প্রকাশ : ১৬ মে ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর শহরের ষোলঘর পাকা মসজিদ এলাকায় সম্পত্তির সীমানার বিরোধের জেরে আপন ছোট ভাই নূরুল ইসলাম গাজীকে মেরে আহত করে বড় ভাই ফজলুল হক গাজী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপরদিকে ছোট ভাইকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল এনে ভর্তি করান।
এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে দুই দফা পুলিশ গেলেও বড় ভাই ফজলুল গাজী তৃতীয় দফা ছোট ভাইয়ের পথ গতিরোধ করে অতর্কিত হামলা করে গুরুতর আহত করেছেন। ওই বাড়ির মুজাম্মেল হক জানান, ফজলুর গাজীর ছোট ভাই নূরুল হক গাজীর বাম চোখে ঘুষি মারলে চোখ লাল হয়ে যায় এবং চোখের কোঠা ফুলে যায়। এছাড়া মাথায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আমরা তাকে তার স্ত্রীসহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।
গত ১৪ ও ১৫ মে রোববার সকালে চাঁদপুর পৌরসভার ১৩নং ওয়ার্ডস্থ ষোলঘর পাকা মসজিদ এলাকার গাজী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে আহত নূরুল ইসলাম গাজী চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিয়ে হামলাকারী বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
আহত নূরুল ইসলাম গাজী ও তার পরিবারের লোকজন জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের বাড়ির সম্পত্তির পাশের সীমানা নিয়ে তার বড় ভাই ফজলুল গাজীদের সাথে বিরোধ ও মনোমালিন্য চলে আসছে। তিনি জানান, তারই সূত্র ধরে ১৪ মে শনিবার সকালে আমার বড় ভাই ফজলুল গাজী, তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম এবং ছেলে খোকন গাজী আমার পরিবারের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় আমরা চাঁদপুর মডেল থানায় অবগত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে এবং উভয় পক্ষকে সমঝোতা করে দিয়ে যায়। কিন্তু তারা থানা পুলিশের সেই সমঝোতাকে অমান্য করে ঘটনার পরদিন রোববার দুপুর ১টায় আমি আমার বাড়ি থেকে ষোলঘর পাকা মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার পথে বড় ভাই ফজলুল গাজীসহ তার পরিবারে লোকজন আমার পথ আটকে আমার ওপর আবারও অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তারা আমাকে একা পেয়ে কিল-ঘুষি, থাপ্পর মারে, আমার বাম চোখে আঘাত করে ও নীলা-ফুলা, গলায় জখম করে। হামলার সময় আমার স্ত্রী আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তার ওপরও হামলা চালায় এবং আমার স্ত্রীর গলায় থাকা স্বর্ণের নেকলেস নিয়ে যায়। পরে আমার অবস্থা বেগতিক দেখে আমার বাড়ির লোকজন আমাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। অথচ তিনি আমাকে এবং আমার পরিবারের ওপর এতোটা হামলা চালিয়ে আহত করার পর ঘটনার মিথ্যে কাহিনী সাজাতে নাটকীয়তা করে শুধু শুধু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এ বিষয়ে ফজলুল গাজী জানান, আমাদের বাড়ির সীমানা নিয়ে আমার ছোট ভাইয়ের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছে। গতকাল বাড়িতে পুলিশ আসায় আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে আমার সাথে খারাপ আচরণ করে। এজন্যেই তাকে মেরেছি। সেও আমাকে মারধর করে। ‘আপনাকে মারধর করলে আপনার শরীরেতো কোনো চিহ্ন দেখা যায় না’ এমন প্রশ্ন করলে তিনি কথা বলতে নারাজ।
এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নুরুল ইসলাম গাজী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১টা ২০ মিনিটে। তার এক ঘণ্টা পর ফজলুল হক গাজী ভর্তি হয়েছেন। তবে তিনি বলেছেন, তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ, এজন্যে তাকে ভর্তি দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, আমি এ বিষয়টি জানি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি এবং আজ নুরুল হক গাজী একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।