প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০:০৭
মৈশাদীতে বীর নিবাস নির্মাণে ভারপ্রাপ্ত ঠিকাদারের গড়িমসি না অন্য কিছু
প্রধানমন্ত্রী অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে শেষ জীবনে একটি শান্তির আশ্রয়ের জন্য সরকার ’বীর নিবাস’ নামে একটি ঘর প্রদান করেছেন। সে তালিকায় একটি ঘর জুটেছে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ খানের। সে ঘর নির্মান কাজের শুরু হওয়ার কথা ছিল জুলাই মাসে। দিনের পর দিন যাচ্ছে আমার ঘরটি হচ্ছে না। মৈশাদীতে বীর নিবাস নির্মাণে ঠিকাদারের গড়িমসি না অন্য কিছু এ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে।
|আরো খবর
ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানায়, বীরনিবাস নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষ সকল কাগজপত্র দেখেই বীর নিবাসের ঘর তৈরির অনুমোদন দেন। ঠিকাদারের লোকজন জুলাই মাসের ১৩ তারিখ আমাদের বাড়িতে আসেন এবং ২০ জুলাই এর মধ্যে কাজ ধরবেন বলে মান। কিছুদিন পরই ঠিকাদারের লোকজন বলেন, মালামালের দাম বেড়ে গেছে। ইট-বালির কাস্টিং খরচ বেশি। এভাবে কয়েকদিন যাওয়ার পরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করি। পরে তিনি ঠিকাদারকে বলে দেন কাজ শুরু করার জন্য। ঠিকাদার কাজ শুরু করার জন্য ইট, বালী এনেছেন। এখানে আমাদের ঘর ছিল। ঠিকাদার কাজ করবে বিধায় আমাদের পুরাতন ঘর বিক্রি করে দিয়েছি। ঠিকাদার ২৭ আগস্ট কাজ শুরু করবে বলে আমরা মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানর আয়োজন করেছি। ওইদিন আর ইঞ্জিনিয়ার, ঠিকাদার এবং রাজ মেস্ত্রী কেহই আসেনি। পরে ঠিকাদার জানালো ৪ সেপ্টেম্বর কাজ ধরবেন। সে দিনও আসেন নি। পরেরদিন ঠিকাদার মোবারক আমাদের জানান আমাদের কাজ বন্ধ রাখার জন্য ইউনিও অফিসে অভিযোগ দিয়েছে। আপনারা উপজেলায় গিয়ে কথা বলুন। এদিকে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ খানের স্ত্রী প্যারালাইসিস এর রোগী। আমাদের থাকা-খাওয়া এবং বাথরুম সহ বিভিন্ন সমস্যায় আমাদের দিনপাত করতে হচ্ছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাস নির্মাণ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় সদর উপজেলা হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের নানান অভিযোগ শুনেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনও। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাজের অনিয়মে ঠিকাদারকেও কাজের অগ্রগতি বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এ সময় সেমিনার কক্ষে মূল ঠিকাদার কাজ না করে অন্য ঠিকাদারকে কাজ দিয়েছেন মর্মে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষোভ করে বলে উঠেন ভারপ্রাপ্ত ঠিকাদার দিয়ে আমাদের নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে।
ঠিকাদার মোঃ মোবারক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়েছে বিধায় কাজ বিলম্ব কর ছিলাম। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ খানের ভাবী হোসনেয়ারা কাজ বন্ধ রাখার অভিযোগ করেছেন ইউনও বরাবর। এ জন্যই কাজ বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে মৈশাদী ইউনিয়ন ভূমি অফিস তওশিলদার মিশু দেবনাথ জানান, সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ হেলাল চৌধুরী স্যারের নির্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তবে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ খান ওই ভিটে বাড়িতে ৩০ বছরের অধিক বসবাস করেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। হোসনেয়ারার অভিযোগের সাথে মিল পাচ্ছিনা। আমরা উভয় পক্ষকে নিয়ে রোববার ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বসবো। তিনি আরো জানান, আমরা অনেক আগেই এ ভূমির কাগজ পত্র পর্যালোচনা করে বীর নিবাসের জন্য সুপারিশ করেছি। সে সুবাদেই বীর নিবাসের অনুমোদন মিলেছে।