বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই, ২০২৫  |   ৩২ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৫, ২১:৪২

কচুয়ায় নিজ স্কুলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে শিশু শিক্ষার্থী সামিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় বিভাগীয় মামলার শুনানি চলমান

মো. নাছির উদ্দিন
কচুয়ায় নিজ স্কুলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে শিশু শিক্ষার্থী সামিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় বিভাগীয় মামলার শুনানি চলমান
তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

কচুয়ার ৪১নং তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থী সামিয়া অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান শিক্ষক মাসুক হাসানসহ আট সহকারী শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। চলতি বছর ৩১ জানুয়ারি বিকেলে তদন্ত সাপেক্ষে এসব শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন।

তিনি বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ওই বিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষকের মধ্যে ৮ জন সহকারী শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এটি একটি দুর্ঘটনা। এতে শিক্ষকদের অবহেলা ছিলো। এ কারণে তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আটজন শিক্ষককে দায়িত্বে অবহেলার জন্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রধান শিক্ষক মাসুক হাসানকে বরখাস্তের জন্যে বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ করার পর তাকেও সাময়িক বরখাস্ত করেছেন উপ-পরিচালক স্যার । এছাড়া সুমন মজুমদার নামে কর্মচারীর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক মাসুক হাসানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে আবেদন করার পর তাকেও বরখাস্তের পর বিভাগীয় মামলা চলমান। আগামী বুধবার (৯ জুলাই ২০২৫) এই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। শুনানির পর পরবর্তী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

বিদ্যালয়ের পাঠদান ও বরখাস্তকৃত শিক্ষকদের বিষয়ে জানতে চাইলে কচুয়ার নবযোগদানকৃত শিক্ষা অফিসার শাহীনা আক্তার বলেন, অগ্নিদগ্ধ হয়ে শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান শিক্ষক মাসুক হাসানসহ আটজন সহকারী শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছে। শুনানি শেষে তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আর বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম চলমান রাখার জন্যে অন্য বিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষককে ডেপুটেশন দেয়া হয়েছে।

বিদ্যালয়ের বখাস্তকৃত শিক্ষকরা হলেন : প্রধান শিক্ষক মাসুক হাসান, সহকারী শিক্ষক ফারুক হোসেন, জসিম উদ্দিন, সাহিদা আক্তার, সুমি আক্তার, রোকেয়া আক্তার, কাজী শাকিরীন, ফয়েজুন নেছা ও ফাতেমা আক্তার। সহকারী শিক্ষিকা হাফসা আক্তার ওইদিন ছুটিতে থাকায় তাকে বরখাস্ত করা হয়নি।

উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি সকালে তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে খেলা করছিল একই বিদ্যালয়ের প্রাক প্রাথমিক শ্রেণির শিশু শিক্ষার্থী সামিয়া। ওইসময় বিদ্যালয় আঙ্গিনায় ময়লার স্তূপে আগুন দেয় বিদ্যালয়ের কর্মচারী সুমন মজুমদার। সেখানে খেলার ছলে একটি প্লাস্টিকের বলপেনে আগুন ধরায় আরেক শিক্ষার্থী। দুষ্টুমির ছলে এক পর্যায়ে আগুন সামিয়ার পরনে থাকা কাপড়ে লেগে যায়। এতে দগ্ধ হয়ে সামিয়ার শরীরের ৭০ ভাগ আগুনে ঝলসে যায়। ঘটনার পর সামিয়াকে প্রথমে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাকে ঢাকাস্থ জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়। সেখানে পাঁচদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় গেলো ২৬ জানুয়ারি মারা যায় শিশু শিক্ষার্থী সামিয়া।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়