প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:৪৩
সাব সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন জহিরুল হক পাঠানকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন
মুক্তিযুদ্ধের ২নং সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার ও পাঠান বাহিনীর প্রধান অনারারী ক্যাপ্টেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল হক পাঠান (৯০) ২ দফা জানাজা শেষে বোরবার সকাল ১১ টার দিকে হাজীগঞ্জের অলিপুরের বনেদি পরিবারের পাঠান বাড়ির পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে গত শনিবার বিকেল রাজধানী জুরাইনের নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তিনি মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন কন্যা, নাতি-নাতনিসহ বহু আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন।
|আরো খবর
মরহুমের হাতে গড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অলিপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের ২ য় জানযার পূর্বে পৃথকভাবে গার্ড অব. অনার প্রদান করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে ক্যাপ্টেন ফারহানের নেতৃত্বে কুমিল্লা সেনানিবাসের চৌকস সেনা সদস্যরা। পরে সেনাবাহিনী প্রধানের পক্ষে মরহুমের কফিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করা হয়।
২য় অংশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গাডর্ড অব অনারের নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ চাঁদপুর জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল। এর পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে তাকে শেষ বিদায় সম্মাননা জানান।
জানযার নামাজের পূর্বে স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক গাজী মাইনুদ্দীন, সাবেক নৌ কমান্ডো, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ আহাম্মদ মজুমদার, হাজীগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. আবু তাহের, সদর ইউপি চেয়ারম্যান ইউছুফ প্রধানীয়া সুমন, পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন শিল্পপতি জাভেদ ইকবাল পাঠান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাজীগঞ্জ সার্কেল পঙ্কজ কুমার দে, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) গোলাম ফারুক মুরাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা অজিত কুমার সাহা, আবুল বাসার, হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ তদন্ত মিন্টু কুমার দত্ত মিঠু।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির হক পাঠানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন চাঁদপুর-৫ (হাজিগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনের ৫’বারের সংসদ সদস্য মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম। এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন এবং মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
উল্লেখ্য জহিরুল হক পাঠান ১৯৩৭ সালের ৮ জানুয়ারি হাজীগঞ্জ উপজেলার অলিপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত পাঠান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আবদুল গণি পাঠান, মাতা মরহুমা তাহেরুন নেছা, স্ত্রী নার্গিস হক। তিনি আট ভাই-বোনের মধ্যে সপ্তম এবং তিন সন্তানের জনক। বর্তমানে তিনি নার্গিস ভিলা, ৫৯ রজ্জব আলী সরদার রোড, পূর্ব জুরাইন, কদমতলী থানা, ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন। শৈশবে তিনি অলিপুর প্রাইমারি স্কুলের লেখাপড়া শেষ করে বলাখাল হাই স্কুলে ভর্তি হন এবং দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় ১৯৫৩ সালের জানুয়ারি মাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে বেঙ্গল রেজিমেন্ট ছিল একটি দক্ষ, চৌকস সামরিক বাহিনী, যা বাঙালিদের সমন্বয়ে গড়ে উঠে। পাকিস্তানিদের বিমাতাসুলভ আচরণ সহ্য করতেন না। ১৯৬৫ সালের পাকভারত যুদ্ধে প্রিয় মাতৃভূমির স্বার্থে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন জনাব জহিরুল হক পাঠান।