প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ০২:১৪
একই রাতে দুটি এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্স লক্ষ্য করে হামলা, জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা
রাজধানীতে রাতের নিস্তব্ধতায় ককটেল বিস্ফোরণ!

রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ দুটি এলাকায় – ফার্মগেট ও খামারবাড়িতে – সোমবার (৪ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে ট্রাফিক পুলিশের দুটি বক্সের পাশে পৃথকভাবে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীজুড়ে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তা হুমকি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, ঠিক তখন এমন বিস্ফোরণ নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করেছে জনমনে।
|আরো খবর
ফার্মগেটে বিস্ফোরণ: আনন্দ সিনেমা হলের সামনে টার্গেট
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন জানান, “ফার্মগেট আনন্দ সিনেমা হলের সামনের ট্রাফিক পুলিশ বক্সের পাশে রাত ১১টার কিছু পর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। কে বা কারা হঠাৎ ককটেলটি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়।”
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিস্ফোরণের আলামত সংগ্রহ করেছে এবং পুরো এলাকা কর্ডন করে ঘিরে ফেলে।
দ্বিতীয় বিস্ফোরণ খামারবাড়িতে: খেজুরবাগানে ট্রাফিক বক্স লক্ষ্য
একই রাতে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটে রাজধানীর খামারবাড়ি খেজুরবাগান এলাকায়, যেখানে শেরে বাংলা নগর থানাধীন ট্রাফিক পুলিশ বক্স ছিল মূল টার্গেট। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ একটি শব্দে কেঁপে ওঠে আশপাশ, কিন্তু বিস্ফোরণের পরপরই হামলাকারীরা দ্রুত সরে পড়ে।
ওসি মোবারক জানান, “দুটি বিস্ফোরণস্থল থেকেই হলুদ টেপে মোড়ানো ককটেলের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে।” বিস্ফোরণে কোন প্রাণহানি বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
সিসিটিভি বিশ্লেষণে নেমেছে পুলিশ
পুলিশ জানায়, উভয় এলাকায় স্থাপিত সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের কাজ চলছে। সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করতে আশপাশের ভবনের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা মনে করছেন, হামলাকারীরা হয়তো রাজধানীতে একটি বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই ধরনের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
নিরাপত্তা জোরদার, চেকপোস্ট বসানোর উদ্যোগ
বিস্ফোরণের পর ফার্মগেট ও খামারবাড়ি এলাকায় পুলিশের টহল ও নজরদারি বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, “সন্দেহভাজন চলাচলকারী ও যানবাহনগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি শুরু হয়েছে। রাজধানীতে নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।”
সংশ্লিষ্টদের প্রতিক্রিয়া
একাধিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক মনে করছেন, এ ধরনের ককটেল বিস্ফোরণ হয়ত রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার কৌশল হতে পারে, বিশেষ করে সামনে নির্বাচন কিংবা বড় ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকলে।
এদিকে, সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। একজন পথচারী বলেন, “এত জনবহুল জায়গায় রাত ১১টার পরও যদি এমন বিস্ফোরণ ঘটে, তাহলে আমরা কতটুকু নিরাপদ?”
নিরাপত্তা বাহিনীর আহ্বান
নাগরিকদের আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। সন্দেহজনক ব্যক্তি বা বস্তু চোখে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ থানায় বা ৯৯৯ নম্বরে জানাতে অনুরোধ করেছে ডিএমপি।
উল্লেখযোগ্য লাইন:
“দুটি বিস্ফোরণস্থল থেকেই হলুদ টেপে মোড়ানো ককটেলের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে।”
“সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তে কাজ চলছে।”
“এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হতে পারে।”
ডিসিকে/এমজেডএইচ