শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

কলেজটি প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মানবিক কল্যাণে এগিয়ে আসুক
আলআমিন হোসাইন ॥

শেখ মহিউদ্দিন রাসেল চাঁদপুর সরকারি কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষাসৈনিক মরহুম শেখ মুজাফ্ফর আলীর কনিষ্ঠ সন্তান তিনি।

লেখক ও সংগঠক শেখ মহিউদ্দিন রাসেল কলেজের ৭৫ বছরপূর্তি উৎসবের দপ্তর উপ-পরিষদের সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। ‘চাঁদপুর সরকারি কলেজের ৭৫ বছরপূর্তি : প্রাক্তন শিক্ষার্থীর মুখোমুখি’ শীর্ষক দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ধারাবাহিক সাক্ষাৎকার পর্বে তাঁর কলেজ জীবনের অনুভূতি ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরা হলো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কত সালে, কোন্ শ্রেণিতে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হন?

শেখ মহিউদ্দিন রাসেল : ১৯৯১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করার পর একাদশ শ্রেণিতে মানবিক বিভাগে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সে সময় কলেজের পরিবেশ কেমন ছিলো?

শেখ মহিউদ্দিন রাসেল : কলেজের পরিবেশ সুন্দর ছিলো। পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে ছিলো পুকুর। পশ্চিম ও উত্তর দিকে ছিলো কলেজ ভবন। ছিলো বিশাল মাঠ। তবে বর্তমানে যেখানে ভলিবল খেলার মাঠ সেটা তখনও ছিলো। কলেজ ছাত্র সংসদ ভবনের সামনে পাশেই ছিলো সাইকেল রাখার একচালাবিশিষ্ট একটি ঘর। সেটি এখন আর নেই। পাশে ছিলো বড় একটি কড়ই গাছ। ওই স্থানটি এখন পথ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে পরিবর্তন হয়নি কমনরুম, ছাত্র সংসদ ভবন ও শহিদ মিনারের স্থানের। আমরা কমনরুমে কোলাহলমুক্ত পরিবেশে লাইব্রেরি চর্চা করতাম। গ্যালারি কক্ষেও আমাদের ক্লাস হতো। সব মিলিয়ে কলেজজীবনের ফেলে আসা স্মৃতি এখনও চোখে ভাসে। তাই কোনো ভেদাভেদ ও মতবাদ খুঁজি না। চাঁদপুর সরকারি কলেজের কোনো অনুষ্ঠান হলেই নিজের ঘা ভাসিয়ে দিতে চেষ্টা করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার প্রিয় শিক্ষক এবং সহপাঠী ছিলেন কারা? তাদের সম্পর্কে কিছু বলুন।

শেখ মহিউদ্দিন রাসেল : কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মতিউর রহমান স্যারের ছায়াতলে একঝাঁক অভিজ্ঞ শিক্ষকম-লী বিলিয়ে দিয়েছে জ্ঞানের আলো। যে আলোয় কলেজটির পাশাপাশি আমিও হই আলোকিত। মানবিক বিভাগের ছাত্র হিসেবে কলেজের পড়ালেখা শুরু। বিশেষ করে ইতিহাস, পৌরনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক তৎকালীন সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন খান, অধ্যাপক জাকির হোসেন মজুমদার, প্রভাষক মোঃ রুহুল আমীন, প্রভাষক বিলকিজ আজিজ, প্রভাষক মমতাজ বেগম, প্রভাষক অসিত বরণ দাশ (বর্তমান অধ্যক্ষ), প্রভাষক মোঃ মাসুদুর রহমান (বর্তমানে চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ) অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে আমাদের পড়াতেন। আমরা মনোযোগ সহকারে সে শিক্ষা গ্রহণ করতাম। এছাড়া অধ্যক্ষ প্রফেসর কাজী আমীন আহমদ, অধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল খালেক, অধ্যাপক বজলুর রহমান, অধ্যাপক ওয়ালিউল্যা, বাংলা বিভাগের প্রভাষক মুহাম্মদ খলিলুর রহমান স্যারসহ অন্য স্যারদের স্নেহ, ভালোবাসায় আমি সিক্ত।

সহপাঠীদের মধ্যে ছিলো অনেকে। বর্তমানে তারা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। এর মধ্যে মোঃ মোশাররফ হোসেন (সহকারী প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথ বিভাগ), রাশেদ শাহরিয়ার পলাশ (সম্পাদক, বাণিজ্য প্রতিদিন), কাজি দিলজেব কবির রিপন (ড্যাফোডিলে কর্মরত), আবু সায়েম (ইংরেজি শিক্ষক), মনিরুল ইসলাম (উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা), সফিউল আলম (চিকিৎসক), মহিউদ্দিন (চিকিৎসক), সুমন (কম্পিউটার বাজার), রিয়াজ উদ্দিন ভুট্টো, মিলন (চাঁদপুর পৌরসভায় কর্মরত), জাকির দেওয়ান (শরীয়তপুরের ব্যবসায়ী), কর্নেল শেখ (ঢাকায় ইউনিলিভারে কর্মরত), আনিছুর রহমান মিঠুন (ব্যবসায়ী), মোস্তফা জামান মামুন (আলিকো কর্মকর্তা), আমিনুল ইসলাম (প্রফেসর), ফিরোজ আলম (ব্যবসায়ী), সঞ্জয় কুমার (ব্যবসায়ী), তপন (ব্যবসায়ী), সরকার মোঃ সেলিম (শিক্ষক)সহ অনেক সহপাঠী ছিলো। তাদের সাথে অনেক স্মৃতি রয়েছে। যে স্মৃতি এখন চোখে ভাসে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজের ৭৫ বছরপূর্তিতে আপনার অনুভূতি জানতে চাই।

শেখ মহিউদ্দিন রাসেল : অনুভূতি তো ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তবে এইটুকু বলছি, চাঁদপুর সরকারি কলেজ আমাদের প্রাণের একটি প্রতিষ্ঠান। যে প্রতিষ্ঠানে জীবনের মূল্যবান সময় অতিবাহিত করেছি। সেই প্রতিষ্ঠানের মিলনমেলা যা আমার জন্যে পরম পাওয়া। যে মেলা ইতিহাস হয়ে থাকবে স্মৃতিপটে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজটি নিয়ে আপনার প্রত্যাশা/স্বপ্ন কী?

শেখ মহিউদ্দিন রাসেল : চাঁদপুর সরকারি কলেজ আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করেছে। আমি চাই, কারিগরি ও বিভিন্ন বিভাগসহ কলেজটিকে পূর্ণাঙ্গ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হোক। চাঁদপুর সরকারি কলেজের অনেক প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে, যারা বিভিন্ন কারণে দুঃসহ জীবনযাপন করছে। তাই শিক্ষার পাশাপাশি প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের মানবিক কল্যাণে এগিয়ে আসুক চাঁদপুর সরকারি কলেজ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়