প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ২২:৩২
তদন্ত পুর্বক ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবী হাইমচর বাসীর।
হাইমচর উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার উন্নয়ন প্রকল্পের ২০২১- ২০২২ অর্থ বছরের টেস্ট রিলিফ, কাজের বিনিময়ে টাকা ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির আওতায় নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্যেও অনূকুলে ১ম পর্যায়ে নগদ অর্থ/খাদ্যশস্য (চাল ও গম) উপ বরাদ্দ প্রকল্পের কাজ না করেই লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ কারার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) যোগাসাজসে কোন কোন প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির লোকজন ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে সরকারের লাখ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্ত শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জনিয়েছেন।
|আরো খবর
হাইমচর উপজেলা পিআইও অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে সাধারণ ও বিশেষ কোটায় ১ম কিস্তিতে কাবিখা প্রকল্পের ২৬ লাখ টাকার মূল্যে ৪৪.০০০ মেট্রিক টন চাল, ২৭.৯৪৪ মেট্রিক গম, টিআর প্রকল্পের অনুকূলে ৪ লাখ ৭ হাজার ৬৬৬ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় । যা ১৫/০৩/২০২২ ইং তারিখের মধ্যে কাজ শতভাগ শেষ করার সরকারি নির্দেশ ছিল।
স্থানীয় সংবাদ কর্মীগন সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে দেখেন অধিকাংশ প্রকল্পে কোনো কাজ হয়নি। তবে কাগজে - কলমে শতভাগ কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে ভুয়া মাস্টাররোলের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার যোগসাজসে এসব প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দকৃত অর্থ উত্তোলন করে ভাগবাটোয়ারা করে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে।
প্রকল্প অনুযায়ী খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ২নং আলগী উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডে মীর বাড়ী রাস্তা হইতে সোনা গাজী বাড়ি হয়ে শাহ আলম মিয়াজীর বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা পূন: নির্মাণ না করে কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে কাবিখা প্রকল্পে প্রথম কিস্তি বরাদ্দ দেওয়া ৮ টন চাউল উত্তোলন করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রবীন ব্যাক্তি সোনা গাজী জানান, আমাদের এই রাস্তায় গত ২ বছরেও কোনো কাজ করে নাই । আমার নামে রাস্তার কাজ আসছে আমার বাড়ির সামনে দিয়ে কিন্তু আমি দেখলাম না আজ পর্যন্ত কোনো কাজ করতে। আওয়ামী লীগ সরকারের এই উন্নায়ন কাজ না করে যারা টাকা লুটপাট করে সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট করেছে তাদের কে কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক।
উপজেলার ৩নং আলগী দঃ ইউনিয়নের চরভাঙ্গা ৯নং ওয়ার্ড সৈয়দ পাটোয়ারীর বাড়ি হইতে ৭নং ওয়ার্ড সাহাদাত মাওলানার বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা পূর্ণ নির্মাণে উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত কাবিখা প্রকল্পের ৮ টন চাউল উত্তোলন করা হলেও, রাস্তার কোনো কাজ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় এলাকাবাসী। স্থানীয় আহসানুল্লাহ রাড়ী জানান, আমাদের এই রাস্তাটি বর্ষাকালে জনচলাচলের চরম অবস্থা দেখা দেয়। স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ সাধারন জনগনের চরম ভোগান্তি হয় । তাই আমরা এলাকাবাসীরা নিজের টাকা দিয়ে এই রাস্তাটি কিছু সংস্করণ করেছি। আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, এবং চাঁদপুর ডিসি বরাবর দরখাস্ত প্রেরণ করি এ রাস্তাটির জন্য। এ রাস্তাটিতে কোনদিন ও সরকারের পক্ষ থেকে সংস্করণ করা হয়নি। তাই আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই এই রাস্তাটি যেনো দ্রুত নির্মাণ করে দেয়া হয়। সেই সাথে বরাদ্দের টাকা যারা আত্মসাৎ করেছে তাদের শাস্তি দাবী কামনা করছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে কথা হয় উপজেলা প্রকল্প আাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মাসুদুর রহমান এর সাথে। প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ বিষয় অস্বীকার করে এমন অভিযোগ থাকলে লিখিত দিতে বলেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চাই থোয়াইহলা চৌধুরী বলেন, " কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা বলে সকল বিল স্বাক্ষর করে নিয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান। যেহেতু সেই প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, আমি তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো "।