বুধবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

দালাল চক্রের খপ্পরে রোগী
গোলাম মোস্তফা ॥

চাঁদপুরের এক শ্রেণীর চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা ও অটোবাইকের ড্রাইভারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দালাল তৈরি করে রোগী ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ অনেক পুরানো। দালাল চক্র, বিভিন্ন চিকিৎসকের নাম বলে এক চিকিৎসকের রোগী ভাগিয়ে অন্য চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাচ্ছে। এতে প্রতারণার শিকার হচ্ছে নিরীহ রোগীরা। এমনি একটা ঘটনা ঘটেছে গত শুক্রবার।

চাঁদপুর জেলা বিএমএর সাবেক সভাপতি ও বেলভিউ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডাঃ হারুন অর রশিদ সাগরের কাছে নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে দেয়া একটি পোস্ট থেকে ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়। জানা গেছে, ডাঃ সাত্তারের কচুয়া থেকে আগত জনৈক মেহেরুন্নেছা নামের রোগী বাস থেকে নামার পর বেলভিউ হাসপাতালে যাওয়ার জন্য রিকশাচালককে বলে। রিকশাচালক রোগীকে শহরের প্রফেসর পাড়াস্থ ডাঃ আহসান উল্লাহর চেম্বারে নিয়ে যায়। এরপর ডাঃ আহসান উল্লাহ রোগীকে দেখে রোগীকে বিভিন্ন টেস্টের জন্য প্যাডে লিখে চেম্বারের কাউন্টারে পাঠান। কাউন্টার থেকে রোগীকে পরীক্ষার নামে সাড়ে তিন হাজার টাকা চাইলে তিনি (রোগী) বলেন, আমাকে তো ঢাকা থেকে ফোন করে আত্মীয় বলেছেন ডাক্তারের ফিস, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ঔষধ সবকিছু সাগর স্যার দিবে। তাই আমি শুধু ভাড়া নিয়ে চাঁদপুর আসছি। আমার কাছে টাকা নেই, স্যারকে বলেন। তখন কাউন্টার থেকে বলা হয় সাগর স্যার চাঁদপুরে নাই, এ জন্য এই স্যার আপনাকে চিকিৎসা দিয়েছেন।

ওই রোগী তখন ঢাকায় আত্মীয়ের কাছে ফোন করে ঘটনাটি জানায়। আত্মীয় ডাঃ সাগরকে ফোন করে রোগীর কথাগুলো বলেন। তখন ডাঃ সাগর বলেন, আমি তো চেম্বারে, রোগী তো আসেনি। পরে তিনি রোগীর মোবাইল নাম্বারে কথা বলে সে ডাক্তারের চেম্বারের নাম জানেন। এরপর তিনি চেম্বার থেকে বের হয়ে ডাঃ আহসান উল্লাহর চেম্বারে গিয়ে রোগীকে বেলভিউ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এদিকে রিকশাচালককে দিয়ে বা দালালের মাধ্যমে চেম্বারে রোগী ভাগিয়ে নেয়ার বিষয়ে দু ডাক্তারের মধ্যে বাক্-বিতণ্ডা হয়।

ডাঃ সাগর ওই রোগীকে তাঁর চেম্বারে এনে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে পুনরায় কচুয়া পাঠিয়ে দেন।

রোগী বিদায় করে ডাঃ সাগর এ বিষয়ে তার নিজ ফেসবুক পেজে কতিপয় চিকিৎসকের দালাল দিয়ে চিকিৎসা করার বিষয়ে সে সকল চিকিৎসককে কীট বলে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এমনকি এসব চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানান।

পাঠকদের উদ্দেশ্যে নিম্নে স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

সকাল বেলা দোকান খুলে বসে থাকেন এক শ্রেণীর কতিপয় ডাক্তার নামের কীট। তারা তাদের পোষা রিকশার ড্রাইভার সেট করে রাখে শহরের কিছু পয়েন্টে। নিরীহ রোগীরা রিকশায় উঠলেই জোর করে ওইসব নরপশু চিকিৎসকদের নামকাওয়াস্তে চেম্বার কাম ল্যাবে নিয়ে যায় এবং ওই সব ডাক্তার একেক সময় একেক নামের ডাক্তার সেজে রোগী দেখে এবং হাজার হাজার টাকার টেস্ট করায়, আদতে কোনো টেস্টই করান না। কারণ টেস্ট করার সরঞ্জামই তো নেই।

আজ (শুক্রবার) সকালে এই বাচ্চা রোগীটা এরকম এক নরপশুর খপ্পরে পড়েছিলো। আমরা বাচ্চাটাকে উদ্ধার করে ঠিক ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসি। ডাক্তারের ফি, পরীক্ষার টাকা, মেডিসিন সব ফ্রি ব্যবস্থা করে দেই। ওখানে গিয়ে দেখি আরো বিভিন্ন ডাক্তারের রোগী ভাগিয়ে দেখছেন অলরেডি।

বিঃ দ্রঃ ওই পশুর নাম উল্লেখ করলাম না, তবে সকল ব্যবস্থা অতি দ্রুত নেয়া হবে ইনশাআল্লাহ।

এদিকে এ বিষয়ে ডাঃ হারুন অর রশিদ সাগরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বন্ধু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চাকুরি করে, তার নিকটজন গরীব রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য অনুরোধ করলে আমি বলেছি সকল কিছু আমি ফ্রি করে দিবো, তুমি পাঠাও। রোগী বাস থেকে নামার পর ডাঃ আহসান উল্লাহর পালিত দালাল রিকশাচালক আমি চাঁদপুরে নেই এমন মিথ্যা কথা বলে রোগী নিয়ে যায়। এরপর রোগী বললে, আমি তাৎক্ষণিক ওই চেম্বারে যাই। সেখানে গিয়ে রোগীদের সাথে কথা বলে শুনি, শুধু আমার রোগীই নয়, ডাঃ মিলন, মোহনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রোগীসহ বেশ কিছু ডাক্তারের চেম্বারের রোগী রয়েছে। এ বিষয় আমি জেলা হাসপাতাল ও ডায়াগণস্টিক সেন্টার সমিতি ও বিএমএ-কে অবহিত করেছি। আমি মনে করি, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার এখনই সময়।

এ বিষয় ডাঃ আহসান উল্লাহ কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়