শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

হাজীগঞ্জের একজন সৎ আর কর্মঠ কর্মকর্তার বদলি
কামরুজ্জামান টুটুল ॥

সরকারি বা বেসরকারি কর্মকর্তা বহুজনে হয়। কাজ পাগল ক’জনে হয়। যারা কাজ পাগল তারা কর্মস্থলে বেঁচে থাকেন। কর্মস্থলে নিজগুণে বেঁচে থাকা একজন সরকারি কর্মকর্তা হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা। প্রায় ১৪ বছর পর সম্প্রতি গাজীপুরে বদলি হয়েছেন। তাঁর বদলিতে হাজীগঞ্জের লোকজন কেঁদেছে। এই কাঁদার মূল কারণ তাঁর সততা, আদর্শ আর নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাওয়া। কাজ করার সুবাদে পেয়েছেন জনপ্রশাসন পদকসহ অনেক সম্মান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গোলাম মোস্তফা নিজ গুণে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, অধঃস্তন কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সেবাগ্রহীতাদের সাথে রেখেছেন সুসম্পর্ক। হাজীগঞ্জ ছাড়ার সময় পেয়েছেন যথেষ্ট সম্মান। তিনি গত ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বদলিজনিত কারণে হাজীগঞ্জ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিয়েছেন। গত ১২ নভেম্বর রোববার গাজীপুর জেলার টঙ্গি উপজেলায় একই পদে যোগদান করেছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৯ সালের ৫ অক্টোবর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসাবে হাজীগঞ্জে যোগদান করেন মোঃ গোলাম মোস্তফা। যোগদানের পর থেকে তিনি কখনো সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন নি। সকলকে নিজের আপন মানুষ ভেবে কাজ করেছেন এবং সবাইকে এক নজরে দেখেছেন। তাই, দীর্ঘ সময়ে তিনি অনেক স্বপ্ন দেখেছেন। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে সেসব স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারেন নি।

অবশেষে কিছু সংখ্যক জনবল পেয়ে ২০১৭ সাল থেকে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে ‘প্রেগনেন্ট মাদার কেয়ার অ্যাপস’, ‘নিরাপদ মাতৃত্বে আমরা সবাই’, ‘আলোকিত কিশোর-কিশোরী’, ‘আজকের সুস্থ কিশোরী ও নিরাপদ মাতৃত্ব আগামি দিনের নিরাপদ বাংলাদেশ’ এবং ‘নাইওর’ নামের ইনোভেশন কাজ করে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেন। এর মধ্যে ‘প্রেগনেন্ট মাদার কেয়ার অ্যাপস’-এর জন্য তিনি জনপ্রশাসন পদক লাভ করেন।

পাশাপাশি জেলা ও উপজেলায় একাধিকবার শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার পেয়েছেন মোঃ গোলাম মোস্তফা। নিজস্ব উদ্যোগে এই ইনোভেশন কাজগুলো করার কারণে বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছেন গর্ভবতী মায়েরা। নিয়মিত উঠান বৈঠক, চেকআপ, তদারকি ও নরমাল ডেলিভারির কারণে মায়েরা শারীরিক ও মানসিক এবং তাদের পরিবার অর্থনৈতিক ক্ষতি থেকে মুক্তি পায়। সর্বোপরি পরিবার সুস্থ মা ও শিশু পেয়েছে। এতে কিছুটা হলেও কমে এসেছিল সিজারিয়ান মায়ের সংখ্যা।

তিনি প্রেগনেন্ট মাদার কেয়ার অ্যাপসের মাধ্যমে উপজেলার সকল গর্ভবর্তী মায়ের তালিকা করেন। এই তালিকায় মায়েদের সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য দিন-তারিখ উল্লেখ ছিল। সেই দিন-তারিখের সূত্র ধরেই প্রসবকালীন জটিলতা ও ঝুঁকি এড়াতে গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসবোত্তর সেবা কার্যক্রম শুরু করেন। তার আগে উপজেলার সকল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোকে ২৪/৭ ডেলিভারির উপযোগী করে তুলেন।

সরকারি চাকুরিজীবী হিসেবে বদলিজনিত কারণে কোনো জেলায় বা উপজেলায় স্থায়ী হওয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে এক প্রতিক্রিয়ায় মোঃ গোলাম মোস্তফা বলেন, আমার কর্মজীবনে সেরা সঞ্চয় হিসেবে পেয়েছি আপনাদের ভালোবাসা। দীর্ঘদিন এই উপজেলায় ছিলাম। কর্মরত অবস্থায় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সহকর্মী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকসহ সকলের সার্বিক সহযাগিতা পেয়েছি। ভালো থাকুক সবাই এই কামনা রইলো।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়