রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারের একটি পাঁচতলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে মতলব উত্তর উপজেলার দু’জন রয়েছে। এই দু’জন হলো আপন খালাতো ভাই মানসুর হোসাইন (৪৩) ও মোঃ আল-আমিন (২৩)। গতকাল বুধবার (৮ মার্চ) সকালে তাদের নিজ গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

নিহত মানসুর হোসাইন (৪৩) মতলব উত্তরের ছেংগারচর পৌরসভায় ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক আলহাজ্ব মোশারফ হোসেন মিয়াজীর দ্বিতীয় ছেলে। মানসুর হোসাইনের মুজাহিদ নামে ৫ বছরের একটি সন্তান রয়েছে। তারা ৪ ভাই। অপরদিকে নিহত আল-আমিন উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মালয়েশিয়া প্রবাসী বিল্লাল হোসেনের জ্যেষ্ঠ পুত্র। তারা দুই ভাই।

নিহত মানসুর হোসাইন (৪৩)-এর জানাজা নামাজ গতকাল সকাল ১০টায় ছেংগারচর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের দারুচ্ছুন্নাত ছালেহিয়া মফিজুল ইসলাম দ্বীনিয়া মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এসময় নিহত মানসুর হোসাইনের বাবা আলহাজ্ব মোশারফ হোসেন মিয়াজী আবেগ আপ্লুত হয়ে তার সন্তানের আত্মার মাগফিরাত চেয়ে সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন।

এ সময় পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোঃ আহসান হাবীব ও পৌর যুবলীগ নেতা মোঃ ইসমাইল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, মঙ্গলবার (৭মার্চ) বিকেলে দুই খালাতো ভাই মানসুর হোসাইন (৪৩) ও মোঃ আল-আমিন (২৩) নামে এই দুই যুবক টাইলস কিনার জন্য রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারের একটি পাঁচতলা ভবনে যান। বিকেল পৌনে ৫টার সময় ওই ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে পুরো ভবনটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এ বিস্ফোরণে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মানসুর ও আল-আমিনসহ ২০ জন নিহত হন। নিহত আল-আমিন তার খালার বাসা ঢাকায় থেকে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে অস্ট্রেলিয়া উচ্চ শিক্ষার জন্যে আইইএলটিএস করছিলেন। অপরদিকে মানসুর হোসাইন ঢাকায় তার বাবার সাথে ব্যবসা পরিচালনায় ছিলেন।

এদিকে নিহত মানসুর হোসাইন ও মোঃ আল-আমিনের লাশ গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছে গতকাল বুধবার সকাল ৮ টার সময়। তখন তাদের বাড়িতে স্বজনদের আর্তনাদ ও আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে বাড়ির পরিবেশ। সন্তানের এই অকাল মৃত্যুতে তাদের বাবা-মা বাক শক্তি হারিয়ে ফেলেন।