প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫১
চাঁদপুর সোনালী অতীত ক্লাবের নির্বাচন চাই

আমি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম সরকার, জন্ম : ২২/০৯/১৯৬৬ খ্রি. । আমি ১৯৮১ সালে পুরাণবাজার মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করি। ১৯৮৩ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করি। ১৯৮৫ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে বিএসসি পাস করি। ১৯৮৮ সনে ঢাকা সিটি ল’ কলেজ থেকে এলএলবি পাস করি। ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসিতে (ফার্স্ট ক্লাস) পাই। ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজে ভূগোল বিষয়ে অনারারি অধ্যাপক ছিলাম। ১৯৯৪ সালে বার কাউন্সিল থেকে আইনজীবী সনদ লাভ করে ঢাকা আইনজীবী সমিতিতে প্রথম প্র্যাকটিস শুরু করি। পরবর্তীতে আমার বড়ো ভাই ফারুক সরকার এবং আতিক ভাইয়ের পরামর্শে ১৯৯৫ সালে চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতিতে সদস্য পদ নিয়ে অদ্যাবধি প্র্যাকটিস করছি।
আমি ১৯৭৩ সাল থেকে পুরাণবাজার মধুসূদন হাই স্কুলের পেছনের মাঠে ফুটবল খেলা প্রথম শুরু করি। তৎকালীন সময় ফুটবলে আমার সিনিয়র বন্ধু মোতালেব ভূঁইয়ার উৎসাহে এবং আমার আরেক বন্ধু অজয়ের উদ্যোগে ফুটবল খেলা শুরু করি। ছোট বেলা থেকেই চাঁদপুর জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে জুনিয়র ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করে সুনাম অর্জন করি। অনূর্ধ্ব-১৪ চাঁদপুর দলের হয়ে খেলেছি। জাতীয় ফুটবলার আনোয়ার হোসেন মানিক আমার সাথে খেলেছেন। আমি ১৯৭৭ সন থেকে ১৯৮০ সন পর্যন্ত ইন্টার স্কুল ফুটবল খেলি। ১৯৮৩-৮৪ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজের হয়ে ফেনী মাঠে ইন্টার কলেজ ফুটবল খেলে ভূয়সী প্রশংসা লাভ করি। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ঢাকা মাঠে ফুটবল খেলেছি। ১৯৮৮ সালে পুরাণবাজার যুব ব্যবসায়ী সমিতির ব্যবস্থাপনায় অর্থাৎ ফয়েজ আহম্মেদ মন্টু ভাইয়ের প্রেরণায় চাঁদপুর দক্ষিণাঞ্চলীয় ভলিবল টুর্নামেন্টে পুরাণবাজার একাদশ দলের হয়ে খেলি এবং শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে তৎকালীন জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে সম্মাননা গ্রহণ করি।
আমি ১৯৭৮ সালে পুরাণবাজার নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্রের পক্ষ হয়ে চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে জেলা লীগ খেলি। ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত জেলা লীগে সে সকল দলের হয়ে খেলেছি, সেই সকল ক্লাব তথা দলগুলো হলো-- পুরাণবাজার নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্র, পূর্ব শ্রীরামদী একাদশ, যুবমৈত্রী যুব সংঘ ও হোয়াইট স্পোর্টিং ক্লাব। ১৯৮৬ সালে আমি হোয়াইট স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করি। ওই সময়ে চাঁদপুরের প্রথিতযশা ফুটবলার বোরহান খানকে হোয়াইট স্পোর্টিং ক্লাবে খেলার সুযোগ করে দেই। ১৯৭৯ সালে পুরাণবাজার মধুসূদন হাইস্কুল মাঠে রুস্তম মিয়া স্মৃতি ফুটবল এবং নূরু মিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টে পুরাণবাজার নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্রের পক্ষে খেলেছি এবং দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় গৌরব অর্জন করে।
১৯৯০ সালে পুরাণবাজার ভাই ভাই স্পোর্টিং ক্লাবকে ঢাকা শাহ্ স্পোর্টস্ কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করিয়েছি। তৎকালীন সময়ে মাননীয় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জনাব সাদেক হোসেন খোকা খেলাটি উদ্বোধন করেন। সেই খেলায় অংশগ্রহণ করার পর পুরাণবাজার ভাই ভাই স্পোর্টিং ক্লাব চাঁদপুর জেলা লীগে খেলার অনুমতি লাভ করে। ওই সময়ে উক্ত খেলায় অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে যারা আমাকে সহযোগিতা করেন তারা হলেন : জাহাঙ্গীর ভুঁইয়া বতু, লিটন সরকার, বাদল খান, মিজানুর রহমান, প্রয়াত সিরাজ ভাই, প্রয়াত আবুল বাশার এবং আমার বন্ধু মো. শোয়ায়েব (বর্তমানে পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপাল), জাফর এবং আকবর। উক্ত খেলায় ভাই ভাই স্পোর্টিং ক্লাব সুশৃঙ্খল দল হিসেবে পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৯২ সনে ঢাকা আউডটার স্টেডিয়ামে সাংবাদিক সফিক ভাইয়ের ব্যবস্থাপনায় জাদুকর সামাদ ফুটবলে ভাই ভাই স্পোর্টিং ক্লাব (৪-১০) উদ্বোধনী খেলায় অংশগ্রহণ করে এবং উক্ত খেলাটি তৎকালীন আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী উদ্বোধন করেন। উক্ত খেলায় ভাই ভাই স্পোর্টিং ক্লাব সুশৃঙ্খল দল হিসেবে ট্রফি লাভ করে।
১৯৯৩ সালে পুরাণবাজার মধুসূদন হাইস্কুল মাঠে ভাই ভাই স্পোর্টিং ক্লাবের ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ থেকে ১৬টি দল নিয়ে ফারুক স্পোর্টস্ কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করি আমি। উক্ত খেলা তৎকালীন সময়ে বন ও পরিবেশ মন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) আকবর হোসেন উদ্বোধন করেন। তার সাথে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। উক্ত খেলায় ভাই ভাই স্পোর্টিং ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হয়।
১৯৯৫ সালে পুরাণবাজার মধুসূদন হাইস্কুল মাঠে ভাই ভাই স্পোর্টিং ক্লাবের ব্যবস্থাপনায় আমি অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর রৌপ্য কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করি। উক্ত টুর্নামেন্টে স্থানীয় ৮টি দল এবং ঢাকা থেকে ৮টি দল নিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করি। ২০০৮ সালে চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত হ্যান্ডবল টুর্নামেন্টে আমার দল নতুন কুঁড়ি ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠন চাঁদপুর জেলায় রানারআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে। উক্ত টুর্নামেন্টে আমাকে যারা সহযোগিতা করেন তারা হলেন : লিটন সরকার, শাওন পাটওয়ারী, রাজীব চৌধুরী, নাছির প্রমুখ। আমার দল থেকে ৪ জন খেলোয়াড় জাতীয় পর্যায়ে ডাক পেয়েছেন।
পরবর্তীতে ফুটবল খেলোয়াড় এবং সংগঠকগণ আস্তে আস্তে একটি প্লাটফর্ম খুঁজতে ছিল। তখন সাবেক ফুটবলার মনোয়ার হোসেন চৌধুরী চাঁদপুর সোনালী অতীত ক্লাব গঠন করেন। সোনালী অতীত ক্লাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পৌরসভার তৎকালীন মেয়র নাছির উদ্দিনসহ ঢাকা মাঠের বেশ কিছু জাতীয় খেলোয়াড় উপস্থিত ছিলেন। সেই থেকে সোনালী অতীত ক্লাবের সাথে জড়িত। সোনালী অতীত ক্লাব থেকে একটি ব্লেজার পেয়েছিলাম। তখন সভাপতি ছিলেন মনোয়ার হোসেন চৌধুরী এবং সাবেক ফুটবলার গোলাম মোস্তফা বাবু ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। এই কমিটি দীর্ঘদিন চলে আসছে। অথচ প্রত্যেক সদস্য জানেন ২/৩ বছর মেয়াদ হচ্ছে কমিটির। মেয়াদ উত্তীর্ণের পর নতুন কমিটি গঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু কথার সাথে কাজের কোনো মিল নেই। ৫ আগস্ট ২০২৪ খ্রি.-এর পূর্বে একটি কমিটি গঠিত হয়, অথচ সোনালী অতীত ক্লাবের কেউই জানে না। কোনো সদস্যই ভোট দেওয়ার সুযোগ পায় নি। ভোট ছাড়াই কমিটি হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে নিজেদের মধ্যে অন্তঃকলহ থাকায় সেই কমিটি সাধারণ সম্পাদক ছাড়াই চলছে। কী হবে এই কমিটি দিয়ে? যে কমিটি সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে বা আলোচনার মাধ্যমে হয় না। এই সকল অনিয়মকে নিয়মে আনতে হবে। এখন অনেক সাবেক খেলোয়াড় এই সমিতির ব্যাপারে উজ্জীবিত। তাদের হাতে নেতৃত্ব আসলে সমিতির উন্নয়নমূলক কাজ হবে এবং চাঁদপুর জেলা সারা বাংলাদেশে পরিচিতি লাভ করবে।