শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

চাঁদপুর শহরে বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত
গোলাম মোস্তফা ॥

চাঁদপুর শহরে বন্ধ হচ্ছে না কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত। প্রায় প্রতিদিনই কাউকে না কাউকে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় হতে হচ্ছে রক্তাক্ত জখম। কিন্তু পুলিশের তৎপরতা থাকলেও অভিভাবক ও কিছু অসাধু নেতৃত্বের কারণে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বন্ধ করা যাচ্ছে না।

পুলিশ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের আটক করলেও রাজনৈতিক, পারিবারিক ও স্বজনসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের তদবিরে মামলা করতে পারছে না ভুক্তভোগী পরিবার। ফলে সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধী সদস্যরা। ফলে বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত। চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি বলছেন, ইতিপূর্বে ক’টি মামলায় ক’জনকে গাজীপুর শিশু সংশোধনাগারে পাঠিয়েছেন। কিশোর গ্যাং নির্মূলে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অভিভাবকদের আরো সচেতন হওয়ার কথা বলেছেন ওসি মুহাম্মদ আবদুর রশিদ।

চাঁদপুর শহরে কিশোর গ্যাংয়ের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মেহেদী হাসান (১৮) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত করা হয়েছে। গতকাল ২৫ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে চাঁদপুর টেকনিক্যাল স্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। মেহেদী টেকনিক্যাল মাদ্রাসা রোড এলাকার খান বাড়ির শাহাদাত খানের পুত্র। সে হাজীগঞ্জ মডেল পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। বর্তমানে সে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

এর আগে গত রোববার সন্ধ্যায় পালপাড়া এলাকার কিশোর গ্যাং লিডার আফতাবের নেতৃত্বে কলেজ ছাত্র নায়েবকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। পরে পুলিশ আফতাবসহ ক’জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসলেও ভুক্তভোগীরা কোনো মামলা না দেয়ায় তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, এর পূর্বেও আফতাব কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিয়ে আরো কয়েকটি হামলা করে। তাতে রক্তাক্ত জখম হয়েছে ক’জন। আহত মেহেদী জানায়, গত ২৩ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে চাঁদপুর টেকনিক্যাল স্কুলের এক ছাত্রীর সাথে মাশরাফি নামে স্থানীয় এক কিশোর ইভটিজিং করে। ইভটিজিংয়ে বাধা দেয়ায় মাশরাফির সাথে তার তর্ক বাঁধে। এ ঘটনার ক্ষিপ্ত হয়ে মাশরাফি নামের ওই যুবক দলবল নিয়ে সন্ধ্যায় বাড়িতে হামলা করে তাকে তুলে আনতে যায়। এ সময় তাদের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় দ্বন্দ্ব বাঁধে।

২৫ জানুয়ারি বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় টেকনিক্যাল স্কুলের সামনে মেহেদীকে একা পেয়ে মাশরাফির নেতৃত্বে ১০/১৫ জন কিশোর গ্যাং হামলা করে। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেহেদীর বুকে ও হাতে কুপিয়ে জখম করে ফেলে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মরত চিকিৎসক জানান, কিশোর মেহেদীর বুকে ও হাতে ১২টি সেলাই করা হয়েছে। তবে বুকের ক্ষত স্থান থেকে রক্ত বন্ধ হওয়ায় বড় ধরনের বিপদ থেকে সে রক্ষা পেয়েছে। বর্তমানে তাকে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় ভর্তি দেয়া হয়েছে।

আহত মেহেদীর বাবা শাহাদাত খান জানান, এ ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, কিশোর গ্যাং সদস্যদের মারামারির ঘটনার ক’জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হলেও ভুক্তভোগীরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে চায় না। আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় পুলিশ আইনী ব্যবস্থা নিতে পারে না। কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো ছাড় নেই। তবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অভিভাবকদের আরো সচেতন হতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়