শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২২:০৯

তিন মাসে আওয়ামী লীগের তৃণমূল সম্মেলন করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

অনলাইন ডেস্ক
তিন মাসে আওয়ামী লীগের তৃণমূল সম্মেলন করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

আওয়ামী লীগের তৃণমূল সম্মেলন আগামী তিন মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দলের জাতীয় সম্মেলন আয়োজনেরও আভাস দিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির তাগাদাও দিয়েছেন তিনি।

গত মঙ্গলবার গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকে সংগঠনের মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা ও উপজেলার সম্মেলন নিয়ে আলোচনার সময় আওয়ামী লীগের সভাপতি এ নির্দেশ দেন। এ সময় দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতারা সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কড়া সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।

এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি সংগঠনকে গুছিয়ে আনার তাগিদ দেন। তিনি বলেন, সামনেই দলের জাতীয় সম্মেলন হবে। এর আগে আগামী তিন মাসের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা ও উপজেলাগুলোর সম্মেলন শেষ করতে হবে। দলের আটটি সাংগঠনিক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা সম্মেলন অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখবেন।

কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা সমকালকে জানান, আগামী ২০২৩ সালের শেষের দিকে কিংবা ২০২৪ সালের শুরুর দিকে সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। এর আগে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকে এ সম্মেলনের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।

সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকে অংশ নেওয়া কয়েকজন সদস্য সমকালকে বলেন, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের সম্মেলন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির পর থেকে এই কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকের পর দলের খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে জরুরি সভায় তিন মাসের মধ্যে এই বিভাগের মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা ও উপজেলায় সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের আট সাংগঠনিক বিভাগের আওতাধীন মেয়াদোত্তীর্ণ সাংগঠনিক জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- পঞ্চগড়, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, নওগাঁ, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা, বরগুনা, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ মহানগর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, গাজীপুর মহানগর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা মহানগর, কুমিল্লা দক্ষিণ, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম মহানগর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ, কক্সবাজার ও রাঙামাটি।

চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এসব জেলা সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু হবে। মার্চ মাসের মধ্যেই এসব জেলার পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ উপজেলাগুলোর সম্মেলন শেষ করা হবে। আগামী এপ্রিলে রমজান মাস থাকায় তখন সম্মেলন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে মে মাসের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা ও উপজেলার সম্মেলন শেষ হবে। এরপর শুরু হবে সংগঠনের জাতীয় সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি।

ছাড় পাচ্ছেন না শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী আত্মীয়ও :সভাপতিমণ্ডলীর মঙ্গলবারের বৈঠকে দলের শৃঙ্খলা কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় গত রোববার সিরাজগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে হট্টগোলের প্রসঙ্গও উঠে আসে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি সাংগঠনিক শৃঙ্খলা মেনে চলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।

এ সময় সিরাজগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে হট্টগোলের ঘটনায় সিরাজগঞ্জ-২ আসনের এমপি অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাতের সম্পৃক্ততা নিয়ে আলোচনা হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিকটাত্মীয়। এ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দলের প্রয়াত নেতা মোহাম্মদ নাসিমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছেন ডা. হাবিবে মিল্লাত। সিরাজগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে হট্টগোলের ঘটনায়ও তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, কারও বাড়াবাড়ি সহ্য করা হবে না। তিনি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী আত্মীয়কেও ছাড় দিচ্ছেন না, দেবেনও না।

প্রসঙ্গত, সিরাজগঞ্জের এ ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল মতিন ও সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাজুকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যুবলীগ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল হককে। এই তিন নেতাই অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাতের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। ডা. হাবিবে মিল্লাত ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। তাকেও ওই পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভাপতিমণ্ডলীর এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ওবায়দুল কাদের, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য্য, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ড. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অ.) ফারুক খান, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

মার্চে চার জেলার সম্মেলন :গতকাল দলের খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের সভায় আগামী মার্চ মাসের মধ্যে মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই চার জেলার আওতাধীন মেয়াদোত্তীর্ণ উপজেলাগুলোর সম্মেলন হবে। অন্য উপজেলাগুলোর সম্মেলন হবে আগামী তিন মাসের মধ্যে।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহর সভাপতিত্বে এই সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সায়েম খান, অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, পারভীন জামান কল্পনা ও অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া কল্পনা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়