের এমডি মো. জাকির হোসেন খান। কারণ এর সকল যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তারপরও গত এক বছর যাবত নিরলসভাবে কাজ করে মিলটিকে উৎপাদনমুখি করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। বিভিন্ন মেশিন ও যন্ত্রাপাতি স্থাপনের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। এক প্রশ্নের জবাবে মিলের সার্বিক তত্ত¡বধানকারী মো. সুফি আহমেদ খান জানান, মহান আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা আগামী ৩ মাসের মধ্যে মিলের উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে পারবো বলে আশা করি।
মিল এলাকার অধিবাসী ও ৩নং খাদেরগাঁও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম ঢালী জানান, হাশেম খান ডাইভারসি ফাইড জুট মিলটি দ্রুত চালু হোক এটা আমরা চাই। এতে এলাকা উন্নত হবে। মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আমি এ জুট মিলের উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনা করি।
মিলের জিএম মো. মহব্বত আলী মিয়া জানান, নিয়মমাফিক জুট মিলটি পরিচালনা করতে পারলে এখানে প্রতিদিন এক্সপোর্ট কোয়ালিটি মানের ৮ টন পাটের সুতা উৎপাদন করা যাবে। পাশাপাশি তাঁতের সুতা উৎপাদন হবে ৬ টন। আর এ কাজ বাস্তবায়ন করতে হাশেম খান ড্রাইভারসি ফাইড জুট মিলে দুই শিফটে প্রায় ৫শ' লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সুষ্টি হবে। এতে এলাকায় অনেকটা বেকারত্ব দূর হবে। এক্সপোর্ট কোয়ালিটির সুতা বিদেশে বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে। যা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মিলের জিএম মো. মহব্বত আলী মিয়া জানান, উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রাখতে প্রতিদিন এখানে ১৫ টন শুকনো পাট প্রয়োজন হবে। যার যোগান পার্শ্ববর্তি জেলা এবং স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা হবে।
এমন একটি উৎপাদনশীল চিন্তা এ অজপাড়াগাঁয়ে বাস্তবায়নের চেষ্টা কেন করছেন জানতে চাইলে মিলের চেয়ারম্যান বদরুদজ্জামান খান লোকমান জানান, আমি ছোটবেলা থেকেই উৎপাদনশীল কিছু একটা করার চেষ্টা করতাম। আমরা পারিবারিকভাবে হাজিগঞ্জ উপজেলার হামিদিয়া জুট মিলটি কয়েক বছর ভাড়া নিয়ে চালিয়েছি। পরে এমন একটা মিল নিজের এলাকায় স্থাপন করার চিন্তা করি। যাতে নিজের এলাকা উন্নত হয়, স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান হয় এবং জাতিয় অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়।