শুক্রবার দুপুরে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করা যুবকের পরিচয় মিলেছে। যুবকটি বেকারত্ব এবং পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে স্ত্রীর সাথে অভিমান করে আত্মহত্যা করার ঘটনা এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, যুবক সাদাম বেকার অবস্থায় থাকার পরও পরিারের ইচ্ছায় বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে তার সাথে সংসারের অভাব-অনটন নিয়ে স্ত্রীর ঝগড়া লেগে থাকতো। এক পর্যায়ে সে তার স্ত্রীর সাথে অভিমান করে এ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

এ বিষয়ে যুবকের স্ত্রী আয়শা বেগমের মা পারুল বেগম জানান, তাদের সংসারে অভাব-অনটন ছিল। তবে আয়শার সাথে তার স্বামীর কোনো ঝগড়া বা অপমানের ঘটনা ঘটেনি।

চাঁদপুর জেলা পিবিআই কর্মকর্তারা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যুবকের হাতের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে ব্যাপক চেষ্টার ফলে ৪ মার্চ শনিবার দুপুরে পরিচয় নিশ্চিত করতে পেরেছেন। এ তথ্য দিয়ে নিশ্চিত করেন চাঁদপুর রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মুৃরাদ উল্লাহ্ বাহার। আত্মহত্যা করা যুবকের নাম মোঃ সাদাম হোসেন (৩২)। তিনি সদর উপজেলার দাসাদি গ্রামের ৩নং কল্যাণপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মৃত নূরুল হক বেপারী ছেলে। তার পরিবারে মা, স্ত্রী আয়শা বেগম ও ১ বছর ৩ মাস বয়সী একটি শিশু সন্তান রয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রেলের গেইটম্যান মোঃ সহিদ মজুমদার জানান, সে ট্রেনটি চাঁদপুর থেকে লাকসামের দিকে আসতে দেখে তার দায়িত্ব হিসেবে সবুজ ফ্ল্যাগ উড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় হঠাৎ দেখতে পায় কালো প্যান্ট ও চেক ফুলশার্ট পরিহিত অনুমান ২৮ বছরের এক যুবক ট্রেনটি বিশ্বরোড এলাকা অতিক্রমকালে নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে। তাৎক্ষণিক তিনি এ বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।

চাঁদপুর রেলওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলি মজুমদার জানান, আত্মহত্যা করা যুবকের লাশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে রেলওয়ে থানায় রাখা হয়েছে। তার অভিভাবককে খবর পৌঁছানো হয়েছে। তারা এসে লাশ শনাক্ত করলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তা’না হলে লাশ আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের কাছে দাফনের জন্য হস্তান্তর করা হবে। চাঁদপুর রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মুরাদউল্লাহ্ বাহার জানান, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যুবকের ৭/৮ টুকরো হওয়া ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া লাশ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরের কলিজা, কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গ-পতঙ্গ ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে ছিটকে পড়ে। পরে মৃতদেহের অংশগুলো একত্র করে ব্যাগে ভর্তি করে রাখা হয়। তার পরিচয় পিবিআইয়ের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়। যুবকের স্বজনরা তার লাশ নিতে আসলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। কী কারণে যুবক আত্মহত্যা করেছে তা তদন্ত সাপেক্ষে জেনে জানানো হবে।

এ বিষয়ে চাঁদপুর রেলওয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-৩, তারিখ : ৩-০৩-২৩ খ্রিঃ।