শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

আজ শ্যামা দেওয়ালী কালী পূজা ও দীপাবলী
বিমল চৌধুরী ॥

আলোর রশ্মি ছড়িয়ে আজ মধ্যরাতে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে শ্রী শ্রী শ্যামা দেওয়ালী কালী পূজা ও দীপাবলী (দীপান্বিতা)। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ শারদীয় দুর্গোৎসব শেষে বৃহৎ উৎসব হলো শ্রী শ্রী শ্যামা দেওয়ালী কালী পূজা। এই উৎসব সম্পন্নে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ব্যাপক আয়োজন সকল পূজা মণ্ডপেই পরিলক্ষিত হচ্ছে উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে। সকলেই কালীমাতার আশীর্বাদ কামনায় পূজার আয়োজন ইতিমধ্যে শেষ করেছেন হৃদয়ের ভক্তি আর শ্রদ্ধা দিয়ে। দেবী সন্তুষ্টিতে তারা সাজিয়ে তুলেছেন পূজা মণ্ডপসহ আশ-পাশের পরিবেশ। স্থাপন করেছেন সুসজ্জিত প্যান্ডেল আর তোরণ। জ্বালিয়েছেন লাল, নীল হরেক রকম বাতি। যার আলোর রশ্মি চারিদিক ছড়িয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে দর্শনার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের।

দুর্গাপূজার পর অন্যতম উৎসব হলো কালী পূজা। যে সকল পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে, সে সকল পূজা মণ্ডপসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনেকেই আজ ব্যক্তি উদ্যোগেও এই পূজার আয়োজন করেছেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠিত কালী মন্দিরেও আজ বিশেষ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে কালী পূজা। মধ্যরাতে কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয় বলে পূজার সময় দর্শনার্থীদের তেমন উপস্থিতি দেখা না গেলেও রাতের আধাঁর পেরিয়ে যেতে না যেতেই পূজা মণ্ডপে দেখা মিলে দর্শনার্থীদের। এই সময় প্রসাদ বিতরণ করতেও দেখা যায়। পূজাকে কেন্দ্র করে অনেক মণ্ডপে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে অসহায় মানুষদের মাঝে বস্ত্র বিতরণও করা হয়ে থাকে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনেক দেব-দেবীর মাঝে কৃপাময়ী মা কালীর ভক্ত সংখ্যা অধিক হওয়ায় অনেক স্থানেই কালী মায়ের মন্দির দেখা যায়। ভক্তরা দেবীর কৃপা লাভে ভক্তি-শ্রদ্ধা সহকারে পূজা দিয়ে থাকেন মনের মাধুরী মিশিয়ে। তাদের বিশ্বাস, বিপদে, আপদে, প্রয়োজনে মা কালী তাদের পাশে থেকে তাদেরকে রক্ষা করেন। এই বিশ্বাস থেকেই মা কালী প্রতিদিনই পূজিত হয়ে আসছেন মন্দির বা ভক্ত হৃদয়ে।

মুণ্ডমালার তন্ত্র অনুযায়ী দেবীর দশম মহাবিদ্যা হলো কালী, তারা, ভুবনেশ্বরী, ষোড়শী, ছিন্নমস্তা, ভৈরবী, ধূমাবতী, মাতঙ্গিনী, কমলা ও বগলা। এই সকলের মধ্যে দেবী কালী নামেই অধিক হারে বেশি পূজিত হয়ে আসছেন। যতটুকু জানা যায়, সপ্তদশকে বাংলায় কালী পূজার প্রচলন করেন নবদ্বীপের প্রসিদ্ধ তান্ত্রিক কৃষ্ণনন্দ আগমবাচিক। পরবর্তী সময় নদীয়ার রাজা কৃষ্ণ চন্দ্র রায় ব্যাপকভাবে পূজার আয়োজন করেন। ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে বাংলার সকল স্থানে কালী মায়ের পূজার মাহাত্ম্য।

আজকের এইদিনে এই পূজা হলো আলো ও আতশবাজির উৎসব। যা শ্যামা কালী পূজা ও দ্বীপাবলীর উৎসব নামে পরিচিত। কার্তিক মাসের ঘোর অমাবশ্যাার রাতে আলোর মাঝে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। ঘোর অমাবশ্যার অন্ধকারে ব্যাপক আলোর মাঝে মা কালী পূজার সাথে দ্বীপান্বিতা বা দীপাবলীরও একটা সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা যায়। মহালয়ার দিন থেকে পিতৃপক্ষ শেষ হয়ে শুরু হয় দেবী পক্ষ। মহালয়ার দিন পিতৃপুরুষের তর্পণ করা হয়। এই দিন পিতৃপুরুষগণের বিদেহী আত্মা মর্ত্যে আসেন জল গ্রহণ করার জন্যে। আর দ্বীপাবলী পর্যন্ত প্রায় দুই পক্ষকাল মর্ত্যে অবস্থান শেষে অমাবশ্যার অন্ধকারে তারা ফিরে যান। অন্ধকারে পিতৃপুরুষগণ কিভাবে ফিরে যাবেন এই বিশ্বাস থেকেই জ্বালানো হয় প্রদীপ। প্রদীপের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে চারিদিক। দূর হয়ে যায় অমাবশ্যার ঘোর অন্ধকার। আর অন্ধকারাচ্ছন্ন হৃদয় আলোকিত হয়ে উঠে দ্বীপাম্বিতা বা দীপাবলির আলোতে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়