প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে রোগীর স্বামীর হামলায় সাবেক মাদ্রাসা শিক্ষক কাম কবিরাজ গুরুতর আহত হয়েছেন। পৌরসভার ভাণ্ডারী মহল এলাকায় বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) রাতে এ ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনায় অভিযুক্তকে আটক করেছে থানা পুলিশ। গুরুতর আহত মাওলানা ক্বারী মাহবুবুর রহমান বর্তমানে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা যায়, ভোলা জেলাধীন বোরহান উদ্দিন উপজেলার দক্ষিণ ভাটামারা গ্রামের মৃত ক্বারী মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মাওলানা ক্বারী মাহবুবুর রহমান (৬০) ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। সদ্য অবসরে যাওয়া ওই শিক্ষক চাকরির পাশাপাশি দীর্ঘদিন যাবত মানুষকে কবিরাজী চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। প্রতিদিনের ন্যায় বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন তিনি। তখন রোগী সেজে আসেন রুবেল হোসেন। এ সময় তর্ক-বিতর্কের জেরে রুবেল হোসেন কবিরাজের উপর কাঠের টুকরো দিয়ে হামলা করেন। কবিরাজের চিৎকারে শুনে প্রতিবেশীরা এসে কবিরাজকে আহতবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়ে অভিযুক্ত রুবেল হোসেনকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়।
সদ্য প্রবাস ফেরত রুবেল হোসেন (৩২) ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১০নং গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম লাড়ুয়া গ্রামের মনু ভূঁইয়ার ছেলে। গত কয়েকদিন পূর্বে দেশে আসার পর তিনি স্ত্রীর সাথে অভিমান করে আলাদা রুমে থাকতেন। এতে স্ত্রী রুবিনা আক্তার মাওলানা মাহবুবুর রহমান কবিরাজের শরণাপন্ন হন। রুবিনার কথা শুনে কবিরাজ তখন তার স্বামীর শারীরিক অক্ষমতা রয়েছে বলে জানিয়ে চিকিৎসা সেবা দেন। চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে গিয়ে রুবেল হোসেনের স্ত্রী বাড়ির এক ভাবির কাছে তার স্বামী রুবেলের শারীরিক অক্ষমতার বিষয়টি জানায়। এতে রুবেল হোসেন লজ্জিত হয়ে কবিরাজকে জিজ্ঞাসা করতে আসলে তাদের মধ্যে তর্ক-বির্তক বাঁধে এবং হামলা করে।
আহত কবিরাজ মাওলানা মাহবুবুর রহমান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি বাসায় রোগী দেখতে ছিলাম। এ সময় ওই যুবক এসে আমাকে বাইরে গিয়ে রোগী দেখার আমন্ত্রণ করলে আমি বারণ করি। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ওপর হামলা করে। ওই যুবক আমার পরিচিত নয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই যুবকের নাম ঠিকানা আমার ডায়েরীতে লেখা আছে।
অভিযুক্ত রুবেল বলেন, আমি প্রবাস থেকে দেশে আসছি গত ২০দিন পূর্বে। এসে দেখি আমার স্ত্রী আমার নির্দেশনা মোতাবেক বাড়ির কাজটি করেনি। এতে তার উপর অভিমান করে আমি আলাদা বিছানায় ঘুমিয়েছি। আমি শারীরিক অসুস্থ হলে আমার দু’সন্তান আসলো কীভাবে। কী লজ্জাজনক বিষয়। কবিরাজ কীভাবে জানলো আমি শারীরিকভাবে অক্ষম ? মূলত টাকার নেশায় করিরাজরা চিকিৎসার নামে এই সব ভ-ামী করে।
এদিকে হামলার শিকার কবিরাজ মাওলানা মাহবুবুর রহমান মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হওয়ায় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. একেএম মাহবুবুর রহমানসহ নবীন-প্রবীণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উক্ত ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে আখ্যায়িত করে বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, এ ঘটনায় রুবেল নামে এক যুবক পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। অভিযোগের আলোকে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।