প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৩, ০০:০০
১৯০১ সালের ৭ই ডিসেম্বরের আগে পুরো বাংলাদেশ ছিল বিদ্যুৎবিহীন। ৪,৫০,০০০ রুপির বিনিময়ে খাজা আহসানউল্লাহ-এর হাত ধরে সর্বপ্রথম ঢাকার রাস্তায় জ্বলে উঠে বৈদ্যুতিক বাতি। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর পাকিস্তানিরা ১৯৬২ সাল পর্যন্ত দেশে কোনো নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলেনি। শুধুমাত্র জেলা সদরগুলোতে রাতের বেলায় একটু বিদ্যুৎ দেয়া হতো আর উপজেলাগুলো ছিল বিদ্যুৎবিহীন। ১৯৬২ সালে আমেরিকার অর্থায়নে কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ উৎপাদন সহ ব্রিটিশের রেখে যাওয়া ৮৮ মেগাওয়াট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন দাঁড়ায় ৪৭৫ মেগাওয়াট। কয়েকটি কারখানা ছাড়া আর দেশের কোথাও বিদ্যুৎ ছিলো না।
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড গঠন করার মাধ্যমে বিভিন্ন উপজেলা শহরের সাথে জেলা শহরের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন যুক্ত করা হয়। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে ২৮১৮ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ নিয়ে যান ৪ হাজার মেগাওয়াটে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ২৫ বছরে দেশে যে বিদ্যুৎ যুক্ত হয়েছে প্রথমবার ক্ষমতা গ্রহণ করে মাত্র পাঁচ বছরে শেখ হাসিনা তার অর্ধেকেরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তাঁর সক্ষমতা দেখিয়েছিলেন। শেখ হাসিনার ৫ বছরে দেশের বিদ্যুৎ খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১২০০ মেগাওয়াট। অথচ শেখ হাসিনাকে হটিয়ে যে বিএনপি ও জামায়াত ক্ষমতায় এসেছিলো তারা ২০০১-২০০৬ পাঁচ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে মাত্র ৮০ মেগাওয়াট!!!
শেখ হাসিনাকে আপনার পছন্দ না হতে পারে, আওয়ামী লীগকে আপনার ভালো না লাগতে পারে, কিন্তু গত ১৪ বছর তিনি এই দেশে যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছেন তা পুরো দেশের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ৬ লাখ কিলোমিটার বিদ্যুতের নতুন লাইন সংযোগ দিয়েছেন। দেশে বর্তমানে ৪৮ হাজার বিদ্যুৎ চালিত সেচপাম্প চলছে। গ্রাম গঞ্জের আনাচে-কানাচে এমনকি গহীন পাহাড়েও তিনি এক এক করে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছেন। বর্তমানে বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৪ কোটির উপরে। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশেও বিদ্যুতের এক কোটি গ্রাহক নেই। এই চৌদ্দ বছরে শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ উৎপাদনকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
২০০৮ সালেও যখন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৪০০০ মেগাওয়াটের একটু বেশি, সেটি এখন ২৫ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াট। শুধু আপনি কেন, আমাদের আশেপাশের কোনো দেশও বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশের এইভাবে এগিয়ে যাওয়ার কথা ভাবেনি। দেশে এখন উন্নত দেশের মত রামপাল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে। আমরা পারমাণবিক ক্লাবের সদস্য পর্যন্ত হয়ে গেছি এই এক শেখ হাসিনার কারণে।
মূল্যস্ফীতি, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ৬০ ডলারের কয়লা এখন কিনতে হচ্ছে প্রায় ৪০০ ডলারে। এই মুহূর্তে তাই দেশের অর্থনীতিকে ডুবিয়ে দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব নয়। জাতিসংঘ, আইএমএফ এদের বৃদ্ধাঙ্গুলির তোয়াক্কা না করে সরকার প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দিচ্ছে শুধু আপনাদের শান্তি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্যে।
দেশের দুর্দিনে আজ আমাদেরও দেশের পাশে দাঁড়ানো উচিত। এই দেশের প্রতিটি মানুষের উচিত আত্মবিশ্বাসী ও সৎ প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ানো। বিদ্যুতের এই অন্ধকার বেশিদিন থাকবে না। ইতিমধ্যে কাতারের সাথে চুক্তি হয়েছে, ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস আনার প্রস্তুতি চলছে। আমেরিকার কিছু দেশকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কারণে পুরো বিশ্বে এই জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। শেখ হাসিনার ওপর আমাদের আস্থা আছে এবং থাকবে।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
ওমর ফারুক শুভ, সংগ্রহে : সৈয়দ আনিসুর রহমান।