প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
চলিত মৌসুমে হাজীগঞ্জে সরিষা চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরের চেয়ে চলিত বছর প্রায় দেড়গুণ বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে সরিষা চাষ। গত তিনবছর আলু চাষে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং অনুকূল আবহাওয়া, বাজারে চাহিদা ও ন্যায্যমূল্য পাওয়ার পাশাপাশি ভোজ্য তেল ও গো-খাদ্যের (খৈল) দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকদের সরিষা চাষের আগ্রহ বেড়েছে। সরকারি প্রণোদনা ও প্রদর্শনীর কারণে চলতি বছর ১৬৫ হেক্টর বেশি জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। যার ফলে এ বছর সরিষা চাষে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে চাঁদপুর কণ্ঠকে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়।
এই কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলায় প্রতি বছর গড়ে ৪০০-৪৫০ হেক্টরে সরিষা চাষ হয়ে থাকে। গত বছর ৪৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। চলিত বছর ৪৮০ হেক্টর থেকে বাড়িয়ে ৬৪০ হেক্টরে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর চাষ হয়েছে ৬৪৫ হেক্টর জমিতে।
সরজমিনে উপজেলার কয়েকটি মাঠ ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, আলু উৎপাদনে অধিক খরচ এবং দাম কম হওয়ায় এ বছর আলু ছেড়ে সরিষা চাষে করছেন তারা। এছাড়া গত তিনবছর বিশেষ করে গত বছর টানা এবং দ্বিতীয়বার বৃষ্টির কারণে আলু চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবার ভিন্ন ফসল উৎপাদনে গেছেন। আর আলু চাষ থেকে সরিষা চাষে তুলনামূলক পরিশ্রম ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ার কারণে কৃষি অফিসের পরামর্শে চলতি বছর অনেক কৃষক সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
কৃষক মিজানুর রহমান জানান, এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় সরিষার জমি এখনো ভালো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলনও ভালো হবে। সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় এ বছর বেশি করে সরিষা চাষ করেছেন তিনি। ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায় এবং অনুকূল আবহাওয়ায় তাদের মতো আরও অনেক কৃষক সরিষা চাষে ঝুঁকেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম জানান, সরকার পরিকল্পনা নিয়েছে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ভোজ্যতেলের আমদানি কমিয়ে আনবে। সে লক্ষ্যে মাননীয় কৃষিমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পরিকল্পিতভাবেই দেশে সরিষাসহ তেল ফসলের আবাদ বাড়ানো হচ্ছে। এ বছর হাজীগঞ্জে ৬৪৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ১৬৫ হেক্টর বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলনও ভালো হবে।
তিনি আরো বলেন, সরিষাসহ ধান, আলু এবং অন্য কৃষি পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে এ বছর ৫ হাজার ৭৫০ জন কৃষককে সরকারি প্রণোদনা (সার ও বীজ) দেয়া হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১ হাজার ৮৫৭ জন বেশি। এছাড়াও কৃষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।