প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:০৩
রাতের আঁধারে সৃজনকৃত বাগান কেটে ঘরের কাঠামো নির্মাণ
অভিযোগের তীর থানার অফিসার্স মেসের বাবুর্চির দিকে

সন্ধ্যার সময়েই বাগানটি ছিলো সুপারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছগাছালিতে পরিপূর্ণ। কিন্তু রাত পোহানোর পর দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র। সৃজনকৃত বাগানের মধ্যভাগের বড়ো একটি অংশের গাছগাছালি কেটে মাটি ফেলে সেখানে ঘরের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। জমির মালিক পক্ষও নিজেরা সকাল বেলা এসে এ দৃশ্য দেখে আশপাশের বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসা করলেও তারাও কোনো কিছু জানেন না বলে জানান। যদিও এই ঘটনার জন্যে অভিযোগের তীর জমির মালিক নেয়ামত উল্ল্যা ও আরেক মালিক ফরহাদ হোসেন যথাক্রমে মো. ইউনুছ ও সোহরাব হোসেনের দিকে ঠেলেছেন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা ফরিদগঞ্জস্থ সেনাক্যাম্পে অভিযোগ দায়ের করেছেন। একইদিন ইউনুছের বিরুদ্ধে জমি জবর দখলের অভিযোগ এনে সিরাজ নামে আরেকজন ভুক্তভোগী সেনাক্যাম্পে অভিযোগ করেছেন। ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরবড়ালি গ্রামের। ইউনুছ ফরিদগঞ্জ থানায় অফিসার্স মেসে রান্নার কাজ করেন।
|আরো খবর
চরবড়ালি গ্রামের বরকন্দাজ বাড়ির নেয়ামত উল্ল্যা জানান, তিনি তার সৎ দুই ভাইসহ ২৮৭নং চরবড়ালি মৌজার ১৫০নং খতিয়ানভুক্ত ১৬২৯ দাগে বিএস ১২৪নং খতিয়ানভুক্ত ৪১৯৬ দাগে ৬শতক জমির মালিক ছিলেন। ওই দুই ভাই এ জমি আমার কাছে বিক্রি করার পর আমি আমার স্ত্রীর নামে তা লিখে দেই। এই জমি নিয়ে আমাদের কোনো বিরোধ ছিলো না। কিন্তু গত ৩০ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে কে বা কারা আমার সৃজনকৃত বাগানের শতাধিক গাছগাছালি কেটে সাবাড় করে ফেলে। শুধু তাই নয়, ওই স্থানে নতুন করে ঘর তৈরি করেছে। পরদিন খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে এসে তা প্রত্যক্ষ করি। আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলেও তারা কেউই দেখেননি বলে জানান। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, এই কাজের সাথে আমার ভাতিজা ইউনুছ জড়িত। সে ফরিদগঞ্জ থানায় রান্নার কাজ করে। সে এই বড়াই দেখিয়ে আমাকে বিভিন্ন সময় মামলা হামলায় জড়িয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় বহুবার সালিস হলেও ইউনুছ গং তা মানছে না। সর্বশেষ তারা এই ঘটনা ঘটায়।
অন্যদিকে ঔষধ ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেন জানান, তার সাথে কারো জমি সংক্রান্ত বিরোধ নেই। কিন্তু নেয়ামত উল্লাহর জমির সাথে ওই রাতে তার জমির গাছগাছালি কেটে ওই স্থানটি দখল করা হয়েছে। এ কাজে তার বাড়ির সোহরাব তার জমি দখল করেছে।
ঘটনাস্থলে গেলে কথা হয় ওই বাড়ির তছলিম উদ্দিনের স্ত্রী শাহিনুর বেগম, হেসেনের স্ত্রী নাজমা বেগম, বাচ্চুর স্ত্রী খুকি বেগম ও পোল্ট্রি ব্যবসায়ী শামিম হোসেনের সাথে। তারা জানান, আগের দিন সন্ধ্যায় তারা বাগানে গাছগাছালি দেখলেও সকালে উঠে বাগানের মাঝখানে নতুন করে ঘর তোলা দেখতে পান। তবে কে বা কারা করেছে তা তারা জানেন না।
অভিযোগকারী সিরাজ, স্থানীয় আমিন, কালাম খোকনসহ লোকজন জানান, ইউনুছ থানার দাপট দেখিয়ে ইতঃপূর্বে এলাকায় অনেক অপকর্ম করেছে। তার হাতে অনেক লোক হয়রানি হয়েছে।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে ইউনুছ হোসেন জানান, ওই স্থানে আগেই ঘর ছিলো। তিনি ক'টি গাছ উঠিয়ে পাশে লাগিয়ে দিয়েছেন।
অন্যদিকে সোহরাব হোসেন বলেছেন অন্যকথা। তিনি জানান, তিনি বাগানের গাছ অন্যত্র লাগিয়ে নিজেই ঘর তুলেছেন।
এদিকে ইউনুছ হোসেনের বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, ইউনুছ থানার অফিসার্স মেসের রান্নার কাজ করে। তবে সে খণ্ডকালীন হিসেবে কাজ করছে। তার সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে জেনেছি। তবে সে কোনো অপরাধ করলে অবশ্যই আইন অনুযায়ী বিচার হবে।