প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২২, ০০:০০
বালিয়ার ২শ’ টাকা নিয়ে জেলে চাল দেয়ার অভিযোগ
গোডাউন থেকে চাল কম দেয়া হয়, লেবারদের টাকা দিতে হয় : ইউপি চেয়ারম্যান
জাটকা রক্ষায় সরকার বিকল্প খাদ্য সহায়তা হিসেবে নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে বিনামূল্যে চাল বিতরণ করছে। নিষেধাজ্ঞার দুই মাস সময় জাটকা নিধন না করার শর্তে প্রত্যেক জেলে ৪ মাসে ৪০ কেজি করে মোট ১৬০ কেজি চাল পাবে। ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় এই চাল বিতরণ শুরু হয়েছে বিভিন্ন ইউনিয়নে।
|আরো খবর
এদিকে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯নং বালিয়া ইউনিয়নে চাল কম দেয়ার পাশাপাশি প্রত্যেক জেলের কাছ থেকে ২শ’ টাকা করে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে জেলেদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
৫ মার্চ শুক্রবার সকালে সরজমিনে বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে চাল বিতরণকালে জেলেদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১ ও ২নং ওয়ার্ডের অসংখ্য জেলে অভিযোগ করে বলেন, প্রত্যেক জেলেকে ৪০ কেজি করে দুই মাসের ৮০ কেজি চাল একসাথে দেয়ার কথা। কিন্তু দেয়া হয়েছে ৭০ থেকে ৭২ কেজি করে। আর প্রতিটি বস্তা বোঙা দিয়ে ফুটো করে চাল কমিয়ে ফেলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে অগ্রিম ২শ’ টাকা করে নেয়া হয়েছে।
ক্ষুব্ধ জেলেরা আরো বলেন, দুই মাস নদীতে মাছ না ধরার শর্তে সরকার তাদের খাদ্য সহায়তা হিসেবে বিনামূল্যে চাল দিচ্ছে। আর বাকি সবকিছুই তাদের কিনে খেতে হয়। অথচ এরপরেও চাল কম দেয়া এবং বিনিয়মে টাকা নেয়াটা জুলুমের মধ্যেই পরে।
টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাহিদ হোসেন খান বলেন, সবার কাছ থেকে টাকা নেইনি। কিছু কিছু জেলের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। তবে কারো থেকে ২শ’ টাকা, আবার কারো থেকে ১শ’ টাকা করে নেয়া হয়েছে। চাল উঠানোর পরিবহন খরচ পোষাতেই এই টাকা নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল্লা পাটোয়ারী চাল কম দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ৭৮১ জন নিবন্ধিত জেলের জন্যে ৬৩ টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি। কিন্তু গোডাউন থেকে সঠিক পরিমাণে চাল পাওয়া যায় না। আর লেবারকে টাকা না দিলে তারা মাল লোড করে না। তাছাড়া প্রতিটি বস্তার ওজন প্রায় ১ কেজি। এসব কারণে কিছু চাল কম হয়। সরকারিভাবে পরিবহন বাবদ যে খরচ দেয়া হয় তাও অনেক কম।
জেলেদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি যে অনেক জেলের কাছ থেকে মেম্বাররা ২শ’ টাকা করে নিয়েছে। এটি কোনো মতেই ঠিক হয়নি। আমি পরিস্কারভাবে মেম্বারদের বলে দিয়েছি যাতে তাদের টাকা ফিরিয়ে দেয়া হয়। শুধু ফিরিয়ে দিলেই হবে না, তাদের টাকা বুঝে পাওয়ার স্বাক্ষর এনে আমাকে দেখাতে হবে। কোনো মেম্বারের অনিয়মের দায় আমি নেবো না।
উল্লেখ্য, এ বছর জাটকা রক্ষা কর্মসূচি সফল করণে টাস্কফোর্সের সভায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, জেলেদের চাল কম দেয়া যাবে না। কোথাও চাল কম দেয়ার অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।