প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০
প্রতিটি মানুষের মধ্যে অন্তর্গত কিছু শক্তি-সামর্থ্য আছে, যা থেকে মানুষ সমাজের জন্যে কিছু করার তাগিদ-তাড়না অনুভব করে। মানুষের প্রাগুক্ত শক্তি-সামর্থ্য অধিকাংশজনের ক্ষেত্রেই সুপ্ত থাকে। একে জাগিয়ে তোলার জন্যে, এমনকি আবিষ্কার করার জন্যে ব্যক্তিক বা সামষ্টিক উদ্যোগ প্রয়োজন। এ প্রয়োজন মেটাতে সেবামূলক সংগঠন হচ্ছে অত্যন্ত কার্যকর মাধ্যম। ‘রোটারী ইন্টারন্যাশনাল’ হচ্ছে তেমনি একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন। এ সংগঠনটির বয়স এখন ১১৭ বছর। এ সংগঠনটির মূলমন্ত্র ‘সেবা স্বার্থের ঊর্ধ্বে।’
আমাদের চাঁদপুরে ৬টি রোটারী ক্লাব, ৬টি রোটার্যাক্ট ক্লাব ও ২টি ইন্টার্যাক্ট ক্লাবের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে তিনশ’ বিভিন্ন বয়সী মানুষ চাঁদপুর জেলায় বহুবিধ সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিবিড়ভাবে সংশ্লিষ্ট।
কথা হলো, রোটারী ক্লাব কি তার স্বীয় অর্থায়নে সকল সেবামূলক কর্মকাণ্ড করে? আমি অকপটে বলতে চাই, কিছু কিছু মডেল স্বরূপ করে। মূলত রোটারিয়ানসহ সংশ্লিষ্ট অন্যদের সেবার মানসিকতাকে উস্কে দেয়। এতে তারা ব্যক্তিগতভাবে অন্তর্গত শক্তি-সামর্থ্যে সৃষ্টিশীলতায় মগ্ন হয়, তাগিদণ্ডতাড়নায় নিবেদিত হয় সেবামূলক কাজসহ বহুবিধ সামাজিক কর্মকাণ্ডে। চাঁদপুরের রোটারিয়ান, রোটার্যাক্টরসহ অন্যরা এ ক্ষেত্রে অনন্য দৃষ্টান্ত।
আমাদের সমাজে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিদের যুক্তিসঙ্গত কারণেই প্রভাব ও ভূমিকা অনেক বেশি। এঁরা এ প্রভাব-ভূমিকা স্বীয় দল ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকলে সবচে’ বেশি প্রদর্শন করতে পারেন। চাঁদপুরও এ প্রেক্ষাপটের বাইরে নয়। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক পরিচয় বহন না করেও সকল আমলে, সকল যুগে, সকল পরিস্থিতিতে সর্বজনশ্রদ্ধেয়, সকল মহলে সমাদৃত ও অত্যন্ত প্রভাবশালী এমন কিছু ব্যক্তিকে চাঁদপুর রোটারী ক্লাব আবিষ্কার করেছে, তৈরি করেছে, যাঁরা চাঁদপুরের সমাজসেবা, শিক্ষা, সংস্কৃতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে রেখেছেন এবং রেখে চলছেন কালজয়ী ভূমিকা। এর ফলে চাঁদপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অনেক খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান।
চাঁদপুর চারটি নদীর বহু চর সম্বলিত একটি ভাঙ্গন-বিপন্ন জনপদ। এ জনপদের সুবিধাবঞ্চিত বিপুল সংখ্যক শিশুর চিকিৎসায় চাঁদপুর রোটারী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় (ফ্রি ফ্রাইডে ক্লিনিক)। বিগত চার যুগ ধরে এটি কোনোরূপ বিরতি ছাড়াই চলে আসছে। এছাড়া প্রত্যন্ত ও দারিদ্র্যপীড়িত জনপদে ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাসেবাও প্রদান করে আসছে। এমনটি দেখে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল চিকিৎসক ব্যক্তিগত ও পারিবারিক উদ্যোগেও বিভিন্ন স্থানে দাতব্য চিকিৎসালয় পরিচালনা করছেন।
১৯৮২ সালে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের উদ্যোগে চাঁদপুরের ইতিহাসের এ যাবৎকালের সর্ববৃহৎ বেসরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান চাঁদপুর মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়। হাসপাতালটির প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন এ ক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা (চার্টার) সদস্য আলহাজ্ব মাজহারুল হক ভূঁইয়া। এ হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও শরীয়তপুর জেলায় বিশেষায়িত চক্ষু চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে অন্ধত্ব প্রতিরোধে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে আসছে। চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সদস্যবৃন্দের উৎসাহে রোটাঃ আলহাজ্ব ডাঃ এম. এ. গফুর (বর্তমানে মরহুম), রোটাঃ ডাঃ নূরুর রহমান (বর্তমানে মরহুম) এবং তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক এ. এইচ. এম. ফজলুল হকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালটি ১৯৮২ সালে জার্মানীর সেবা সংস্থা আন্ধেরী হিলফির সভাপতি মিস রোজী গলমেন-এর আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতায়, কারিতাস বাংলাদেশের মধ্যস্থতায় বিএনএসবি চট্টগ্রামের ম্যানেজিং ট্রাস্টি ডাঃ মোঃ রবিউল হোসাইনের উৎসাহী ভূমিকায়, সর্বোপরি বিশিষ্ট শিল্পপতি, চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের অন্যতম চার্টার মেম্বার আলহাজ্ব মাজহারুল হক ভূঁইয়া (বর্তমানে মরহুম)-এর ভূমি দান ও আর্থিক সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ হাসপাতালটি ১৯৮৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি ও তৎকালীন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেঃ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। চাঁদপুরে আরেকটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল এখন সম্পূর্ণ নিজস্ব আঙ্গিকে পরিচালিত। এর প্রধান উদ্যোক্তা হচ্ছেন চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের চার্টার (প্রতিষ্ঠাতা) সহ-সভাপতি, চাঁদপুরের সমাজসেবায় কিংবদন্তিতুল্য ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব ডাঃ এম. এ. গফুর। এটিও যাত্রা শুরু করে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের একটি প্রকল্প হিসেবে। ডাঃ এম. এ. গফুর রোটারীর মূলমন্ত্র ‘সেবা স্বার্থের ঊর্ধ্বে’ দীক্ষিত হয়েই চাঁদপুর শহরে তাঁর প্রায় ৮ কোটি টাকা মূল্যের ভূমি দান করেছেন আধুনিক ডায়াবেটিক হাসপাতাল নির্মাণের জন্যে। বর্তমানে শহরের ষোলঘর এলাকায় নিজস্ব তহবিল ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ছয়তলা হাসপাতাল ভবনটির নির্মাণ কাজ অর্ধেক সম্পন্ন হয়েছে, যাতে ২৫ শয্যার ইনডোর এবং আউটডোর কার্যক্রম চলছে । তবে ১৯৮৭ সাল থেকে চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র কালীবাড়ি মোড়ে একটি লীজকৃত ভবনে এ হাসপাতালের আউটডোর সার্ভিস সুনামের সাথে পরিচালনা করা হয়, যেখানে বর্তমানে উক্ত হাসপাতালের সিটি সেন্টার বৈকালীন সেবা প্রদান করে আসছে।
সত্তরের দশকে চাঁদপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন চাঁদপুরের একজন সর্বজনশ্রদ্ধেয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের অন্যতম সদস্য আঃ করিম পাটোয়ারী (বর্তমানে মরহুম)। তাঁর কাছে চাঁদপুরে একটি প্রধান ঈদগাহ নির্মাণের প্রস্তাব উত্থাপন করে চাঁদপুর রোটারী ক্লাব। তিনি নিজেও এর তাগিদ অনুভব করেন। আর প্রধান ঈদগাহ নির্মাণকে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের ১টি প্রকল্প হিসেবে দেখিয়ে চাঁদপুর পৌরসভাকে ১০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয় এবং খুব দ্রুত ঈদগাহটি নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করা হয়। জনাব আব্দুল করিম পাটওয়ারী শহরের পাঁচ রাস্তার মোড় (বর্তমানে শপথ চত্বর) থেকে বাস স্ট্যান্ড স্থানান্তর করে নিয়ে যান তালতলায়। আর সেখানে যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করে দেয় চাঁদপুর রোটারী ক্লাব। শুধু তা-ই নয়, চাঁদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে তৈরি করে ট্রাফিক আইল্যান্ড। এছাড়া পুরাতন জজ কোর্ট এলাকায় বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ দেখে তা’ নিরসনে ছাউনি নির্মাণে এগিয়ে আসে চাঁদপুর রোটারী ক্লাব। ১৯৮৭-৮৮ রোটারী বর্ষে স্ট্র্যান্ড রোড (বর্তমান কবি নজরুল সড়ক)-এ নির্মাণ করে চাঁদপুর রোটারী ভবন এবং এর সামনে পৌরসভা কর্তৃক চালুকৃত শিশুপার্ক পরিচালনায় সহযোগিতা প্রদান করে।
ক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম চাঁদপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক অবিস্মরণীয় ও পরম শ্রদ্ধেয় নাম। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে ইতিহাসের পাতায় শুধু নিজের নাম লেখান নি, জনপ্রতিনিধি (এমপি) ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে সকল মহলে অনেক খ্যাতি অর্জন করেন। একজন রোটারিয়ান হিসেবে তাঁর সবচে’ বড় সাফল্য হচ্ছে, তিনি তাঁর মেজোপুত্র অ্যাডভোকেট সাইয়েদুল ইসলাম বাবুকে রোটারীর আদর্শে উদ্বুদ্ধ করেছেন, যিনি পিতার ৪০ বছর পর চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সভাপতির দায়িত্বপালন করছেন। শুধু তা-ই নয় বর্তমানে রোটারীর ডিস্ট্রিক্ট পর্যায়ে ডেপুটি গভর্নরের দায়িত্ব পালন করছেন।
চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের নেতৃবৃন্দের মুখ্য ভূমিকায় চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারে রেডক্রিসেন্ট মাতৃমঙ্গল হাসপাতাল ও ধাত্রীবিদ্যা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হয়। বর্তমানে কবি নজরুল সড়ক (স্ট্র্যান্ড রোড)-এ ত্রিতলবিশিষ্ট রেডক্রিসেন্ট ভবন নির্মাণের উদ্যোক্তা হচ্ছেন চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের চার্টার মেম্বার রোটাঃ পিপি আলহাজ্ব এম. এ. মাসুদ ভূঁইয়া, পিএইচএফ, এমসি। এ ভবন নির্মাণে তাঁর পরিবারের আর্থিক অনুদান চার লাখ টাকার ওপরে। জনাব মাসুদ ভূঁইয়া স্বীয় যোগ্যতা ও দক্ষতায় রেডক্রিসেন্ট চাঁদপুর ইউনিটে ১৯৭৮ সাল থেকে অদ্যাবধি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
চাঁদপুরের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন চেম্বার অব কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রোটাঃ আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম। তিনি এতোটাই বলিষ্ঠ সংগঠক যে, তিনি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর পরিচালক পদে ছয়বার নির্বাচিত হওয়ার বিরল রেকর্ড স্থাপন করেছেন। তিনি চাঁদপুর শহরের প্রথম বেসরকারি কলেজ পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজ, আধুনিক শিশু শিক্ষালয় উদয়ন শিশু বিদ্যালয়, পুরানবাজার মার্চেন্টস্ একাডেমী প্রতিষ্ঠায় এবং ভাঙ্গন কবলিত পুরানবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় স্থানান্তরিত করে এর অবকাঠামো নির্মাণ ও কার্যক্রম পরিচালনায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে চলছেন। তাঁকে এক্ষেত্রে মেধা-শ্রম দিয়ে যিনি বিশেষ সহযোগিতা করছেন তিনি হচ্ছেন চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটাঃ পিপি সুভাষ চন্দ্র রায়, পিএইচএফ। জনাব সেলিম আখন্দ ধর্মীয় কাজেও অগ্রণী ভূমিকায় অবতীর্ণ। তিনি চাঁদপুর শহরের ঐতিহাসিক বেগম জামে মসজিদের আধুনিক ভবন নির্মাণ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ও ঈদগাহ প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্যোক্তা। তিনি প্রসিদ্ধ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান জাফরাবাদ কাসেমুল উলুম মাদ্রাসা, বাস স্ট্যান্ড মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় বিরাট ভূমিকা রেখে চলছেন।
চাঁদপুরে পরিবার পরিকল্পনা সংক্রান্ত বিএভিএস হাসপাতাল (অধুনালুপ্ত) প্রতিষ্ঠায় চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা (চার্টার) সভাপতি ডাঃ নূরুর রহমানের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি ধূমপান বিরোধী সংগঠন ‘আধূনিক’ (আমরা ধূমপান নিবারণ করি), জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতি (নাটাব), ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের শাখা প্রতিষ্ঠায় পথিকৃৎ-এর ভূমিকা পালন করেন। চাঁদপুরে শিল্পকলা, সাহিত্য একাডেমী প্রতিষ্ঠায় তাঁর ভূমিকা খুবই স্মরণযোগ্য।
চাঁদপুরে বেসরকারি উদ্যোগে গ্রামোন্নয়নের পথিকৃৎ হচ্ছে চাঁদপুর রোটারী ক্লাব। বাবুরহাট এলাকার শিলন্দিয়া এবং বাগাদী ইউনিয়নের নানুপুর গ্রামকে ‘রোটারী ভিলেজ’ প্রকল্পের আওতায় এনে সেখানে জাতি গঠনমূলক বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা, আত্মকর্মসংস্থান, জনস্বাস্থ্য, চিকিৎসা সেবা ও শিক্ষা উন্নয়ন সংক্রান্ত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। এ কার্যক্রমটির সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের স্পন্সরে গঠিত চাঁদপুর সেন্ট্রাল রোটারী ক্লাব শহরতলীর ইচলীতে প্রতিষ্ঠা করে একটি রোটারী ভিলেজ। যেখানে রোটারীর অর্থায়নে লো-কস্ট হাউজিংসহ জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতির উন্নয়নে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডসহ বহুবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়।
১৯৮৬-৮৭ রোটারী বর্ষে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের একটি ব্যতিক্রমী কার্যক্রম এখনো স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করছে, আর সেটি হচ্ছে বাবুরহাট সরকারি এতিমখানার ১১ জন মেয়েকে সুপাত্রস্থ করা এবং তাদের স্বামীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশের তৎকালীন ফার্স্ট লেডি রওশন এরশাদ উপস্থিত ছিলেন। যার ব্যাপক মিডিয়া কভারেজে সারাদেশে রোটারীর উজ্জ্বল ভাবমূর্তি তৈরি হয়।
চাঁদপুর প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠায়ও রয়েছে একজন রোটারিয়ানের মুখ্য ভূমিকা। তিনি হচ্ছেন চাঁদপুর রোটারী ক্লাব প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্যোক্তা, চার্টার মেম্বার, বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ, প্রবীণ সাংবাদিক আলহাজ্ব কামরুজ্জামান চৌধুরী (বর্তমানে মরহুম)। তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে স্বীয় যোগ্যতা ও দক্ষতায় সুদীর্ঘ পঁচিশ বছর যাবৎ চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত থেকে স্থানীয় সাংবাদিকদের বলিষ্ঠভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
চাঁদপুরের চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)-এর নেতৃত্বে সভাপতি পদে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন এঁরা অনেকেই রোটারিয়ান। শ্রদ্ধাভরে এ নামগুলো উল্লেখ করতেই হয়। যেমন : রোটাঃ পিপি ডাঃ নূরুর রহমান (মরহুম), রোটাঃ পিপি আলহাজ্ব ডাঃ এম. এ. গফুর (মরহুম), রোটাঃ পিপি আলহাজ্ব এস. এম. সহিদ উল্লাহ্ ও রোটাঃ পিপি ডাঃ মোঃ এ. কিউ. রুহুল আমিন (বর্তমানে মরহুম)। বাংলাদেশে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমে মডেল হিসেবে স্বীকৃত হচ্ছে চাঁদপুরের কমিউনিটি পুলিশ। কমিউনিটি পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চল-১ নামে যে সংগঠনটি মডেলে রূপ নেয় সেটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হচ্ছেন রোটাঃ পিপি ডাঃ মোঃ এ. কিউ. রুহুল আমিন, যিনি পরবর্তীতে চাঁদপুর জেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের প্রথম সভাপতি মনোনীত হয়ে দু বছর ও পরবর্তীতে আরো একবার দায়িত্ব পালন করেন। চাঁদপুর অঞ্চল-১-এ কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের সাফল্য দেখে অঞ্চল-২ প্রতিষ্ঠায় রোটাঃ পিপি আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম, আরএফএসএম (সভাপতি), রোটাঃ পিপি সুভাষ চন্দ্র রায় পিএইচএফ (সহ-সভাপতি), রোটাঃ পিপি তমাল কুমার ঘোষ (সাধারণ সম্পাদক), অঞ্চল-৩ প্রতিষ্ঠায় রোটাঃ পিপি আলহাজ্ব ডাঃ এস. এম. সহিদ উল্লাহ্ (সভাপতি), অঞ্চল-৪ প্রতিষ্ঠায় রোটাঃ পিপি আলহাজ্ব রশিদ আহমেদ (সভাপতি) ও রোটাঃ পিপি মিজানুর রহমান খান, আরএফএসএম (সাধারণ সম্পাদক), অঞ্চল-৫ প্রতিষ্ঠায় রোটাঃ কাজী শাহাদাত (সভাপতি) মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। মেয়াদ শেষে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের জেলা সভাপতির দায়িত্বও একজন রোটারিয়ান ডাঃ মোঃ এ. কিউ. রুহুল আমিন হস্তান্তর করেন আরেকজন রোটারিয়ান ডাঃ এস. এম. সহিদ উল্যাহ্কে। গ্রহণযোগ্যতা, নেতৃত্বের গুণাবলিতে কতোটা সমৃদ্ধ হলে রোটারিয়ানদের হাতেই ভালো কাজের নেতৃত্ব ঘুরে ফিরে থেকে যায় চাঁদপুরের কমিউনিটি পুলিশিং তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
১৯৭০ সালে চাঁদপুর রোটারী ক্লাব প্রতিষ্ঠার পর চাঁদপুর অঞ্চলে যতবার ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা হয়েছে ততোবারই ত্রাণ তৎপরতা ও চিকিৎসা সেবা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে চাঁদপুর রোটারী ক্লাব ও রোটার্যাক্ট ক্লাব। আর শীতার্ত মানুষের মাঝে প্রতি বছরই বিলিয়ে আসছে বিভিন্ন ধরনের শীতবস্ত্র। গরিব শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ কার্যক্রমও প্রতি বছর চালিয়ে আসছে চাঁদপুর রোটারী ক্লাব। ভ্রাম্যমাণ চক্ষু চিকিৎসা শিবির পরিচালনা, বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও রক্ত সংগ্রহ অভিযানে চাঁদপুর রোটারী ও দুটি রোটার্যাক্ট ক্লাব প্রচুর কাজ করেছে। রিকশা চালকদের মাঝে রেইন কোট ও বৃষ্টি রোধক পর্দা বিতরণ বেশ প্রশংসিত হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা রোটারী ক্লাবের সাথে যৌথভাবে একটি প্রকল্পে অংশ নিয়ে ছত্রিশ জন গরিব-এতিম শিক্ষার্থীর প্রতিজনকে সাড়ে তিন হাজার টাকা করে মোট এক লাখ ছাব্বিশ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন সামগ্রী প্রদান কার্যক্রমও প্রশংসিত হয়েছে।
চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের বার্ষিক কর্মসূচির অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে বৃক্ষরোপণ। বিগত বছরগুলোতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জজ কোর্ট প্রাঙ্গণ, সিভিল সার্জনের কার্যালয় ও জেনারেল হাসপাতালের আঙ্গিনা, প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ, স্টেডিয়াম প্যাভিলিয়নের আঙ্গিনা সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনার পাশে ও আঙ্গিনায় রোটারী ও রোটার্যাক্ট ক্লাবের বৃক্ষরোপণ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ২০০৯-১০ রোটারী বর্ষে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এ ক্লাবের দু’বারের সাবেক সভাপতি রোটাঃ পিপি অ্যাডঃ এ. বি. এম. মোনাওয়ার উল্লাহ্র উদ্যোগে ও তাঁর পিতা-মাতার নামে প্রতিষ্ঠিত ছবিল-হাবিব ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে চাঁদপুর শহরতলীর বিভিন্ন গ্রাম, হাইমচরের চরাঞ্চল ও হাজীগঞ্জে দশ হাজারের বেশি মূল্যবান ফলজ ও বনজ গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে। একইভাবে উক্ত ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে গরিব-মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ, নগদ অর্থ সহায়তা, রিকশা চালকদের মাঝে আয় থেকে দায় শোধ পদ্ধতিতে রিকশা বিতরণ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাঝে ঋণ প্রদান, গরিব চলাঞ্চলবাসীর মাঝে ছাগল বিতরণ, বন্যায় ত্রাণ তৎপরতা ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
চাঁদপুর রোটারী ভবনের পাশেই ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল। বিস্ময়কর হলেও সত্য, এ হাসপাতালের শত শত রোগীর জন্যে বিশুদ্ধ খাবার পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। এদের জন্যে লাগাতার ১৬ বছর যাবৎ চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের উদ্যোগে আর্সেনিকমুক্ত বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এটা সাধারণ দৃষ্টিতে দেখতে ক্ষুদ্র কাজ মনে হলেও এটা যে কতো বড় মানবিক সেবা সেটা রোগীদের সাথে আলোচনা করলেই বোঝা যায়।
চাঁদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পেপার স্ট্যান্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ টেলিফোন নম্বর ও তথ্য সম্বলিত বোর্ড চাঁদপুর রোটারী ক্লাবই প্রথম স্থাপন করে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ কালীবাড়ি মোড়ে প্রেসক্লাব রোডের মাথায় পেপার স্ট্যান্ডে গত ৩০ বছরেরও অধিক সময় ধরে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের খরচে দুটি করে দৈনিক পত্রিকা সাঁটানো হচ্ছে, যেখানে প্রতিদিন শত শত শহরবাসী ও পথচারী দেশ-বিদেশের এবং স্থানীয় খবর পড়তে পারছে।
হিন্দু ধর্মীয় সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালনায় চাঁদপুরে নেতৃত্বের ক্ষেত্রে যাঁর নামটি সর্বাগ্রে চলে আসে তিনি হচ্ছেন চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটাঃ পিপি সুভাষ চন্দ্র রায়, পিএইচএফ। তিনি চাঁদপুর কালীবাড়ি মন্দির কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারি, রামকৃষ্ণ আশ্রম পরিচালনা কমিটির সভাপতি, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতিসহ পুরাণবাজারের সকল মন্দির প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন এবং করছেন। তিনি চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে চাঁদপুর ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। এছাড়া ক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী তমাল কুমার ঘোষ, আরএফএসএম জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।
চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের নেতৃবৃন্দ, সদস্য-সদস্যাগণ চাঁদপুরের গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানসমূহের কোথায় না আছেন? ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটাঃ পিপি প্রফেসর বিলকিস আজিজ, আরএফএসএম (বিভাগীয় প্রধান, ইসলামের ইতিহাস বিভাগ, ইডেন কলেজ ও মিরপুর বাংলা কলেজ, ঢাকা, পাবনা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে অধ্যক্ষ হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত) বাংলাদেশ মহিলা সমিতি চাঁদপুর জেলা শাখার সভানেত্রী। ক্লাবের অন্যতম পরিচালক রোটাঃ আলহাজ্ব অ্যাডঃ ইকবাল-বিন-বাশার চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির একাধিকবারের সভাপতি, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সহ-সভাপতি, শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের পর পর তিন মেয়াদে দায়িত্ব পালনকারী সাবেক সভাপতি, চাঁদপুরের প্রথম দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিষ্ঠাতা, সম্পাদক ও প্রকাশক। ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটাঃ কাজী শাহাদাত চাঁদপুর সুইমিং ক্লাব ও চাঁদপুর সাঁতার পরিষদের সভাপতি, সনাক-টিআইবির চারবারের সভাপতি, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, সাহিত্য একাডেমীর সাবেক মহাপরিচালক এবং বহুবিধ সামাজিক কাজে নিয়োজিত। ক্লাবের সাবেক সভাপতি, সাবেক অ্যাসিস্টেন্ট গভর্নর রোটাঃ পিপি মিজানুর রহমান খান আরএফএসএম বাগাদী ইউনিয়নের নানুপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে ৩০ বছরের অধিক সময় এ দায়িত্বে অধিষ্ঠিত। রোটাঃ পিপি অ্যাডঃ জামিল হায়দার বুলবুল প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে একজন সফল ব্যক্তি, যিনি চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারে খেটে খাওয়া মানুষদের সন্তানদের নিয়ে পরিচালিত স্কুলের সফল সভাপতি, যে স্কুলের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে ভালো ফলাফল করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটাঃ পিপি তমাল কুমার ঘোষ চাঁদপুরের ব্যবসায়িক মহলে একজন স্থিতধী ও বোদ্ধা হিসেবে সুপরিচিত, যিনি চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। আরেক সাবেক সভাপতি রোটাঃ পিপি অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার চাঁদপুরের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘চতুরঙ্গে’র চেয়ারম্যান, বহুল আলোচিত সংগঠন ‘জীবনদীপ’-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতিসহ বহুবিধ ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত। ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটাঃ পিপি অধ্যাপক মোঃ জাকির হোসেন চাঁদপুর জেলা কিন্ডারগার্টেন ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ও বাকশিস-এর অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা এবং আরেকজন সাবেক সভাপতি রোটাঃ পিপি অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল চাঁদপুরে কলেজ পর্যায়ে সেরা গণিত শিক্ষক ও একজন সফল সংগঠক, তাঁর কর্মকালে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবকে বেশ ক’টি উল্লেখযোগ্য সফলতায় রোটারী জেলায় আলোচনায় ও বিশেষ মর্যাদায় স্থান অর্জন করিয়ে দিয়েছেন। তিনি বর্তমানে আমেরিকায় অধ্যাপনা করছেন এবং শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন। বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটাঃ পিপি আলহাজ্ব প্রকৌঃ জয়নাল আবেদীন (অবসরপ্রাপ্ত উপজেলা প্রকৌশলী) চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল ভবন নির্মাণে সাহসী ও কষ্টসাধ্য ভূমিকা পালন করেছেন। সাবেক সভাপতি রোটাঃ আলহাজ্ব আবুল কাশেম গাজী ধানক্রাসার মালিক সমিতির সভাপতি ও চাঁদপুর শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন (বর্তমানে মরহুম)। ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি রোটাঃ রেজওয়ানুর রহমান রিজু চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির কার্যনির্বাহী পরিষদের সাবেক সদস্য, বর্তমান পরিচালক এবং চাঁদপুর রূপসী রোটার্যাক্ট ক্লাবের সফল চার্টার (প্রতিষ্ঠাতা) প্রেসিডেন্ট। ক্লাবের প্রবীণ সদস্য প্রয়াত রোটাঃ পরেশ সাহা সড়ক পরিবহন সংক্রান্ত সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন ছাড়াও ধর্মীয় ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় দাতা হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন। আরেক প্রবীণ সদস্য রোটাঃ হাফিজ মিয়া চাঁদপুরে হার্ডওয়্যার ব্যবসার ক্ষেত্রে পথিকৃৎ-এর ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন চাঁদপুর জেলা হার্ডওয়্যার মালিক সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মরহুম রোটাঃ পিপি আখতারুজ্জামান বাবুল ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও চাঁদপুর রোটার্যাক্ট ক্লাবের সাবেক সভাপতি হিসেবে চাঁদপুরে প্রচুর সমাজসেবামূলক কাজ করেছেন। ক্লাবের সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী রোটাঃ প্রকৌঃ দীন-উল ইসলাম (বর্তমানে মরহুম) চাঁদপুর জেলা হার্ডওয়্যার মালিক সমিতি ও কমিউনিটি পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চল-১৩-এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সাবেক সাধারণ সম্পাদক রোটাঃ মোশারেফ হোসেন চৌধুরী মানিক বাংলাদেশে উন্নতমানের মনোসেক্স তেলাপিয়ার পোনা উৎপাদন ও বিপণনে সফল একটি নাম। চাঁদপুরের প্রথম হোমিওপ্যাথি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন ক্লাবের সাবেক সম্পাদক রোটাঃ অধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ মোজাম্মেল হক পাটোয়ারী। ক্লাবের সাবেক পরিচালক বিশ্বেশ্বর রায় অমিত চাঁদপুর শহরের অন্যতম প্রসিদ্ধ পোশাক বিপণীর স্বত্বাধিকারী। ক্লাবের আরেক সাবেক পরিচালক রোটাঃ সালাউদ্দিন মোঃ বাবর একজন রাজনীতিক, সমাজসেবক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। ক্লাবের সাবেক সেক্রেটারী রোটাঃ তোফায়েল আহাম্মদ শেখ (বর্তমানে শাহরাস্তি পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা) একজন বিশিষ্ট লেখক ও সংগঠক, যিনি ত্রিশের অধিক সংগঠন-প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট থেকেও তার পেশাগত দায়িত্ব সুনামের সাথে পালন করছেন। সাবেক সভাপতি রোটাঃ নাসির উদ্দিন খান একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সংগীতশিল্পী ও সংস্কৃতি সংগঠক। ক্লাবের সদ্য সাবেক সভাপতি রোটাঃ শাহেদুল হক মোর্শেদ একজন বলিষ্ঠ সংগঠক, যিনি চাঁদপুর রোটার্যাক্ট ক্লাব ও ইন্টার্যাক্ট ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন ছাড়াও ২০০৯ সালে রোটারী জেলা-৩২৮০, বাংলাদেশ-এর আওতাধীন দু’শতাধিক রোটার্যাক্ট ক্লাবের অ্যাসেম্বলী (‘উজান’) চাঁদপুরে আয়োজনে সফল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা। তিনি রোটারী ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় অত্যাধুনিক আবাসিক হোটেল ‘গ্র্যান্ড হিলশা’ নির্মাণ করে ব্যবসায়িকভাবে সফল হয়েছেন। তিনি এ হোটেলের এমডির দায়িত্ব পালন করেছেন। সাথে চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন ক্লাবের বর্তমান সভাপতি রোটাঃ খোরশেদ আলম পাটওয়ারী কাঞ্চন ও পার্টনার রোটাঃ নাজিমুল ইসলাম এমিল। জনাব মোর্শেদ তাঁর এক বছরে এতো কাজ করেছেন যে, তিনি ১৬টি পুরস্কার লাভ করেছেন। ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট রোটাঃ মোঃ মোস্তফা চাঁদপুর জেলা স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি। রাজনীতিতে, নারী নেতৃত্বে মরহুম রোটাঃ অধ্যক্ষ শাহীন সুলতানা ফেন্সী ছিলেন চাঁদপুরের প্রতিষ্ঠিত একটি নাম (বর্তমানে মরহুম)। চাঁদপুর সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের দুই দশকেরও অধিক সময় ধরে সংসদ কমান্ডার হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন এ ক্লাবেরই সদস্য রোটাঃ আলহাজ্ব হারুন চৌধুরী (বর্তমানে মরহুম), যিনি পশ্চিম সকদী ডিবি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির শ্রেষ্ঠ সভাপতি হিসেবে জাতীয়ভাবে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পুরস্কৃত। এ ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটাঃ সাইয়েদুল ইসলাম বাবু চাঁদপুর জেলা জজ কোর্টে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের স্পেশাল পিপি হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী বছরে ক্লাবের সভাপতি ও সাবেক সেক্রেটারী রোটাঃ অ্যাডঃ শরীফ মাহমুদ ফেরদৌস শাহীন এবং সাবেক সেক্রেটারী ও বর্তমান সহ-সভাপতি রোটাঃ অ্যাডঃ নজরুল ইসলামের রয়েছে পেশাগত প্রভূত সুনাম, যাঁরা ভালো সমাজসেবক ও সংগঠক। ক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি রোটাঃ সূর্য কুমার নাথ কেবলমাত্র পুরাণবাজার মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নয়, একজন মেধাবী ও শ্রদ্ধেয় শিক্ষক হিসেবে সকল মহলে সমাদৃত। বর্তমান সভাপতি রোটাঃ খোরশেদ আলম কাঞ্চন পাটওয়ারী হেল্থ কেয়ার প্রোডাক্টস্ মার্কেটিংয়ে চাঁদপুরের শীর্ষস্থানীয় পেশাজীবী হিসেবে সমাদৃত। দেশব্যাপী ক্রিকেট প্রতিভা অন্বেষণ ও চাঁদপুরের ক্রিকেটকে উঁচু স্থানে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যিনি অগ্রণী তিনিও চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সদস্য, যার নাম রোটাঃ শেখ মঞ্জুরুল কাদের সোহেল। চিকিৎসা পেশায় যথেষ্ট সুনামের অধিকারী এমন চিকিৎসকের মধ্যে স্থান রয়েছে যাঁদের, তাঁদের ক’জনও চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সদস্য, যেমন ঃ রোটাঃ পিপি ডাঃ এম. জি. ফারুক ভূঁইয়া (সাবেক সিভিল সার্জন, রোটারী জেলা ৩২৮০, বাংলাদেশ-এর সাবেক অ্যাসিস্টেন্ট গভর্নর), রোটাঃ ডাঃ এস. কে. মজুমদার (সাবেক সভাপতি) ও ডাঃ মোঃ মোবারক হোসেন চৌধুরী। এঁদের মধ্যে জেনারেল ফিজিশিয়ান হিসেবে ডাঃ ফারুক এবং সার্জারিতে ও জেনারেল ফিজিশিয়ান হিসেবে ডাঃ মোবারক হোসেন চাঁদপুরের বহুল পরিচিত নাম। বিশিষ্ট ব্যাংকারদের মধ্যে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবে ছিলেন দুজন : রোটাঃ আলী হোসেন হাওলাদার ও রোটাঃ মোঃ সালাউদ্দিন, যাঁরা স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে ছিলেন খুবই সুনামের অধিকারী। বর্তমানে রয়েছেন জনতা ব্যাংক চাঁদপুর কর্পোরেট শাখার সুদক্ষ ম্যানেজার রোটাঃ আবদুল্লাহ আল মামুন। চাঁদপুর সরকারি কলেজের স্বনামধন্য সাবেক শিক্ষকদের মধ্য থেকেও একজন রয়েছেন চাঁদপুর রোটারী ক্লাবে, যিনি ক্লাবের সাবেক সভাপতি, যাঁর নাম রোটাঃ মোঃ গোলাম মোস্তফা (সহযোগী অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ), বর্তমানে তিনি সিনিয়র স্পেশালিস্ট হিসেবে বাংলাদেশ টেক্সটবুক বোর্ডে কর্মরত আছেন।
চাঁদপুর-ঢাকা নৌ পরিবহনের ক্ষেত্রে যিনি প্রথম আধুনিকত্ব যাত্রীদের কাছে উপস্থাপন করেছেন, তিনিও হচ্ছেন চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সাবেক প্রবীণ সদস্য রোটাঃ আলহাজ্ব এম. এ. বারী খান (এমভি রফ রফ ও বোরাকের স্বত্বাধিকারী)। চাঁদপুরের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক, যাকে এক নামে সকলে চেনেন এমন একজনও ছিলেন চাঁদপুর রোটারী ক্লাবে। তিনি হচ্ছেন : রোটাঃ শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক (সভাপতি, চাঁদপুর জেলা বিএনপি)। জনাব মানিক জাতীয় পর্যায়ে খ্যাতিমান সাবেক বাস্কেট বল খেলোয়াড়। ক্লাবের সাবেক সদস্য রোটাঃ গাজী শাহাদাত হোসেন চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এবং পরবর্তীতে বিজেএমসির আওতাভুক্ত বেশ ক’টি জুট মিলের জিএম হিসেবে যথেষ্ট দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। চাঁদপুর রোটার্যাক্ট ক্লাবের পর পর দুবারের সাবেক সভাপতি, তরুণ সংগঠক, এনজিও উদ্যোক্তা অ্যাডঃ পলাশ মজুমদার চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সদ্য সাবেক সম্পাদক ও চাঁদপুর জেলা জজ কোর্টের এপিপি পদে কর্মরত আছেন।
এ ক্লাবে অনারারী মেম্বার হিসেবে ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা বিচারপতি বিবি রায় চৌধুরী। সাবেক অনারারী মেম্বার হচ্ছেন বাংলাদেশের অন্যতম খ্যাতনামা জুট টেকনোলজিস্ট রোটাঃ এ. বি. মহসিন উল্লাহ্। তিনি চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সেরা প্রজেক্ট ডায়াবেটিক হাসপাতালে ৫০ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেছেন। এছাড়া চাঁদপুর পৌরসভার সদ্য বিদায়ী মেয়র আলহাজ্ব নাছির উদ্দিন আহমেদ, সদ্য সাবেক সচিব মোঃ শাহ কামাল এবং বর্তমান ভূমি সচিব মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সাবেক অনারারী মেম্বার ছিলেন। চাঁদপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েলও উক্ত ক্লাবের অনারারী মেম্বার।
চাঁদপুরে দুর্নীতি প্রতিরোধমূলক দুটি বহুল পরিচিত সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছেন চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সদস্যবৃন্দ। দুদকের মাধ্যমে গঠিত জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক)-এর জেলা সভাপতি ছিলেন রোটাঃ পিপি আলহাজ্ব ডাঃ এম. এ. গফুর ও সচিব ছিলেন ক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক দেলোয়ার আহমেদ। সদর উপজেলা কমিটির সচিব ছিলেন রোটাঃ পিপি মিজানুর রহমান খান আরএফএসএম। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর মাধ্যমে গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) চাঁদপুর-এর এগার সদস্য বিশিষ্ট কমিটির ৪ জনই রোটারিয়ান ও ২ জন সাবেক রোটারিয়ান। এ দু’টি সংগঠনে রোটারিয়ানদের ব্যাপক সংশ্লিষ্টতায় চাঁদপুরের প্রশাসন, রাজনৈতিক অঙ্গন ও সর্বমহলে সৃষ্টি হয়েছে রোটারীর আলাদা ভাবমূর্তি।
চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের চার্টার সেক্রেটারী রোটাঃ প্রফেসর জালাল ইউ আহমেদ (বর্তমানে মরহুম) ঢাকা নর্থ সাউথ রোটারী ক্লাবে যোগদান করে সাংগঠনিক দক্ষতায় রোটারী জেলা-৩২৮০ বাংলাদেশ-এর গভর্নর নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের চার্টার প্রেসিডেন্ট রোটাঃ পিপি ডাঃ নূরুর রহমান চাঁদপুরে থেকেই গভর্নর নির্বাচন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন এবং রোটারী বিশ্বের মর্যাদাকর পদক ‘ঝবৎারপব অনড়াব ঝবষভ’ অ্যাওয়ার্ড পেয়ে সম্মানিত হয়েছেন। এ ক্লাবের চার্টার মেম্বারদের মধ্যে অ্যাডঃ নাছির উদ্দিন পাটোয়ারী, অ্যাডঃ বিমল চন্দ্র বোস, সাধুচরণ ওয়াস্তি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জয়নুল আবেদিন পিএইচএফ, সুবীর পোদ্দার, ডাঃ আমিন আহমেদ, ডাঃ আমিনুল ইসলাম তরফদার, আলহাজ্ব দেওয়ান আবুল খায়ের, আয়াত আলী ভূঁইয়া, আবদুল্লাহ্ সরকার, আঃ করিম খান, রোটাঃ পিপি ফজলুর রহমান, শাহ্ আমান উল্লাহ্ মানিক, রোটাঃ পিপি আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন চৌধুরী প্রমুখ বর্তমানে বেঁচে না থাকলেও স্ব স্ব ক্ষেত্রে অবদানের জন্যে এঁরা চাঁদপুরের ইতিহাসে এবং রোটারী অঙ্গনে উজ্জ্বল অবস্থানে রয়ে গেছেন। আর সাবেক সভাপতিগণের মধ্যে মরহুম রোটাঃ অ্যাডঃ সিরাজুল ইসলাম (সাবেক এমপি ও সাবেক সভাপতি, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ), আলহাজ্ব মোস্তাক হায়দার চৌধুরী (বর্তমানে মরহুম), মোস্তাফিজুল কাদের, রোটাঃ আলহাজ্ব ডাঃ আবুল খায়ের গোলদার (মরহুম), ডাঃ সামছুল হক (সাবেক সিভিল সার্জন), এ. কে. এম. মজিবুর রহমান স্বপন (উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড), অধ্যাপক দেলোয়ার আহমেদ (সাবেক অধ্যক্ষ, পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজ), পিপি আলহাজ্ব রশিদ আহমেদ (বর্তমানে মরহুম), প্রখ্যাত আয়কর উপদেষ্টা শাহ মোঃ কুদ্দুছ, অ্যাডঃ রুহুল আমিন সরকার (দুলাল), আলহাজ্ব প্রকৌঃ জয়নাল আবেদিন তাঁদের ব্যাপক সামাজিক কর্মকাণ্ডে রোটারী অঙ্গনে স্মরণীয় হয়ে আছেন। আর ক্লাবের সাবেক সেক্রেটারীদের মধ্যে দিলওয়ার হোসাইন (স্বত্বাধিকারী, ঢাকা কনফেকশনারী), রোটাঃ অধ্যাপক কাজী আকবর হোসাইন, রোটাঃ পিপি শেখ হাবিবুর রহমান (পরবর্তীতে চার্টার প্রেসিডেন্ট, চাঁদপুর সেন্ট্রাল রোটারী ক্লাব), অ্যাডঃ মিজানুর রহমান, বিশিষ্ট ব্যাংকার অজিত কুমার চন্দ, রোটাঃ প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন পিএইচএফ (বর্তমানে মরহুম), রোটাঃ রেজওয়ানুর রহমান রিজু, ক্লাবের সাবেক সেক্রেটারী ও সভাপতি, প্রসিদ্ধ ঔষধ ও ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসায়ী রোটাঃ নজরুল আমিন চৌধুরী সাজু, ডাঃ এস. কে. মজুমদারের নাম কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করতে হয়। এঁদের মধ্যে ডাঃ এস. কে. মজুমদার দাঁতের চিকিৎসক হয়েও রোটারীর দাতব্য চিকিৎসালয়ে অন্তত ১০ বছর যাবৎ শিশুদের সেবা দিয়ে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন। ক্লাবের বর্তমান সম্পাদক রোটাঃ ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া চাঁদপুরে বহুল পরিচিত এক নাম। তিনি একাধারে ছড়াকার, প্রবন্ধকার, গল্পকার, উপস্থাপক, আবৃত্তিকার ও চাঁদপুর বিতর্ক একাডেমীর অধ্যক্ষ। ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ও আগামী বছরের সেক্রেটারী রোটাঃ উজ্জ্বল হোসাইন চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের আইটি অফিসার ও বিশিষ্ট সংগঠক এবং চাঁদপুর জেলার প্রথম ব্র্যান্ডিং বইয়ের গ্রাফিক্স ডিজাইনার। চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে রোটাঃ আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটওয়ারী দুবার নির্বাচিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, রোটাঃ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পাটওয়ারী একজন ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী হিসেবে স্বনামধন্য, রোটাঃ আলহাজ্ব রফিকুর রহমান শহরের সুপ্রতিষ্ঠিত তমা প্লাজার মালিক, রোটাঃ রাশেদ শাহরিয়ার পলাশ দৈনিক বাণিজ্য প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক, ক্লাবের বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক রোটাঃ মাহবুবুর রহমান সুমন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ও দৈনিক ইল্শেপাড়ে প্রধান সম্পাদক (যিনি চাঁদপুরের রোটারীর ইতিহাসে রোটারী ফাউন্ডেশনে সর্বোচ্চ তিন হাজার ডলার দান করে এমপিএইচ হয়েছেন), রোটাঃ গোপাল সাহা বিখ্যাত ব্যবসায়ী, চেম্বারের পরিচালক ও জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি, রোটাঃ মাহবুবুর রহমান সেলিম বিশিষ্ট লেখক ও সংগঠক, রোটাঃ কাজী মিজানুর রহমান দক্ষ প্রিন্টিং ব্যবসায়ী ও নীরব সমাজসেবক, রোটাঃ সাব্বির আজম খ্যাতিমান বিতার্কিক, সংগঠক ও উদ্যোক্তা, রোটাঃ অ্যাডঃ শাহাদাত হোসেন চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বিশিষ্ট সংগঠক ও সমাজসেবক), রোটাঃ হযরত আলী বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক, রোটাঃ রফিকুল ইসলাম বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সংগঠক, রোটাঃ বিপন সাহা বিশিষ্ট চাল ব্যবসায়ী, রোটাঃ হিরেন্দ্র দেবনাথ নামকরা ইংরেজির শিক্ষক, রোটাঃ সদর উদ্দিন বহু পুরস্কারপ্রাপ্ত বীমা সংগঠক ও ব্যবস্থাপক, ক্লাবের সক্রিয় নারী সদস্য রোটাঃ শাহানা ইসলাম দক্ষ বীমা কর্মকর্তা, রোটাঃ নাজিমুল ইসলাম এমিল সফল ও দক্ষ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসায়ী, রোটাঃ নাছির আহমেদ চোকদার সদ্য সাবেক পৌর কাউন্সিলর ও ক্রীড়াবিদ, রোটাঃ হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজের হিসাব বিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান ও বিতর্ক সংগঠন সিডিএমণ্ডএর সাবেক সভাপতি, রোটাঃ জুয়েল হাসান উদীয়মান ল্যান্ড ডেভলপার, রোটাঃ মহসীন পাঠান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার সাবেক চেয়ারম্যান, রোটাঃ ডাঃ মাহমুদুন নবী মাসুম বিএমএ চাঁদপুরের দীর্ঘ দিনের সেক্রেটারী, ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেল চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আরএমও, রোটাঃ সঞ্জয় অধিকারী আয়কর উপদেষ্টা, মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের কর্মকর্তা ও ঢাকা কনফেকশনারীর ম্যানেজার, রোটাঃ কবির হোসেন খান শীর্ষ স্থানীয় পোল্ট্রি ফিড ব্যবসায়ী, প্রবাসী ব্যবসায়ী রোটাঃ দুলাল সরদার ‘অঙ্গীকার’-এর নিকটস্থ চাঁদপুর শহরের অন্যতম বহুতল ভবনের মালিক ও পুরানো রেমিট্যান্স যোদ্ধা, কাজী মঈনুল হক জীবন সাবেক কৃতী ফুটবল খেলোয়াড় ও ব্যবসায়ী, রোটাঃ বজলুর রশিদ সাবেক দক্ষ রোটার্যাক্ট সংগঠক ও বর্তমান মাদ্রাসা শিক্ষক, রোটাঃ সাইফুল ইসলাম চাঁদপুর রোটার্যাক্ট ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দক্ষ শিক্ষক, রোটাঃ মানিক লাল দেবনাথ ও রোটাঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল দক্ষ ব্যাংকার, রোটাঃ শারমিন আক্তার জুই উদীয়মান নারী উদ্যোক্তা এবং রোটাঃ ইউনুছ উল্লাহ খ্যাতনামা উপস্থাপক ও বহুমাত্রিক ব্যবসার সফল উদ্যোক্তা।
এভাবে স্ব স্ব ক্ষেত্রে খ্যাতিমান চাঁদপুরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে এর চাকাকে গতিশীল রেখেছেন, বেগবান রেখেছেন সেবামূলক কর্মকাণ্ড, যার ফলস্বরূপ এ সংগঠনটি বায়ান্ন বছর অতিক্রম করা সহজ হয়েছে।
লেখক পরিচিতি : রোটারী জেলা ৩২৮২-এর সাবেক লেফটেন্যান্ট গভর্নর; সভাপতি (২০১০-১১), চাঁদপুর রোটারী ক্লাব ও আহ্বায়ক, ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন পরিষদ, চাঁদপুর রোটারী ক্লাব।