প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০

তিন কাল শেষে ধরায় এলো কলিকাল,
উদিত অনাসৃষ্টি ভাসিয়ে দিল সৃষ্টির তাল ॥
মিথ্যার হুঙ্কারে সত্য ভেসে গেল গভীর অতলে।
অনৈতিক শিক্ষার প্রচলনে দেশ ডুবলো রসাতলে ॥
সেবা বঞ্চিত পিতা-মাতা শঙ্কিত থাকে বৃদ্ধাশ্রমের ভয়ে,
ছাত্রীরা থাকে ভয়ার্ত লম্পট শিক্ষকের আচরণে ॥
অপরাধীর অপরাধ অপকৌশল বুঝা বড় ভার,
দূরে থাকে মূল অপরাধী কিন্তু বিচারে শাস্তি হয় কার ॥
অসংযমী আর পরমত অসহিষ্ণুতা বেড়েছে এ চরাচরে,
পাপ-পুণ্যের বিচার তাই অনধিকারী মানুষই করে ॥
হানাহানি আর জাতিগত দাঙ্গায় হয়েছে বুদ্ধিজীবী সংকট,
কোথাও হয়েছে লুণ্ঠন কোথাও অমানবিকতা প্রকট ॥
কালান্তরের দ্বিজাতিতত্ত্ব ঘটিয়েছে যত মানবিক বিপর্যয়,
সুবিধা ভোগীরাই চির শান্ত বাংলাকে করিছে অশান্তময় ॥
ডিজিটাল কলিকালে কেহই মনে রাখে না নিকট অতীতকে,
বড় লোক হওয়ার জোশে ঘৃণিছে তারাই বড় মানুষকে ॥
অকৃজ্ঞতা আর কৃতঘœতায় ডুবিবে সংসার নিশ্চয়ই জানিবে,
ঘোরকলি অপেক্ষমান এদেরই রূঢ়-খুদিত আচরণে ॥
একালে মানছে না প্রজাতন্ত্র রাষ্ট্রীয় বিধি-বিধান যথাযথ,
আমলাতান্ত্রিকতার এটাই চলে আসছে নিয়ম সতত ॥
মহাকালের গর্ভে জন্মে তুমি কেড়েছ মায়ের মাতৃত্ব,
কৃত্রিম ব্যবস্থায় প্রসব বেদনা হয়ে যায় বিলুপ্ত ॥
তাইতো অবাধ্য সন্তানের আধিক্য একালেই বেশি,
চারিদিকে অঘটন ঘটন পটিয়সী কলিতে রাশি রাশি ॥
মানুষ বেপরোয়া কলিকালে প্রকৃতির স্বাভাবিকত্ব বিনাশে,
প্রকৃতিও প্রতিশোধপ্রবণ ‘আইলা-সিডর’ দ্বারা প্রকাশে ॥
বিমল কান্তি দাশ : কবি ও প্রবন্ধকার; অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষক, বলাখাল যোগেন্দ্র নারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজ, বলাখাল, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।