ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, বর্তমান উপজেলা বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব এমএ হান্নানের বিরুদ্ধে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ প্রচারের প্রতিবাদে ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপি এবং বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন রকম প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি শরিফ মোঃ ইউনুছ সেইদিনকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি দুই বারের বিএনপির এমপি মনোনয়ন প্রাপ্ত আলহাজ্ব এমএ হান্নানের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি কুচক্রী মহল তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে, শহীদ জিয়ার সমাধিস্থলে ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্যেশ্যমুলক মিথ্যা ভিত্তিহীন বানোয়াট খবর প্রচার করে। ফরিদগঞ্জ বিএনপি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। বিএনপিতে টাকার বিনিময়ে কাউকে মনোনয়ন দেয়া হয় না। বিএনপিতে যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে মনোনয়ন প্রদান করেন। সরকারের দালাল মিডিয়া এই ধরনের মিথ্যা ভিত্তিহীন খবর প্রচার করে বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। ফরিদগঞ্জের বিএনপি আলহাজ্ব এমএ হান্নানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছে।

অন্যদিকে সেদিনকার ঘটনাকে স্বচক্ষে দেখা ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান দুলাল বলেন, ১১মে বুধবার দুপুরে রাজধানীতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ। শ্রদ্ধা নিবেদনের কার্যক্রম শেষে আসার সময় ‘সময় টেলিভিশনে’র রিপোর্টার সালেহীন, এমএ হান্নান সাহেবসহ বিএনপির অন্যান্য নেতাণ্ডকর্মীর সঙ্গে গায়ে পড়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে খারাপ ব্যবহার করে। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনারা দেখেছেন। তবে দুঃখের বিষয়, পরবর্তীতে এ ঘটনা নিয়ে ভিডিও এডিটিং করে মিথ্যা-ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রচার করা হয়। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, কোনো মিডিয়ার মালিক পক্ষ বা সংবাদ সংস্থা চায় না কোনো রকম মিথ্যা সংবাদে ওই মিডিয়ার দুর্নাম হোক। তিনি সেদিনকার ঘটনার একজন রাজসাক্ষী হয়ে বলেন, সময় টিভি একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে কাটছাঁট করে এ ধরনের মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করবে, যা বিশ্বাসযোগ্য নয়। কিন্তু সেদিনকার রিপোর্টার সালেহীন যে ঘটনার জন্ম দিলেন, সেই ঘটনার জন্য গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের একেবারেই নিচু করে ফেললেন। তিনি আশা করেন, সময় টিভি এই মিথ্যা সংবাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করবে। তিনি আরো বলেন, আলহাজ্ব এমএ হান্নান একজন জনপ্রিয় লোক এবং দানশীল ও দানবীর লোক। এ কথা বিএনপির হাইকমান্ডের অনেকে জানেন। তাঁর জনপ্রিয়তা যাচাই-বাছাই করেই তাঁকে বিএনপি দুবার নমিনেশন দেয়। সেদিনকার ঘটনাকে করিয়েছেন সেটা এখন আর আমাদের এবং ফরিদগঞ্জের মানুষের বুঝতে বাকি নেই। সময় টিভির সেই মিথ্যা সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

চাঁদপুর জেলা যুব দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ মিয়াজী তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থল থেকে চলে আসার সময় ঐ সাংবাদিক হান্নান সাহেবকে পিছু নিয়ে তাঁকে উদ্দেশ্য করে বার বার নোংরা ও উস্কানিমূলক বাক্য ব্যবহার করে। এ সময় উপস্থিত নেতাণ্ডকর্মীদের সাথে ঐ সাংবাদিকের কথা কাটাকাটি হয়। ঐ সাংবাদিককে সিনিয়র নেতারা অনেক বুঝনোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু ঐ সাংবাদিক বার বার ধমকের সুরে থ্রেটমূলক কথা বলতে থাকেন। আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাক্ষী। আমি ঐ বেয়াদব সাংবাদিকের অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে তাৎক্ষণিক ২:৪১ মিনিটের একটি ভিডিও রেকর্ড করি। যা পরবর্তীতে সকলে দেখেছে। তখন ঐ সাংবাদিক আমার সাথেও ব্যঙ্গাত্মক ও থ্রেট মূলক হুঙ্কার দেয়। আমার ভিডিও তে তার প্রমাণ পাবেন। ঐ সাংবাদিকের ভিডিওটি ছিলো প্রায় ১০ মিনিটের। কাটছাঁট করে জোড়াতালি দিয়ে ১:৪২ সেকেন্ড সময় টিভিতে দেখিয়েছে। তার পুরা ভিডিওতে ও আমার রেকর্ড করা ১:৪১ মিনিটের ভিডিও প্রমাণ পাবেন। সর্বসাকুল্যে বোঝা যাচ্ছে, পুরো ঘটনাটি ঐ সাংবাদিকের পূর্ব পরিকল্পিত। আমি ঐ সাংবাদিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করি।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা পৌর বিএনপির সভাপতি আমানত হোসেন গাজী বলেন, সেইদিনকার ঘটনা আমার স্বচক্ষে দেখা। এ ঘটনা এবং পরে সময় টিভিতে প্রচারিত সংবাদের সাথে মিলিয়ে দেখলাম এটা হান্নান সাহেবের এন্টি পক্ষের কাজ। এন্টি পক্ষ ভেবেছিল হান্নান সাহেবকে সাংবাদিক দ্বারা বিচলিত করে একটি মিথ্যা নিউজ সাজাবে এবং আগামীতে হান্নান সাহেব যেন নমিনেশন না পায় সেই রকম কিছু দাঁড় করাবে। কিন্তু আমাদের পক্ষের যারা ছিল তারাও সেখানে ভিডিও করাতে সময় টিভির ওই রিপোর্টারের মিথ্যা ও পরিকল্পিত নিউজ সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে যায়।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মহসিন মোল্লা তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক আলহাজ্ব এমএ হান্নান সাহেবের সাথে যে ঘটনা ঘটেছে তা সম্পূর্ণই পূর্বপরিকল্পিত এবং ঐদিনকার ঘটনার ভিডিও অবলোকন করে বুঝতে পেরেছি, ওই রিপোর্টারকে অবশ্যই ভাড়া করে এখানে পাঠানো হয়েছে। ১০ মিনিটের ভিডিওকে কাটছাঁট করে এক মিনিট কয়েক সেকেন্ডের মিথ্যা বানোয়াট রিপোর্ট তৈরি করে সময় টিভিতে প্রচার করা হয়। ওই মিথ্যা রিপোর্টের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আবদুল মতিন জানান, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তাবক অর্পণ করতে গিয়ে তথাকথিত সাংবাদিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফরিদগঞ্জের আপামর জনসাধারণের প্রিয় মানুষ, ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, বর্তমান বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক দানবীর আলহাজ এমএ হান্নান ভাইয়ের সাথে যে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও ভিত্তিহীন-বানোয়াট-মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রচার করেছে, আমি সময় টিভির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তদন্ত করে ওই সাংবাদিকের বহিষ্কার চাই এবং সময় টিভি ঐ মিথ্যা সংবাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করবে এই দাবি জানাচ্ছি।

এছাড়াও ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মহল থেকে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গত ১১ তারিখের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিন্দার ঝড় বইছে।

উল্লেখ্য, গত ১১ তারিখ চাঁদপুর জেলার নবগঠিত বিএনপির কমিটি ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপির নেতৃবৃন্দ ঢাকাস্থ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নেতাণ্ডকর্মী ও সমর্থকবৃন্দ চলে আসার সময় কথিত এক সাংবাদিক ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক আলহাজ্ব এমএ হান্নানের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করতে থাকেন। পরে ওই সাংবাদিক সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সময় টিভিতে একটি মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেন। যা ওই ঘটনার পুরো ভিডিওটি দেখলে সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হবে।