প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:০৮
আঁতাতের অভিযোগে দুই বিএনপি নেতার বহিষ্কার দাবি
নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) সংসদীয় এলাকার ছাত্রদল ও যুবদলের ৬ নেতা-কর্মী দুই বিএনপি নেতার বহিষ্কার দাবি করেছেন।
|আরো খবর
গত রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম বরাবর লিখিত অভিযোগে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আঁতাতের অভিযোগ এনে তাদের বহিষ্কার দাবি করা হয়। অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় মহাসচিব, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও জেলা বিএনপির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদককে।
বহিষ্কার দাবি করা নেতারা হলেন নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র হারুনুর রশীদ আজাদ এবং সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র হারুনুর রশীদ আজাদ নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সাবেক এমপি স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম দোসর মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর সাথে আর্থিক সম্পর্কসহ গভীর ভাবে আঁতাত করে ২০১৩-২০১৪ সালে সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় বিদেশ ভ্রমণ করেন। এরপর বিদেশে একসাথে নৌবিহার করেন। পরবর্তীতে এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। স্বৈরাচারের সাথে এই আঁতাতের কারণে ২০০৯ সাল থেকে অদ্যাবধি তার বিরুদ্ধে মামলা তো দূরের কথা, একটি জিডিও হয়নি। পক্ষান্তরে এই আঁতাতের কারণে দল সহ হাজারো নেতা-কর্মী শিকার হয়েছে মামলা- হামলার।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীনের পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট করেন এবং নির্বাচনী প্রচরণায় সভাপতিত্ব করেন। যার ছবি লিখিত অভিযোগের সাাথে সংযুক্ত করা হয়েছে। একই ভাবে সাবেক মেয়র হারুণের সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর সাথে বিদেশে নৌকা ভ্রমণের ছবিও সংযুক্ত করা হয়েছে ।
লিখিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগকারী রুবেল হোসেন বলেন, আমি শহর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। আমরা যখন মাঠে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি তখন সাবেক মেয়র হারুন টেবিলে বসে সাবেক এমপি একরামের সাথে আঁতাত করে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীকে মামলায় জড়িয়েছেন। এটা অনেকেই জানে। সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার ডামি প্রার্থী অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীনের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন। লিখিত অভিযোগে স্বাক্ষর করা আরও একজন ছাত্রদল ও একজন যুবদল নেতার সাথে কথা বললে তারা অভিযোগ দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
যোগাযোগ করা হলে সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, শিহাব উদ্দিন শাহীনের ভোট করার প্রশ্নই আসে না। শাহীন একজন অ্যাডভোকেট ও বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য। সে হিসেবে তিনি আইনজীবীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান। আমি বারের সভাপতি। বারের নিয়ম অনুযায়ী বারের কোনো একজন সদস্য বা অতিথি গেলে তাকে রিসিভ করা। সেখানে আমি এক লাইনে বক্তব্য দিয়েছি। আমরা ভোটের বিরুদ্ধে।
নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র হারুনুর রশীদ আজাদ বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আমার আঁতাতের অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি যখন নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র ছিলাম, তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এবং একরামুল করিম চৌধুরী স্থানীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। এই কারণে তার সাথে আমার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা- সাক্ষাৎ হতো। এই ছবি দিয়ে আমাকে বারবার ঘায়েল করার চেষ্টা করা হয়। এভাবে ষড়যন্ত্র করে ১০ বছর আমাকে বিএনপির রাজনীতির বাইরে রাখা হয়েছে। এজন্যে আমার নামে মামলা নেই। নোয়াখালী জেলার অনেক বড়ো বড়ো বিএনপি নেতার সাথে সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর ছবি রয়েছে। যে ছবি চাইলে আমরাও দিতে পারি।
নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান লিখিত অভিযোগের অনুলিপি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের আলোকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে