রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

পথের বাউল
অনলাইন ডেস্ক

নির্ঘুম রাত অনেক দিন হলো সঙ্গী হয়েছে। প্রথম দিকে বিছানায় চুপচাপ শুয়ে ঘুমানোর ব্যর্থ চেষ্টা করতাম। স্বস্তির বদলে অস্বস্তি বাড়ত। বাধ্য হয়ে বাদ দিয়েছি। এরপর শুরু হয় বারান্দায় পায়চারি। রাতের অন্ধকারে মানিপ্লান্টের পাতা ছুঁয়ে ভিন্ন কোনো অনুভূতি খোঁজার চেষ্টা। কোনো দিন নিজেই কফি বানিয়ে বেতের চেয়ারে শরীরটাকে এলিয়ে দিতাম। চোখ বন্ধ করলেই অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটতো। বিদায় নেওয়া বন্ধুরা একে একে হাজির হতো। তাদের সঙ্গে অল্পবিস্তর কথা বলতাম। কে কেমন আছে জিজ্ঞেস করলে জবাব না দিয়ে একটা কথা বলে পাশ কেটে যেতথ ‘আমাদের কথা বাদ দে, তুই তো খুব সুখেই আছিস!’

সুখ বিষয়টির সঙ্গে আদতে আমার তেমন সখ্য নেই। ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়ে জীবনসংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার নাম কি সুখ? আদরের ছোট বোনটাকে নিরাপত্তা দিতে না পেরে পড়ালেখা বন্ধ করে তড়িঘড়ি বিয়ে দেওয়ার নাম কি সুখ? ঘুম না হওয়া দীর্ঘ রাতে একা একা পায়চারি করার মধ্যে কিসের সুখ?

অনেকের ভিড়ে ব্যতিক্রম কেবল তমা। ওর সঙ্গে আলাপের সময়টুকু বেশ কাটে।

‘তারপর কী খবর তমাল?’

‘এই তো রোজকার মতো জেগে আছি। রাতকে পাহারা দিচ্ছি।’

‘রাতজাগা বিষয়টা কিন্তু খারাপ না। নিশুতি রাতের অন্য রকম আবেদন আছে।’

‘আমি তো তোর মতো সাহিত্যে পড়িনি। বিজ্ঞানের নীরস-নিকষ বিষয়ে পড়তে গিয়ে আবেগটাকেও ভোঁতা করে ফেলেছি।’

‘আবেগ কখনও ভোঁতা হয় নাকি রে! তোর দেখার চোখ অনেকের চেয়ে ভালো।’

‘তাই বুঝি তোকে চিনতে এত দেরি হলো!’

‘তবুও তো চিনেছিস।’

‘সত্যিই কি চিনতে পেরেছি? তবে এই অনাকাক্সিক্ষত বিচ্ছেদণ্ডব্যথা কেন?’

‘একসঙ্গে চার দেয়ালে বন্দি থাকা ছাড়াও কিন্তু কাছাকাছি থাকা যায়!’

‘এভাবে হুট করে চলে গেলি কেন? আমার সঙ্গে থাকতে তোর কোনো আপত্তি ছিল?’

‘এতে আমার হাত ছিল না। যখন পাশেই ছিলাম সেভাবে কখনও চেয়েছিস? একবার চেয়েই দেখতি। আর তোর সঙ্গে পরিচয়ের পর ক'টা দিনই বা সুস্থ ছিলাম বল!’

‘তুই আর কখনও ফিরবি না, ভাবতেই পৃথিবীটা বিষাদে ভরে যায়। তোর জন্য আমিও কিছু করতে পারিনি রে! যদি পারিস আমাকে ক্ষমা করে দিস।’

‘এভাবে বলছিস কেন? নিয়তির দায় নিজের ওপর টেনে অযথা কষ্ট পাবি না।’

‘আচ্ছা, আর সবার ধারণা আমি বড্ড সুখে আছি। তোরও কি তাই মনে হয়?’

‘কারও মনে হওয়া-না হওয়ায় কিছু আসে-যায় না। তবে কতক ব্যাপার কখনও বাদ দিস না। এটা আমার অনুরোধ।’

‘তেমন কোনো ব্যাপার কি সত্যিই আছে?’

‘কেন, পথের বাউল হওয়ার ইচ্ছেটার কথা ভুলে গেলি!’

‘সে তো তুই থাকলে হওয়ার চেষ্টা করে দেখতাম। এখন আর আগ্রহ পাই না।’

‘কী বলিস! আমি নেই তাতে কী! পথ তো আছে! পথের ডাক সবাই শুনতে পায় না। তুই পারবি।’

‘তুই নেই, আমি হেঁটে কার কাছে যাব, কোথায় যাব?’

‘সব কাজে উদ্দেশ্য খুঁজতে নেই। একবার নেমে পড়, দেখবি পথই তোকে আপন করে নেবে।’

আমি হাঁটছি। একা। পুরো পৃথিবীকে একপাশে সরিয়ে। কোনটার সম্মোহন বেশিথ ওই দূরের তারা ঝলমলে আকাশের নাকি এই পিচঢালা ফাঁকা রাজপথের? তমার কাছে শুনতে হবে। ও হয়তো আগের মতোই বলবে, সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নেই!

* পাঠক ফোরাম বিভাগে লেখা পাঠানোর ই-মেইল

[email protected]

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়