প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ২৩:২৪
হাজীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন
দলীয় নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচনী মাঠে বিএনপি : আওয়ামীলীগে বিদ্রোহী একাধিক প্রার্থী
হাজীগঞ্জ উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করে বেশীরভাগ ইউনিয়নে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে দলের একাধিক পদধারী। অপরদিকে একাধিক ইউনিয়নে স্বতন্ত্র পদে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী বিভিন্ন প্রতীকে উক্ত নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।
|আরো খবর
বিএনপির দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে পদধারী নেতাকর্মীরা উক্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় বিএনপি কোনো সিন্ধান্ত না নিলেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ২/১ দিনের মধ্যে দলীয় কঠোর সিন্ধান্ত আসছে বলে আওয়ামীলীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এবারের নির্বাচনে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র পরিচয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনী মাঠে বিভিন্ন প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বাংলাদেশ আওয়াম লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ১৯ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের পদধারী ও সমর্থকসহ রয়েছেন ৮ জন আর বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের পদধারী ও সমর্থকসহ রয়েছেন ১১ জন । ইতিমধ্যে এই সকল প্রার্থী স্ব-স্ব প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
জানা যায়, এবারের ইউপি নির্বাচনে উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ তথা নৌকা প্রতীকে ১১ জনকে মনোয়ন দেয় দলটি।
নৌকা প্রতীকের এই ১১ জনের বাইরে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভিন্ন প্রতীকে নির্বাচনে লড়ছেন আওয়ামীলীগের পদ-পদবীধারী ব্যক্তিগন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে রাজারগাঁও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সমর্থক আনারস প্রতীকে মো. রফিক পাটওয়ারী, কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সমর্থক আনারস প্রতীকে মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ফরাজী, হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন যুবলীগের (পূর্ব) সাধারণ সম্পাদক আনারস প্রতীকে ইউসুফ প্রধানীয়া সুমন,বড়কুল পূর্ব ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আনারস প্রতীকে মজিবুর রহমান মজিব নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
এছাড়াও হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান চশমা প্রতীকে সোহরাব হোসেন মিয়াজী, গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান আনারস প্রতীকে রফিকুল ইসলাম মেলেটারী এবং একই ইউনিয়নে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান চশমা প্রতীকে মো. ইউনুছ মিয়া, হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সমর্থক ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোটরসাইকেল প্রতীকে মোহাম্মদ আলী (এম আলী মুজিব) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
অপরদিকে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ২/১টি ইউনিয়ন বাদে বাকী সকল ইউনিয়নে বিএনপির পদ-পদবী কিংবা সমর্থকরা স্বতন্ত্রপ্রার্থী হয়ে বিভিন্ন প্রতীকে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। এর মধ্যে রাজারগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি চশমা প্রতীকে মো. সিদ্দিকুর রহমান, বাকিলা ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক ঘোড়া প্রতীকে মো. জুলহাস মিয়া, একই ইউনিয়নে উপজেলা যুবলদলের যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান আনারস প্রতীকে মিজানুর রহমান মিলন, কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন ঘোড়া প্রতীকে, বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির সদস্য আনারস প্রতীকে নুরুল আমিন হেলাল, হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনারস প্রতীকে মোশারফ হোসেন, গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নে উপজেলা যুবদলের সদস্য ঘোড়া প্রতীকে নেছার আহমেদ, গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক আনারস প্রতীকে মো. নাছির উদ্দিন, হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ঘোড়া প্রতীকে ইমাম হোসেন লিটন নির্বাচন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
আওয়ামীলীগ হয়ে নৌকা প্রতীকের বাইরে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে তাদের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ¦ হেলাল উদ্দিন মিয়াজী জানান, দলীয় প্রতীক চেয়ে যারা মনোনয়ন পায়নি, এদের মধ্যে যারা ভিন্ন প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্ধীতা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আগামি দুই/এক দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম. এ রহিম পাটওয়ারী জানান, কেন্দ্রিয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তাই আমরা দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন বা সমর্থন দেইনি। এখন আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে কেউ যদি নির্বাচনে অংশ নেয়, সেটা তার বা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়।