শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   উপদেষ্টা ডিসি ইউএনও'র খাস লোক পরিচয়ে প্রতারণা।। তৃতীয় লিঙ্গের একজন আটক।
  •   র‌্যাবের অভিযানে ১৪৬ বোতল ফেন্সিডিলসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী আটক।
  •   মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় লাশ উদ্ধার
  •   কড়াইল বৌ-বাজার বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট
  •   বাকৃবিতে শিক্ষকদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণ

প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:০২

বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারে বিজয় দিবস উদযাপন

চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট
বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারে বিজয় দিবস উদযাপন
ছবি : সংগ্রহীত

বৈষম্যহীন নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর ২০২৪) চাঁদপুর জেলার সর্বত্র বিজয়ের ৫৩তম বার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে।

১৯৭১ সালের পর ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক জুলাই (২০২৪) বিপ্লবের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের বৈষম্যহীন দেশ গড়ার আহ্বান এবং জাতীয় ঐক্যের স্লোগান জাতিকে ইতোমধ্যে উদ্দীপ্ত করে তুলেছে। ফলে এবারের বিজয় দিবস উদযাপন হয়ে উঠে দেশ গড়ার প্রত্যয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার বিজয় দিবস, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাম্য ও সামাজিক মূল্যবোধের বাংলাদেশ গড়ার বিজয় দিবস।

দেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এবার ভিন্ন আবহে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন বিজয় দিবসের নানা আয়োজন করেন।

সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, ৩১ বার তোপধ্বনি ও মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় সারা দেশের মতো চাঁদপুর জেলাতেও মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়।

সোমবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে চাঁদপুর শহরের লেকের পাড়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য 'অঙ্গীকার' বেদীতে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন ও পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব, পিপিএম-এর নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণ কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর নৌ পুলিশের পক্ষে এসপি সৈয়দ মোশফিকুর রহমান, জেলা পরিষদের পক্ষে জেলা প্রশাসক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। চাঁদপুর পৌরসভার পক্ষে প্রশাসক মো. গোলাম জাকারিয়া শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

এরপর পর্যায়ক্রমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সদর উপজেলা প্রশাসন, চাঁদপুর প্রেসক্লাব, সিভিল সার্জন কার্যালয়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, সড়ক বিভাগ, এলজিইডি চাঁদপুর, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর চাঁদপুর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চাঁদপুর, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চাঁদপুর, জেলা মৎস্য দপ্তর ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চাঁদপুর।

এছাড়ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতি, চাঁদপুর সদর মডেল থানা, চাঁদপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ, চাঁদপুর পৌর কর্মচারী সংসদ, জাতীয় মহিলা সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

চাঁদপুর জেলা বিএনপি অফিসের সামনে থেকে সকাল ৯টায় বিজয় দিবসের র‌্যালি নিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের নেতৃত্বে 'অঙ্গীকারে' পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় জেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতা-কর্মী ‌র‍্যালিতে ও শ্রদ্ধা নিবেদনে অংশগ্রহণ করেন।

একে একে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক ও পেশাজীবীসহ বিভিন্ন সংগঠন এবং সর্বস্তরের জনতা শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।

সকাল ৯ টায় চাঁদপুর সার্কিট হাউসে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

পরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চাঁদপুর ক্লাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংবর্ধনা, চাঁদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী বিজয় মেলা এবং আলোচনা সভা, বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হয়। সন্ধ্যায় লেডিস ক্লাবের আয়োজনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সহধর্মিণী মাহমুদা জাহান পর্না। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যগণ এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পলাতক স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের মধ্য দিয়ে জাতি নতুন বাংলাদেশ গড়ার দৃপ্ত শপথে এবারের মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে।

বিগত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে থাকা স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়ে শেখ হাসিনার সরকার রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের রাজপথে জনবিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে উৎখাত হয়। ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর নিপীড়ন, গুলি চালিয়ে আন্দোলন দমন, গুম-খুনসহ নির্যাতনের বিরুদ্ধে গণবিস্ফোরণ ও ক্ষুব্ধ জনতার রাজনৈতিক রোষানলের পড়ে তিনি (শেখ হাসিনা) ভারতে পালিয়ে যান।

হাসিনা সরকারের পতনের পর, বাংলাদেশের নবযাত্রায় জাতি নতুন উদ্যম ও উদ্দীপনা নিয়ে এই প্রথম দিনটি পালন করেছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর অধিকাংশ দেশবাসী এ সময়টাকে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ বলেও অভিহিত করছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী প্রথম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ভাষণ দেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়