প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুর কলেজ ছাত্র সংসদের ১৯৬৯ সালের জিএস এবং ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধকালীন বিএলএফ কমান্ডার হানিফ পাটওয়ারী দীর্ঘ প্রায় তিন মাস ঢাকায় চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হয়ে নিজ বাসায় ফিরলেন।
বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী অসুস্থ হানিফ পাটওয়ারীর সাথে তার বাসায় কথা হলে তিনি বলেন, স্ট্রোক জনিত সমস্যায় তিনি প্রথমে চাঁদপুর বেলভিউ হাসপাতালে বেশ কিছুুদিন চিকিৎসা নেন। পরে ঢাকা গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে চাঁদপুর ফিরে আসেন। বাসায় কিছুদিন থাকাবস্থায় তিনি খুবই অসুস্থ হয়ে যান। এক সময় শোয়া থেকে উঠে বসতে পারছিলেন না। শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি হয়ে যায়। পরে তার একমাত্র মেয়ে (আমেরিকা প্রবাসী) তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে আইসিউতে ছিলেন কয়েকদিন। পরে সেখান থেকে প্রায় ২ মাস ইউনিক ফিজিওথেরাপী সেন্টারে চিকিৎসা নেন। গত ২ জানুয়ারি মনের টানে তিনি চাঁদপুরের বাসায় আসেন। তার বাম হাত ও বাম পায়ে শক্তি না পাওয়ায় এখন অন্যের সাহায্য নিয়ে বিছানা থেকে উঠেন এবং হুইল চেয়ারকে সঙ্গী করে চলেন। তাকে সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করার জন্য একজন সেবিকা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তার চিকিৎসার পুরো ব্যয়ভার বহন করছেন তার একমাত্র মেয়ে।
শুধু চাঁদপুরের দুই-একজন মুক্তিযোদ্ধার খামখেয়ালিপনায় এ বীর মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা বন্ধ রয়েছে। কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সাথে যোগাযোগ করে কাগজপত্র ঠিক করে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তিনি ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীর সাথে দেখা করতে তার দপ্তরে যান। ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে বারবার যোগাযোগ করেও তিনি ভাতা পাচ্ছেন না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, তিনি শুধু শুনছেন, আর বেশি দেরি নেই, তার কাগজপত্র ওকে। ভাতা ব্যাংকে ঢুকবে।
এ শীতের মধ্যে বাসায় অন্যের সাহায্য নিয়ে শুয়ে বসে টিভি দেখে হানিফ পাটওয়ারী সময় কাটাচ্ছেন। আর কেউ দেখতে আসলে আবেগপ্রবণ হয়ে যান। তবে কয়েক দিনের মধ্যে তিনি পুনরায় ঢাকার ইউনিক ফিজিওথেরাপী সেন্টারে চিকিৎসা নেয়ার জন্য চাঁদপুর থেকে চলে যাবেন। তিনি জানান, সেখানে আরো প্রায় দুই মাস অবস্থান করে চিকিৎসা নিয়ে চাঁদপুরে ফিরে আসবেন। তাই তিনি চাঁদপুরের তাঁর বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন, রাজনৈতিক সহযোদ্ধাসহ সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন, যাতে তিনি পুনরায় সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন।